:: নাগরিক বিনোদন ::
অনুষ্ঠানের মঞ্চেই মারা গেলেন ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নথ (কেকে)। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় তার মৃত্যু হয়।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
কলকাতায় একটি কলেজের অনুষ্ঠান করতে এসেছিলেন কেকে। অনুষ্ঠান চলাকালীনই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সময়েই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গায়ক।
এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না অনুরাগীদের। কলকাতায় পরপর গানের অনুষ্ঠান করছিলেন তিনি। এদিন নজরুল মঞ্চে উল্টোডাঙার গুরুদাস মহাবিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে গান গাইছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান চলাকালীনই মৃত্যু হয় তাঁর। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে জানা যাচ্ছে হাসপাতাল সূত্রে। কী কারণে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর, তা এখনও জানা যায়নি। গত দু দিন ধরেই কলকাতায় ছিলেন কেকে।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই এ শিল্পী মারা গেছেন বলে ধারণা চিকিৎসকদের। আকস্মিক মৃত্যুর কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো দেওয়া হয়েছে।
কেকের মৃত্যুর খবর ফেসবুকে প্রথম জানান অমিত কুমারের স্ত্রী রিমা গঙ্গোপাধ্যায়। সঙ্গে সঙ্গে শোকের ছায়া নেমে আসে অনুরাগী মহলে। সুরের শহর কলকাতা শিল্পীর গানের শেষ সাক্ষী হয়ে রইল।
বাংলা, হিন্দি, তামিল, কণ্ণড়, মালয়ালামসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় গান গেয়েছেন কেকে। তার জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে জারা সা, দিল ইবাদত, কেয়া মুঝে পেয়ার হে, তুহি মেরি সাব হে, বিতে লামহে, আখোমে তেরি আজাবসি ইত্যাদি।
ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার বীরেন্দ্র শেহওয়াগ টুইট করেন, কলকাতায় পারফর্ম করার সময় অসুস্থ হয়ে কেকে’র মৃত্যুর খবর শুনে আমি শোকাহত। এই মৃত্যু আবারও মনে করিয়ে দিল জীবন কতটা ক্ষণস্থায়ী। তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাই।
গায়ক রাহুল বৈদ্য টুইট করেন, মাত্র শুনলাম কেকে স্যার মারা গেছেন। কেকে স্যার ছিলেন আমার পছন্দের সুন্দর মানুষদের একজন। তিনি দ্রুতই চলে গেলেন। শ্রদ্ধা স্যার।
গায়ক ও সঙ্গীত পরিচালক আরমান মালিক টুইট করেন, এই মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের জন্য আরেকটি বড় ক্ষতি। আমি এটা বিশ্বাস করতে পারছি না যে, আমাদের কেকে স্যার আর নেই। আমি মানতে পারছি না।
অভিনেতা অক্ষয় কুমার লেখেন, কেকে’র দুঃখজনক প্রয়াণের খবরে আমি মর্মাহত। এটা শিল্পের অনেক বড় ক্ষতি।
এক নজরে কেকে
দিল্লিতে জন্ম সদ্য প্রয়াত গায়ক কেকের। তাঁর সম্পূর্ণ নাম কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ হলেও তাঁকে বেশিরভাগ মানুষ কেকে নামেই চিনতেন। নয়াদিল্লিতে তাঁর বেড়ে ওঠা এবং পড়াশোনা। জানা যায়, বলিউডে কাজের সুযোগ পাওয়ার আগে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার জিঙ্গলস গেয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের জন্য ‘জোশ অফ ইন্ডিয়া’ গান গেয়েছেন তিনি। ১৯৯১ সালে ছোটবেলার ভালোবাসা জ্যোতিকে বিবাহ করেন কেকে। সদ্য প্রয়াত গায়ক কেকের পুত্র নকুল কৃষ্ণ কুন্নাথ তাঁর অ্যালবাম ‘হামসফর’-এ একটি গান গেয়েছেন। তাঁর এক কন্যা সন্তানও রয়েছে।
সঙ্গীতজীবন
কিংবদন্তি গায়ক কিশোর কুমার ছিলেন কৃষ্ণকুমার কুন্নাথের প্রেরণা। তাঁকে দেখেই মূলত সঙ্গীত জীবনে আসেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে কেকে জানান, তিনি আর.ডি বর্মন, মাইকেল জ্যাকসন এবং আরও বেশ কয়েকজন হলিউড গায়কের অনুরাগী ছিলেন। দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর মাস ছয়েকের জন্য মার্কেটিং এক্সিকিউটিভের কাজ করেন কেকে। এর কয়েক বছর পর ১৯৯৪ সালে তিনি মুম্বাই পাড়ি দেন বলিউডে কেরিয়ার গড়ার স্বপ্ন চোখে নিয়ে।