:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে ফৌজদারি মামলা দায়ের করায় হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ৩৪ বিশিষ্ট নাগরিক। তারা এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধের আহবান জানিয়েছেন।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি সরকারকে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমে তার কয়েকজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে শ্রম আইন ভঙ্গের অভিযোগে শ্রম আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, উত্থাপিত অভিযোগগুলো দেওয়ানি চরিত্রের হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা বর্তমানে লক্ষ্য করা গেছে।
ড. ইউনূসকে হয়রানির অভিযোগের ব্যাপারে তারা বলেন, ‘ব্যাংক হিসাব তলব, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে ড. ইউনূসকে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হয়রানি করেছে। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের বিষোদগার অব্যাহত রয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ধারণা করার যুক্তি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। আমরা এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রফেসর ড. ইউনূস অতিদরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের অবস্থার উন্নয়নে কাজ করে বিশ্বে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেসনাল গোল্ডমেডেল সহ বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে এনেছেন। আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের মোড়কে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন হয়রানিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ তার কর্মযজ্ঞকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং বিশ্বের কাছে নেতিবাচক বার্তা প্রদান করছে।
বিবৃতিদাতারা হলেন, শিক্ষাবিদ আবুল কাসেম ফজলুল হক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাফিজ উদ্দিন খান, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্দীন মালিক, মানবাধিকার কর্মী শারমীন মুরশিদ, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আলী রীয়াজ, ড.আসিফ নজরুল, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, অধ্যাপক সি আর আবরার, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, নৃতাত্বিক রেহনুমা আহমেদ, গবেষক ড. বিনা ডি কস্টা, অধ্যাপক স্বপন আদনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, রুশাদ ফরিদী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আর. রাজী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সায়েমা খাতুন, ডা. নায়লা জেড খান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, তবারক হোসেইন, পরিবেশবিদ ও উন্নয়নকর্মী এম রেজাউল করিম চৌধুরী, গবেষক ড. সাদাফ নূর, ড. নোভা আহমেদ, রোজীনা বেগম, নাসের বখতিয়ার আহমেদ, লেখক মাহবুব মোর্শেদ ও রাখাল রাহা।