:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে মঙ্গলবার বিশ্বকাপ ফুটবলে আর্জেন্টিনা-সৌদি আরবের খেলা চলাকালে হৃদরোগে কাউসার জাবেদ কাকন (৫০) নামে আর্জেন্টিনার এক সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বিকালে আর্জেন্টিনা-সৌদির ম্যাচ চলাকালে উপজেলার শিকারপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
কাউসার জাবেদ কাকন বুড়িচংয়ের উপজেলার শিকারপুর গ্রামের মরহুম আবদুল খালেকের ছেলে। সৌদি আরব দ্বিতীয় গোল করার পর তিনি বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করে বিছানায় ঢলে পড়েন।
ময়নামতি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আবু নাছের বলেন, বিকাল চারটায় তাদের সঙ্গে কাউসার খেলা দেখতে বসেন। খেলার ৫৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করে সৌদি আরব। তখন কাউছার বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করে তার (আবু নাছের) কোলে ঢলে পড়েন।
দ্রুত উদ্ধার করে বুড়িচং উপজেলার কাবিলা ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শিকারপুর গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, কাউসার আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের প্রচণ্ড সমর্থক ছিলেন। লিওনেল মেসি ও ডি মারিয়া তার পছন্দের খেলোয়াড়।
প্রিয় দলের পরাজয়টা তিনি সহ্য করতে পারেননি।এর আগে অফসাইডের কারণে কয়েকটি গোল বাতিল হওয়ায় তার মন খারাপ হয়ে যায়।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন।
পরিবার বলছে কাউসার আর্জেন্টিনার অন্ধ সমর্থক ছিলেন না
এ বিষয়ে মৃতের চাচাতো ভাই সাবেক ইউপি সদস্য আবু নাছেরের বরাতে ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, ‘কাউছার জাবেদ কাকন ও তার চাচাতো ভাই একসঙ্গে বাড়িতেই খেলা দেখছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি বুকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত নিমসার ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান হাসপাতালের আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
পরিবারের দাবি, কাউছার জাবেদ দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। তাই আর্জেন্টিনার পরাজয়ে তার মৃত্যু হয়েছে কথাটি সত্য নয়। তার মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক শ্রেণির লোক ‘আর্জেন্টিনার পরাজয়ে সমর্থকের মৃত্যু’ বলে প্রচার করতে থাকে।
তার বন্ধু কুমিল্লা শহরের রেসকোর্স এলাকার কাউন্সিলর সরকার মাহমুদ জাভেদ বলেন, ‘কাকনের বাসা রেসকোর্সে হলেও অসুস্থতার জন্য দীর্ঘদিন তিনি গ্রামে ছিলেন। খেলা চলাকালীন তার মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। তবে আর্জেন্টিনার পরাজয়ে মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি সঠিক নয়। সে আমার ছোটবেলার বন্ধু। সে আর্জেন্টিনার অন্ধ সমর্থকও ছিল না।’
তার মৃত্যুর পর ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘আর্জেন্টিনার পরাজয়ে সমর্থকের মৃত্যু’ হিসেবে ছড়িয়ে পড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছে পরিবার।