:: সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ::
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে এক শিক্ষার্থীকে গুলিবিদ্ধ করার পর প্রকাশ্যে এসেছে শিক্ষক রায়হান শরীফের নানা অপকর্মের তথ্য।
তিনি নিজের কাছে রেখেছেন দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্র। এসব অস্ত্র দিয়েই তিনি মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের ভীতি প্রদর্শন করতেন। শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর রায়হান শরীফের বাসায় অভিযান চালিয়ে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
সিরাজগঞ্জ জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলহাজ উদ্দিন নাগরিক নিউজকে বলেন, ‘রায়হান শরীফের বাসা থেকে বেশ কিছু অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হবে।’
সোমবার (৪ মার্চ) বিকালে মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে গুলি করেন কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক রায়হান শরীফ। ঘটনাস্থল থেকে তাকে অস্ত্রসহ আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ।
রাত সোয়া ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থীর বাবা মো. আবদুল্লাহ আল আমিন বাদী হয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। তিনি এজাহারে উল্লেখ করেন, ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমার ছেলের সহপাঠীরা জানায়– আমার ছেলের আইটেম পরীক্ষা কলেজের একাডেমি ভবনের চতুর্থ তলায় ডা. সামাউন নূরের কক্ষে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। পরীক্ষা চলাকালে বেলা ৩টার দিকে আসামি হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের অহেতুক বকাবকি করেন। একপর্যায়ে ব্যাগ থেকে একটি পিস্তল বের করে আমার ছেলেকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। গুলিটি আমার ছেলের ডান পায়ের ঊরুর ওপরের অংশে লেগে গুরুতর জখম হয়। সহপাঠীরা আমার ছেলেকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে চাইলে আসামি অস্ত্র উঁচু করে সবাইকে ভয় দেখিয়ে বলেন, তোরা যদি ওকে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগে নিয়ে যাস, তাহলে তোদের সবাইকে গুলি করে মেরে ফেলব। তাৎক্ষণাৎ ছেলের বন্ধুরা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশ, ডিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে আসামিকে অস্ত্রশস্ত্রসহ থানায় নিয়ে যায়।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটি কোর্সের ভাইভা চলছিল। তখন শ্রেণিক্ষকে ৪৫ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। হঠাৎ সেখানে ঢুকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গুলি ছুড়লে তা তমালের ডান পায়ে বিদ্ধ হয়।
প্রভাষক ডা. রায়হান শরিফ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার আচরণ ছিল উগ্র। রায়হান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন বলে তাঁর একাধিক সিনিয়র ভাই (ছাত্রলীগ নেতা) আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন।
ডা. রায়হান শরিফ সোমবার বেলা ৩টার দিকে মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে এক শিক্ষার্থীকে গুলি করেন। শিক্ষার্থীর অপরাধ মৌখিক পরীক্ষার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ। পরে আহত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর ডা. রায়হান শরিফকে আটক করে পুলিশ।
ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন, মাদক সেবনের অভিযোগ ছিল
ওই সময়ে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত একাধিক ছাত্রলীগ নেতা নাগরিক নিউজকে বলেন, ‘ছাত্রজীবনে রায়হান শরিফ নানা কারণে আলোচিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ছিল মাদক সেবনের অভিযোগ। নিজের প্রভাব বিস্তারে শিক্ষার্থীদের নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা, মতের অমিল হলে হলের কক্ষে আগুন লাগিয়ে দেওয়া, এমনকি দ্বিমত পোষণ করলে সহপাঠীদের গায়ে হাত দিতেন তিনি।’
ছাত্রলীগের পদে থাকার কারণে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে তার এসব কর্মকাণ্ডের জন্য পরবর্তীতে তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে দেওয়া হয়নি। এমনকি বিসিএস শেষে ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়েও তিনি অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করেন।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এমন আচরণের জন্য স্ত্রীর সঙ্গেও ছাড়াছাড়ি হয়েছে এই চিকিৎসকের।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অস্ত্র উদ্ধার
মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের একাধিক শিকার্থী জানিয়েছেন, রায়হান শরীফের নানা অপকর্ম নিয়ে আগেও একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তিনি কলেজের ছাত্রীকে কু-প্রস্তাব দিয়েছেন, ছাত্রদের প্রায়ই ভয়ভীতি দেখিয়ে আসতেন। এমনকি রায়হান শরিফ কমিউনিটি মেডিসিনের শিক্ষক হওয়া সত্ত্বে নিজস্ব ক্ষমতা দেখিয়ে ফরেনসিক বিভাগে তিনি ক্লাস নিয়ে থাকেন। তিনি প্রায়ই ক্যাম্পাসে পিস্তল নিয়ে চলাফেরা করেন।
ডিবি জানায়, মঙ্গলবার সকালে রায়হান শরীফকে নিয়ে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও একটি পিস্তল তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা দুটি পিস্তল অবৈধ। এ ছাড়া রায়হান শরীফের বাসা থেকে ৮১ রাউন্ড গুলি, চারটি ম্যাগাজিন, দুটি বিদেশি কাতানা, দশটি অত্যাধুনিক বারমিজ চাকু, দুটি ব্রাশ নাকেল ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে ডিবি।
সহপাঠীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রায়হান শরীফের বিচার দাবিতে ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে তারা আবার আন্দোলনে নামেন। কলেজের সামনের রাস্তা বন্ধ করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
শিক্ষার্থীকে গুলি করার কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কমিটিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রের বাবা একটি মামলা দায়ের করেছেন। আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে আরও একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরপর তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
গুলি করার পর আরাফাতকে হাসপাতালে নিতেও বাধা দেন পিস্তল শরীফ
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শিক্ষক রায়হান শরীফ কোনো কারণ ছাড়াই শ্রেণিকক্ষে ছাত্র আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। তাতে তাঁর ডান ঊরুতে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ আরাফাতকে সহপাঠীরা হাসপাতালে নিতে গেলে তাঁদের বাধা দেন রায়হান শরীফ।
ঘটনার সময় ক্লাসে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহির বলেন, ‘ক্লাসে আমরা প্রায় ৩০ জন শিক্ষার্থী ছিলাম। হঠাৎ তিনি ব্যাগ থেকে অস্ত্র বের করে আমাদের দুই-তিনজনের দিকে টার্গেট করেন। এরপর জিজ্ঞেস করেন, “তোমরা কি কেউ পোষা পাখি পালো? এইটা হলো আমার পোষা পাখি। এটা আমি পুষি।” এরপরই তিনি হঠাৎ শুট করে দিলেন। আরাফাতের পায়ে লাগল।’
মাহির বলেন, ‘এই ঘটনা দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমরা আরাফাতকে হাসপাতালে নিতে চাইলেও তিনি বাধা দেন। বলেন, “হাসপাতালে নেওয়ার দরকার নাই, এমনিই ঠিক হয়ে যাবে।” পরে আমরা ধরাধরি করে আরাফাতকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম।’
মাহির আরও বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই এই শিক্ষক গুলি চালিয়েছেন। তাঁর কাছে সব সময় একটা ব্যাগ থাকে। সেই ব্যাগে অস্ত্র, ছুরি, চাপাতি—সবই থাকে। এসব আমরা মৌখিকভাবে কর্তৃপক্ষকে ভয়ে ভয়ে জানিয়েছি। কারণ, এই শিক্ষকের হাতে আমাদের নম্বর থাকে। তখন নাম জানতে পারলে সমস্যা করতেন। কর্তৃপক্ষ সব জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
কলেজের চতুর্থ বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, ‘রায়হান শরীফ সব সময়ই অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করতেন। ক্লাসে, ভাইভা রুমে, খাবারের ডাইনিং, আড্ডা দেওয়ার স্থান—সবখানেই অস্ত্র দেখিয়ে বেড়াতেন। আমাদের মাথায় পিস্তল ধরে গুলি ছাড়া আগেও ফায়ার করেছেন। তবে এবার ফায়ার করেছেন গুলিসহ। অল্পের জন্য আরাফাতের প্রাণ বেঁচেছে।’
জাহিদ হাসান মনে করেন, কলেজের কারও না কারও প্রশ্রয়ে তিনি এমন বেপরোয়া ছিলেন। জাহিদ বলেন, ‘তাঁকে কেউ সাপোর্ট না দিলে তিনি এত সাহস পেতেন না। কে তাঁকে সাহস দিতেন, সেটা আমরা জানতে চাই। তাঁর বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন, ‘একজন টিচার হিসেবে যে যোগ্যতা থাকার দরকার, তার কিছুই ছিল না রায়হান শরীফের। বেশির ভাগ সময় তিনি আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা ক্লাস নিতেন। এটা আমাদের কোনো কাজেই লাগত না। বরং সারা দিনের ক্লান্তির পর এটা আমাদের কাছে আরও বিরক্ত লাগত। তিনি সব সময় ফেল করানোর ভয় দেখাতেন।’
সাব্বির হোসেন বলেন, ‘এই শিক্ষক রাতের বেলায় আমাদের ব্যাচমেট মেয়েদের কল দিতেন। কেউ ফোন না ধরলে অন্যজনকে ফোন করে বলতেন। এভাবে কল ধরতে চাপ দিতেন। তারপরও কেউ কল না ধরলে পরদিন ক্লাসে সবার সামনেই বলতেন “এই, তুই রাতে আমার ফোন রিসিভ করিসনি কেন?” এভাবে তিনি ছাত্রীদের অপমান করতেন।’
গতকাল সোমবার বিকেলে ক্লাস নেওয়ার একপর্যায়ে শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে গুলি চালান কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক রায়হান শরীফ। এ ঘটনার পর তাঁকে আটকে রাখা হলে খবর পেয়ে পুলিশ এসে আটক করে। পরে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলা অবৈধ অস্ত্র সঙ্গে রাখার অপরাধে, অন্যটি ছাত্রকে গুলি করার ঘটনায়।
এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি তদন্ত কমিটি করেছে। কমিটির সদস্যরা আজ মঙ্গলবারই কলেজে এসেছেন। তাঁরা সাধারণ শিক্ষার্থী, প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন।
ক্যানটিনে বকেয়া টাকা চাইলেই পিস্তল বের করতেন রায়হান
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের শিক্ষক রায়হান শরীফ কলেজ ক্যানটিনে খাবার খেতেন। কিন্তু প্রায়ই তিনি টাকা দিতেন না। এভাবে বাকির খাতায় হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। বকেয়া টাকা চাইলে তিনি ক্যানটিন মালিক স্বপন ইসলামকে পিস্তল বের করে ভয় দেখাতেন। বলতেন, ‘টাকা চাইলে গুলি করে দেব।’
গতকাল সোমবার বিকেলে ক্লাস নেওয়ার একপর্যায়ে ওই শিক্ষক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। তাতে আরাফাত আমিন আহত হন। এ ঘটনার পর রায়হান শরীফকে আটকে রাখা হলে পুলিশ গিয়ে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কথা হয় কলেজ ক্যানটিনের মালিক স্বপন ইসলামের সঙ্গে। বাকির খাতা বের করে তিনি দেখান, ‘ডা. রায়হান স্যার’ লেখা এক পাতায় তাঁর বকেয়া ১১ হাজার ৯৭৫ টাকা। এর মধ্যে ১১ জানুয়ারি জের হিসেবে লেখা আছে ৩ হাজার ৬৮০ টাকা। পরে আবার বাকি লেখা হয়েছে ৭ হাজার ৬৫ টাকা। এরপর ২ মার্চ ৩৫০ টাকা ও ৩ মার্চ ২৮০ টাকা বাকি লেখা হয়েছে।
স্বপন ইসলাম বলেন, ১০ মাস আগে তিনি এই ক্যানটিন ইজারা নিয়েছেন। এরপর থেকেই রায়হান শরীফ বাকি খান। যেদিন মন চায়, সেদিন টাকা দেন। মন না চাইলে দেন না। এই ১০ মাসে তাঁকে বাকির খাতায় লিখতে হয়েছে ১১ হাজার ৯৭৫ টাকা।
স্বপন ইসলাম বলেন, ‘টাকা চাইলে কয় পরে দিমু। ধমক দেয়। পিস্তল দেখায় মাঝেমধ্যে। খাইতে বসলে টেবিলের ওপর পিস্তল রাখে। চাক্কু রাখে। পোলাপান খাবার দিতে একটু দেরি করলে কয়, “তাড়াতাড়ি খাবার লিয়া আই, না হইলে গুলি করমু।” পোলাপান আইসা কয় যে, ওইখানে খাবার দিতে যাব না। গুলি করে মারতে চায়।’
স্বপন বলেন, ‘কাইল এই শিক্ষকে ছাত্রোক গুলি করিছে। অ্যারপর থাইকা তো পুলিশ অ্যারেস্ট করেছে। এখুন আমি গরিব মানুষ, টাকা তো আর পামু না। আমার তো ব্যবসার ক্ষতি।’
শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনকে গুলি করার ঘটনায় রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলা অবৈধ অস্ত্র সঙ্গে রাখার অপরাধে, অন্যটি ছাত্রকে গুলি করার ঘটনায়। আজ মঙ্গলবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর কথা রয়েছে।