:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার গণিত শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর কলাবাগানের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর যৌন নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত রিমান্ডের এ আদেশ দেন।
এর আগে, মুরাদকে আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। এদিন রাতে কলেজের পরিচালনা কমিটির জরুরি সভায় মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একইসাথে গভীরতর তদন্তের জন্য আরও একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
লালবাগ থানার এসআই ফাইয়াজ হোসেন নাগরিক নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, সন্ধ্যায় এক ভুক্তভোগীর মায়ের করা নারী নির্যাতন মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাকে আদালতে তোলা হবে।
সোমবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ম্যানিজিং কমিটি, তদন্ত কমিটি এবং অধ্যক্ষ দীর্ঘ ভার্চুয়াল মিটিং করেন। মিটিংয়ে মুরাদকে বরখাস্তের সিদ্ধান্তের পাশাপাশি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভিকারুননিসা স্কুলের আজিমপুর শাখার শিক্ষক মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে শাখা প্রধান সাবনাজ সোনিয়া কামালের মাধ্যমে অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরীর কাছে যৌন হয়রানির ও নিপীড়নের লিখিত অভিযোগ করেন একাধিক অভিভাবক। পরদিন (৮ ফেব্রুয়ারি) অধ্যক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ বেগমকে কমিটির আহ্বায়ক করার পাশাপাশি সদস্য করা হয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম ও ইংরেজি প্রভাতি শাখার শাখা প্রধান শামসুন আরা সুলতানা। তবে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ‘অস্বাভাবিক কালক্ষেপণ’ করলে অভিযোগকারীরা সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি জানান।
গত শনিবার কেকা রায় চৌধুরীর সাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়, শিক্ষক মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। একইসঙ্গে আজিমপুর শাখা থেকে তাকে সরিয়ে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ওই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে আসছেন ছাত্রী ও অভিভাবকেরা। এই দাবিতে ছাত্রীরা গত রবিবার আজিমপুর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। একই দিনে অভিভাবকেরা সংবাদ সম্মেলন করে ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবি করেন।
অভিভাবক ও ছাত্রীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক কোচিংয়ে পড়ানোর সময় ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন।