:: নাগরিক বিনোদন ::
বাংলাদেশের প্রথম বাংলা সবাক চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এর অভিনেত্রী পিয়ারী বেগম মারা গেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরায় নিজ বাসায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। পিয়ারী বেগমের মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে রাবিউল আমিন।
পিয়ারী বেগমের একমাত্র সন্তান রাবিউল আমিন বলেন, ‘গত মাসে অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম। চিকিৎসক জানান, আম্মার হার্ট দুর্বল ছিল। আপাতত বাসায় নিয়ে যান। ওষুধ বাসাতেই খাওয়ান। হাসপাতালে রেখে কী করবেন? এরপর ভালোই ছিল। জ্বরও ছিল না। কিন্তু গত দুই দিন আম্মার শরীর দুর্বল ছিল। মঙ্গলবার আমি অফিসে ছিলাম। আমার স্ত্রী ও ছোট ছেলে বাসায় ছিল। স্ত্রীর সামনেই মারা গেছেন আম্মা।’
রাবিউল আমিন জানান, পিয়ারী বেগমের জানাজা ও দাফন সন্ধ্যার মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। তিনি বলেন, ‘উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে আব্বাকে যেখানে কবর দিয়েছি, ওখানেই আম্মাকে কবর দেব। বাদ এশা জানাজা শেষে এই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হবে।’
১৯৫৪ সালের ৬ আগস্ট হোটেল শাহবাগে ‘মুখ ও মুখোশ’ ছবির মহরত অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল বাংলাদেশ তথা তৎকালীন পাকিস্তানের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৬ সালের ৩ আগস্ট। এ ছবির পরিচালক আবদুল জব্বার খান। ছবির অন্যতম প্রধান নারী চরিত্রে ছিলেন পিয়ারী বেগম।
শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ঢাকার রূপমহল সিনেমা হলে এ সিনেমার উদ্বোধন করেছিলেন। পিয়ারী বেগম ছাড়াও এ ছবিতে অভিনয় করেন পূর্ণিমা সেন, সাইফুদ্দিন, বিনয় বিশ্বাস, জব্বার, ইনাম আহমেদ, জহরত আজরাসহ আরও অনেকে।
পিয়ারী বেগম অভিনেতা আমিনুল হকের স্ত্রী। ঢাকার উত্তরায় ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে বসবাস করতেন এই অভিনেত্রী।
পিয়ারী বেগম ‘মুখ ও মুখোশ’র পরে আর কোনও ছবিতে অভিনয় করেননি। ১৯৫৮ সালে তার বিয়ে হয়। এরপর সংসার আর সন্তান নিয়েই ব্যস্ত হয়ে যান। সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু স্বামীর অনিচ্ছা আর সংসারের কথা ভেবে পা বাড়াননি। তবে দীর্ঘদিন তিনি রেডিওর নাটকে কাজ করেছিলেন।