:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বাজেটে মোট ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ঘাটতির মধ্যে অনুদানসহ বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে ৯৮ হাজার ৭২৯ কোটি টাকা; আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা, এর মধ্যে ব্যাংক খাত থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা।
বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন। অর্থমন্ত্রী যে বাজেট বক্তব্য দিয়েছেন, তার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন’।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংগৃহীত কর থেকে পাওয়া যাবে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর–বহির্ভূত কর থেকে আসবে ১৮ হাজার কোটি টাকা আর কর ব্যতীত প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা।
জিডিপি সাড়ে ৭ শতাংশ
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আর ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সাময়িক হিসাবে প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ।
এর আগে গত ১৩ এপ্রিল বিশ্বব্যাংক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে। আর নতুন অর্থবছরে (২০২২-২৩) জিডিপির প্রবৃদ্ধি দাঁড়াতে পারে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। গত ১৩ বছরে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ
মূলস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আগামী বাজেটে বিভিন্ন কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হবে।
করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়েনি
প্রস্তাবিত বাজেট থেকে সাধারণ করদাতারা তেমন কোনো সুখবর পাচ্ছেন না। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হয়নি। এই সীমা আগের মতোই তিন লাখ টাকা পর্যন্ত রাখা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছরে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ছিল মাত্র ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, যা ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে তিন লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। পরবর্তী অর্থবছরেও এই সীমা বহাল রাখা হয়েছে।
শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে
চলতি অর্থবছরের তুলনায় আসন্ন অর্থবছরে মোট ৯ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই দুই মন্ত্রণালয়ের জন্য আসন্ন অর্থবছরে মোট ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে; যা চলতি বছরের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ৭১ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা।
স্বাস্থ্যে বেড়েছে ৪ হাজার কোটি
এবারে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ রাখা হয়েছে স্বাস্থ্য খাতের জন্য। চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দ ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। ২০২২–২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বেড়েছে ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।
দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই বাজেটে কিছু পণ্যে আয়কর, শুল্ক, ভ্যাট অথবা সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।
এর ফলে বিলাসবহুল গাড়ি, আমদানি করা দই, পনির, মোবাইল চার্জার, তৈরি পোশাক, নিম্নমানের সিগারেট, সিএনজি, কম্পিউটার প্রিন্টার ও টোনার, ফ্যান, লাইটার এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করেন। ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন’ শিরোনামে এবারের বাজেট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট।
যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে
আমদানি করা পনির ও দইয়ের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ফলে বিদেশি পনির ও দইয়ের দাম বাড়তে পারে।
সিগারেটের নিম্ন স্তরের দশ শলাকার দাম ৩৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পণ্যে সম্পূরক শুল্ক ৫৭ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে নিম্ন স্তরের সিগারেটের দাম বাড়তে পারে।
আমদানি করা তৈরি পোশাকে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।ফলে বিদেশি পোশাকের দাম বাড়বে।
দাম বাড়বে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, অপরিশোধিত আলকাতরা, বিদেশি পাখি, প্রিন্টিং প্লেট, ক্যাশ রেজিস্ট্রার, ফ্যান, মোটর, লাইটার, দুই স্ট্রোক ও ফোর স্ট্রোক ইঞ্জিনের সিএনজি, কম্পিউটার প্রিন্টার ও টোনার, আমদানি করা মোবাইল চার্জার, কার্বন ডাই-অক্সাইড, আমদানি করা পেপার কাপ এবং প্লেটের।
