ধ্রুপদী শামীম টিটুর কবিতা

বিচ্ছেদ

– ধ্রুপদী শামীম টিটু

আমাদের সবগুলো পরাজয় স্পষ্টত অলক্ষ্যেই ছিল।
তোমার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে যেদিন ভুলে গেলাম; সেদিনই মরে গেছে প্রেম৷ ভেঙে পড়লো চোখ!
আমি সবকিছুকেই উপেক্ষা করতে শুরু করলাম, তোমার আবদার, আদর মাখানো জ্যোস্নারাত কিংবা তৃষ্ণার্ত তরুর ঠোঁট।

মানুষ মায়ায় বাঁচে, স্মৃতির ভেলায় ভাসে
পথ খোঁজে পালাবার পাথুরে গুহায়।

তুমি চলে গেলে আমার থাকবেনা কিছুই স্মৃতি ছাড়া তোমার আমার বিশেষ কোন চিহ্নটুকু নেই।
আমার যা ছিল খড়কুটো, দাবানল, অনাদরে ফুটে থাকা শাপলা শালুক; সংগোপন অভ্যুত্থানে মরে গেছে।

আমি নাকছবি পরা একাকী আত্মহারা মেয়েটির ছবি আঁকি,
সেই কাঠবাদামী বালিকা যে হতে হতে এখনো হয়নি নিঃশেষ,
স্ব্রোতস্বিনীর মতোই বইছে স্বচ্ছ জলের স্রোত
ইচ্ছে হয় জীবনের বীজ পুতে গোলাপ ফোটাই তাতে।

আমাদের বিচ্ছেদের পরে
আমার একলা ঘর, একলা বসতি
স্বদেশ ছাড়ার মতোই বেদনাময় দু’চোখ আমার
নিদারুণ অস্থিরতার অন্তরালে ঝড় তোলে পাষাণের বুকে
আর আমি বেঁচে থাকার আশায় মরে যাই ধীরে ধীরে।

বিচ্ছেদ হলেই বুঝি বাড়ে প্রেম, জেগে ওঠে সবুজ পৃথিবী
অথচ প্রস্ফুটিত গোলাপের পাশে শুয়ে ছিল মৃতদেহ গাঢ় ঘুমে
আর তুমি চলে যাওয়ার পরে কতরাত ঘুমাতে পারিনা!

বিচ্ছেদ বলে কিছু কী আসলেই আছে?
স্মৃতি কিংবা মায়ায় জড়ানো ব্যতীত।
যতবার পিছু ফিরে চাই,
অমাবস্যার রাতে নদীর ছলছল জলে
জ্যোস্নার ছায়া পড়ে
তুমি আমি জ্যোস্না মাখাই।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *