:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। সীতাকুণ্ড থানার এসআই আশরাফ সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
বুধবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিএম ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যুর অভিযোগ উল্লেখ করে পুলিশের পক্ষ থেকে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। তদন্তে যাদের নাম আসবে মামলায় তাদেরও আসামি করা হবে।
আসামিরা হলেন বিএম কনটেইনার ডিপোর মহাব্যবস্থাপক নাজমুল আক্তার খান, উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) নুরুল আক্তার খান, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) খালেদুর রহমান, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস উল্লাহ, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী (প্রশাসন) নাছির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল আজিজ, ডিপোর শেডের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ডিপো ইনচার্জ নজরুল ইসলাম।
সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিকী বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে মামলাটি করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে মানুষের মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলায় শুধু কর্মকর্তাদের আসামি করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ডিপোর মালিকপক্ষ এর দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। ডিপোর বেশ কয়েকজন শ্রমিকও এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন।
নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশের দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ বিনিয়োগে বিএম কনটেইনার ডিপো গড়ে ওঠে। এখানে বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রুপের অংশীদারি রয়েছে। যে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড নামের রাসায়নিক পদার্থ থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেটিও স্মার্ট গ্রুপের আরেক প্রতিষ্ঠান আল রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিমিটেডের। পোশাক, এলপিজি ও খাদ্যপণ্য খাতে বিনিয়োগ রয়েছে স্মার্ট গ্রুপের।
বিএম কনটেইনার ডিপোর চেয়ারম্যান বার্ট প্রঙ্ক। ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে আছেন মোস্তাফিজুর রহমান। পরিচালক হলেন স্মার্ট জিনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান। মুজিবুর সম্পর্কে মোস্তাফিজুরের ভাই। মুজিবুর রহমান চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ পদে আছেন। গত সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন তিনি।
গত শনিবার রাতে বিস্ফোরণে সরকারি হিসেবে ৪৪ জন নিহত (বেসরকারি হিসাবে ৫২ জন) ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের নয়জন সদস্য রয়েছেন, যাঁরা আগুনে নেভানোর চেষ্টার মধ্যে রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনারে বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কনটেইনারে রাসায়নিক থাকার কথা মালিকপক্ষ তাঁদের জানায়নি। সে কারণেই বিস্ফোরণে এত বেশি মানুষ হতাহত হয়েছে।