:: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ::
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এ হামলায় ছাত্রদলের অন্তত ছয়জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
সোমবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- ছাত্রদলের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক মানসুরা আলম, ঢাবির এসএম হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের যুগ্ম সম্পাদক মেহেদী হাসান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সিনিয়র সহসভাপতি আমান উল্লাহ আমান, এসএম হলের কর্মী কাফি ও জিয়া হলের কর্মী মাহমুদ।
তাদের মধ্যে মানসুরা আলম গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি দুই কানেই শুনতে পাচ্ছেন না। এ ছাড়া মেহেদী হাসানের মাথায় ১০টা সেলাই লেগেছে বলে জানা গেছে। আহতদের প্রথমে ঢামেক এবং পরে কাকরাইলের ইসলামিয়া হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঢাবির কেন্দ্রীয় মাঠে ইফতারের পর ঢামেক বহির্বিভাগের সামনে চা খাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছাত্রদলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের নির্দেশে এ হামলা করা হয়েছে বলে দাবি তাদের।
হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগের সহসভাপতি শাহরিয়ার কবির বিদ্যুৎ, সূর্যসেন হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নাহিদ হাসান শাহিন, জসীম উদ্দিন হল ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস ইমাম হাসান, এমএম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল ও সমাজসেবা সম্পাদক আশিক আকাশ, মহসীন হলের মেহেদী জড়িত বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল।
আহত মানসুরা বেগম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হামলার বিষয়ে একটি পোস্ট দেন৷ তিনি অভিযোগ করে লেখেন, ‘ইমাম হাসান ইফতারের পর বহির্বিভাগে এসে আমাদের আক্রমণ করেছেন। এ সময় গালিগালাজও করা হয়।’
এদিকে হামলার সময় আহতের মোবাইল ফোন ছিনতাই করা হয় বলে অভিযোগ করেছে ছাত্রদল।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রদলের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘রাজু আহাম্মেদ ও আব্দুল্লাহ হেল কাফির মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে না। হামলাকারী ছাত্রলীগের কর্মীরাই এগুলো নিয়ে গেছেন।’
হামলার বর্ণনা দিয়ে ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে ইফতার করি। ইফতার শেষে কয়েকজন নেতাকর্মী মেডিকেলের বহির্বিভাগের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় অভিযুক্তরা ৫-৬টি মোটরসাইকেলে সেখানে আসেন এবং তাদের ওপর হামলা চালান। আহত মেহেদী ও রাজুর দশটা করে সেলাই লেগেছে। তাদের মুখে আঘাত করা হয়েছে। আর মানসুরা আলম কানে আঘাত পাওয়ায় তিনি শুনতে পাচ্ছেন না।’
তিনি বলেন, ছাত্রদল ক্যাম্পাসে সহাবস্থান চায়। আমরা ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের অরাজকতা চায় না। ছাত্রলীগ এখন আর ছাত্রসংগঠন নেই, তারা এখন সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে৷ এই হামলা সেটাই প্রমাণ করে।
ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, সৈকতের কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করেছে। আমাদের হত্যার উদ্দেশ্য তারা হামলা করেছে। ছাত্রলীগ এখন আর ছাত্রসংগঠন নেই, ছাত্রলীগ এখন সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে৷ এই হামলা সেটাই প্রমাণ করে। আমরা এর বিচার চাই।
তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মিথিন নামের এক শিক্ষার্থী ইফতার শেষে মেডিকেলে চা খাওয়ার সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পরে তার বন্ধুরা মিলে তাদের প্রতিহত করেছে।