এ ছাড়া বিলাসবহুল গাড়ি, রিকন্ডিশন ও হাইব্রিড গাড়িতে ২০০০ সিসি থেকে ৪০০০ সিসিতে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসবেরও দাম বাড়বে।
দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবার বাজেটে জনস্বার্থে ও দেশিশিল্প সুরক্ষায় কিছু পণ্যের ভ্যাট, আমদানি শুল্ক, আগাম কর অথবা সম্পূরক শুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
ফলে স্বর্ণ, শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের, হুইল চেয়ার, পানির ফিল্টার, বিমানের জন্য ব্যবহৃত টায়ার, কাজু-বাদাম ও পেস্তা বাদাম এসব পণ্যের দাম কমতে পারে।
প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে
জুয়েলারি শিল্পের প্রসারে স্বর্ণ আমদানিতে অগ্রীম কর প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে স্বর্ণাংলাকার আগের তুলনায় কম দামে মিলতে পারে।
শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের শ্রবণ সহায়ক যন্ত্রের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফলে কম মূল্যে বাজারে ওই শ্রবণ যন্ত্র পাওয়া যেতে পারে।
হুইল চেয়ারে বিদ্যমান ১৫ শতাংশ ভ্যাট, ১০ শতাংশ অগ্রীম কর থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় কমতে পারের হুইল চেয়ারের দাম।
এছাড়া শুল্ক কমানোর প্রস্তাবে দাম কমতে পারে পানির ফিল্টার, বিমানের জন্য ব্যবহৃত টায়ার, কাজু-বাদাম ও পেস্তা বাদাম।
বিকেল ৩টার দিকে একাদশ জাতীয় সংসদের ১৮তম (বাজেট) অধিবেশন শুরুর পর স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর অনুমোদনক্রমে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
এটি দেশের ৫১তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম এবং অর্থমন্ত্রী হিসেবে মুস্তফা কামালের চতুর্থ বাজেট।
বাজেটে পুঁজিবাজারে জন্য যা আছে
কর্পোরেট করহার কমানো
পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডাররা তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হার কমানো এবং তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির মধ্যকার করহারের ব্যবধান বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল। তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার সাড়ে ৭ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছিল তারা। বর্তমানে এমব কোম্পানিকে সাড়ে ২২ শতাংশ কর দিতে হয়। তাদের প্রস্তাবনা ছিল-এটিকে কমিয়ে যেন ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়।
এই প্রস্তাবনার বিষয়ে স্টেকহোল্ডারদের যুক্তি ছিল, করপোরেট করের হার কমানো হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফা ও লভ্যাংশ বিতরণের সক্ষমতা বাড়বে। আর ভাল লভ্যাংশ পেলে এই বাজারে বিনিয়োগ করতে উৎসাহী হবে দেশের মানুষ। তাতে বাজারে গতিশীলতা ও স্থিতিশীলতা বাড়বে।
অন্যদিকে করপোরেট করের হার কমানো ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির সাথে করের ব্যবধান বাড়ানো হলে ভাল ভাল কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে আগ্রহী হবে। আর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতার কারণে কোম্পানিগুলোর পারফরম্যান্স ভাল হলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
বাজেটে স্টেকহোল্ডারদের এই প্রস্তাবনার আংশিক প্রতিফলন ঘটেছে। অর্থমন্ত্রী কিছু ব্যতিক্রম বাদে তালিকা-বহির্ভূত ও তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির করপোরেট করের হার ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব করেছেন। প্রস্তাবের চেয়ে কম হারে কর কমানোর প্রস্তাব করা হলেও এটিকে ইতিবাচকই মনে করছেন স্টেকহোল্ডাররা।
কিন্তু তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত কোম্পানির করহারের ব্যবধান অপরিবর্তিত থাকায় ভাল কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আনতে সেটি বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে বিবেচিত হবে না। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে নানা ধরনের কমপ্লায়েন্স পরিপালন করতে হয়। এতে কোম্পানিগুলোকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হয়। ফলে কর রেয়াতের প্রকৃত কোনো সুবিধা পাওয়া যায় না। তাছাড়া পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোকে নানা মনিটরিংয়ের মধ্যে থাকতে হয় বলে এখানে কর ফাঁকির সম্ভাবনা কম। কিন্তু তালিকার বাইরে থাকলে সহজেই কর ফাঁকি দেওয়া যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এই ফাঁকির বিপরীতে কর রেয়াতের হার তেমন কিছুই না।
কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রায় সব স্টেকহোল্ডারের কমন দাবি ছিল, আগামী অর্থবছরের বাজেটে যেন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা (তাদের ভাষায়-অপ্রদর্শিত অর্থ) সাদা করার সুযোগ রাখা হয়। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার ক্ষেত্রে মাত্র ৫ থেকে ১০ শতাংশ আয়কর ধার্য করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা।
কালো টাকা বিনিয়োগের পক্ষে স্টেকহোল্ডারদের যুক্তি, বিনা প্রশ্নে পুঁজিবাজারে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিলে বাজার যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনই সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। পাশাপাশি অর্থ পাচারও কমবে।
তবে প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি। আগে সুযোগ দেওয়ার পর তেমন সাড়া না পাওয়ায় এই সুযোগ আর রাখা হচ্ছে না বলে বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন অথর্মন্ত্রী। অর্থাৎ আগামী অর্থ বছরে পুঁজিবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ আর থাকছে না।
দ্বৈত কর প্রত্যাহার
স্টেকহোল্ডাররা তালিকাভুক্ত কোম্পানির লভ্যাংশ বাবদ আয় থেকে কেটে রাখা করকে চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি কোম্পানিকে তার আয়ের উপর কর দিতে হয়। এরপর নিট মুনাফা নির্ধারিত হয়। ওই মুনাফা থেকে কোম্পানি লভ্যাংশ ঘোষণা করলে ওই লভ্যাংশ বিতরণের সময় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর কেটে রাখা হয়। পরবর্তী সময়ে আবার লভ্যাংশ গ্রহীতার ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্নের সময় তার ওপর প্রযোজ্য হারে কর দিতে হয়। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশ গ্রহণ না করে রেকর্ড তারিখের আগেই শেয়ার বিক্রয় করে দেয়, যা পুঁজিবাজারকে অস্থির করে তুলে। এভাবে কর প্রদান দ্বৈত কর নীতির আওতায় পড়ে। এক্ষেত্রে অগ্রিম করকে চূড়ান্ত কর হিসাবে বিবেচনা করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন তারা।
দ্বৈত কর প্রত্যাহারের প্রস্তাবে সাড়া দেননি অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বাজেটে এর কোনো প্রতিফলন নেই। বাজেট বক্তৃতায় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করেননি অর্থমন্ত্রী। এর অর্থ লভ্যাংশ বিতরণের সময় কেটে রাখা আয়কর লভ্যাংশ গ্রহীতা বিনিয়োগকারীর চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচিত হবে না। তাকে এই লভ্যাংশের উপরেও প্রযোজ্য হারে কর দিতে হবে।
করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বৃদ্ধি
পুঁজিবাজারের স্টেকহোল্ডাররা করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়িয়ে কমপক্ষে ২ লাখ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিলেন। বর্তমানে এই সীমা ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা লভ্যাংশ আয় পর্যন্ত কোনো কর দিতে হয়নি। কোনো বিনিয়োগকারী এরচেয়ে বেশি লভ্যাংশ পেলে বাড়তি লভ্যাংশ তার অন্যান্য আয়ের সাথে যোগ করে মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য হারে কর ধার্য করা হয়।
করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়লে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে। বৃদ্ধি পাবে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের প্রবণতা। তাতে পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বাড়বে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই ধরে নেওয়া যায়, বর্তমান সীমা-ই বহাল থাকবে। তবে অর্থবিল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাবে না। অর্থবিলে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা থাকলেও থাকতে পারে।
সিকিউরিটিজ লেনদেনে অগ্রিম আয়কর কমানো
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) সিকিউরিটিজ লেনদেনের ওপর বিদ্যমান অগ্রিম আয়করের হার কময়ে ০.০১৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছিল। এতে তাৎক্ষণিকভাবে ব্রোকার ও বিনিয়োগকারী লাভবান হবে। বাজারে লেনদেন বাড়বে। আর দীর্ঘ মেয়াদে তাতে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর কমানো
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) মার্চেন্ট করপোরেট করের হার কমানোর প্রস্তাব করেছিল। বর্তমানে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ববাণিজ্যিক ব্যাংকের সমান হারে অর্থাৎ ৩৭ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কর দিতে হয়।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলেননি। তাই ধরে নেওয়া যায়, বর্তমান সীমা-ই বহাল থাকবে। তবে অর্থবিল প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে কিছু বলা যাবে না। অর্থবিলে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা থাকলেও থাকতে পারে।