নাক ডাকা কমানোর উপায়

অনেক সময় নাকে মাংস বৃদ্ধির ফলে নাকের নালি ছোট হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাসে বাধার সৃষ্টি করে। শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গলার চারপাশে চর্বি জমা হয়। কমে যায় গলার পেশির নমনীয়তা। তখন নাক ডাকার সমস্যা হতে পারে। জন্মগত কারণে শ্বাসযন্ত্র সরু হলে বা চোয়ালে কোনও সমস্যা থাকলে নাক ডাকতে পারে। ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা ঘুমের ওষুধ এই সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। থাইরয়েডের সমস্যা ও গ্রোথ হরমোনের আধিক্যজনিত রোগেও নাক ডাকতে পারে। অনেক সময় চিত হয়ে ঘুমোলে জিভ পিছনে চলে গিয়ে শ্বাসনালি বন্ধ করে দেয়।

ঘুমের মধ্যে মারাত্মক নাক ডাকেন? হতে পারে স্লিপ অ্যাপনিয়াও, ডেকে আনতে পারে ভয়ঙ্কর বিপদ। জেনে নিন, নাক ডাকা কমানোর উপায়।

১. কাত হয়ে ঘুমানো
যারা নাক ডাকেন, তাঁরা চিত্ হয়ে না ঘুমিয়ে কাত হয়ে ঘুমাতে পারেন। চিত্ হয়ে ঘুমালে গলার পেশি শিথিল থাকে। ফলে নাক বেশি ডাকার আশঙ্কা থাকে।

২. ওজন কমানো
স্থূলতার কারণে শুধু ডায়াবেটিস নয়, বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন একজন মানুষ। স্থূলতার কারণেও অনেকে নাক ডাকতে পারেন। বেশি ওজনের কারণে গলার পথ সরু হয়ে যায়। এর ফলে শ্বাস নেওয়ার সময় টিস্যুগুলোতে ঘর্ষণ লাগে। এতে করে শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ হয়।

৩. নেশাজাতীয় দ্রব্য ও ঘুমের ওষুধ পরিহার
অ্যালকোহল বা নেশাজাতীয় দ্রব্য নেওয়ার পরে অনেকে নাক ডাকেন। বিশেষ করে ঘুমাতে যাওয়ার সময় যাঁরা অ্যালকোহল পান করেন, তাঁরা বেশি নাক ডাকেন।

৪. বেশি বালিশ নেওয়া
মাথার নিচে কয়েকটি বালিশ দিয়েও নাক ডাকা কমানো যেতে পারে। মাথার নিচে বালিশ দিলে বুকের চেয়ে মাথা বেশি উঁচুতে থাকে। এতে করে নাক ডাকার আশঙ্কা কিছুটা কমে যায়।

৫. ধূমপান ছেড়ে দেওয়া
ধূমপান করলে শরীরের অক্সিজেন ব্যবহারের ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে বাতাস বের হওয়ার পথ সংকুচিত হয়ে পড়ে। এ কারণেও নাক বেশি ডাকতে পারেন অনেকে। তাই ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করাই ভালো।

৬. নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করা উচিত। এতে করে ঘুমের সঙ্গে শরীরের একধরনের সামঞ্জস্য তৈরি হয়। ফলে অভ্যাসেরও পরিবর্তন হয়।

৭. শরীরচর্চা
শরীরচর্চা করলে পেশি, রক্তের চলাচল ও হৃদপিণ্ডের স্পন্দন বাড়ে। শরীরচর্চা করলে ঘুমও ভালো হয়। এ কারণে নাক ডাকা কমাতে হলে প্রতিদিন ৩০ মিনিট শরীরচর্চার অভ্যাস করা জরুরি।

৮. প্রচুর পানি পান করা
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত। এতে করে নাসারন্ধ্রে লেগে থাকা আঠার মতো দ্রব্যগুলো দূর হবে। নাক ডাকাও কমবে।

৯. নাসারন্ধ্রের পথ পরিষ্কার রাখা
নাক পরিষ্কার রাখাটা খুবই জরুরি। কারণ, এতে করে একজন ব্যক্তি সহজভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারেন। এ কারণে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালোভাবে নাক পরিষ্কার করতে হবে। এমনকি এ ক্ষেত্রে ইনহেলার ব্যবহার করা যেতে পারে।

১০. দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া
ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে জেগে থাকা অবস্থায়ই খাবার হজম হয়ে যাবে। এর ফলে রাতে ভালো ঘুম হবে। নাক ডাকাও কমবে।

তবে এসব উপায় অবলম্বন করার পরও যদি নাক ডাকা বন্ধ না হয়,তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *