:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
ইংল্যান্ডকে ৪০০ রানের লক্ষ্য দেবার পর তাদের ব্যাটারদেরকেও ১৭০ রানে বেধে ২২৯ রানের বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করল দক্ষিণ আফ্রিকা।
ইংল্যান্ড দলের রানের হিসাবে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২২৯ রানের ব্যবধানের হার। আগের বিব্রতকর রেকর্ডটি ছিল ২২১ রানের অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও এটি সর্বোচ্চ ব্যবধানের হার। এর আগে ছিল ১২২ রানের।
বিশাল রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ে লণ্ডভণ্ড ইংল্যান্ড। ৩৮ রানে ৪টি উইকেট আর ৮৪ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর বড় পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। ১০০ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে আরও বড় পরাজয়ের পথে আগাচ্ছিল তারা। শেষ পর্যন্ত ২২ ওভারে তারা অলআউট হয়েছে ১৭০ রানে। শেষদিকে দুই পেসার গাস এটকিনসন ২১ বলে ৩৫ রান আর মার্ক উড ১৭ বলে অপরাজিত ৪৩ রানের লড়াই না করলে লজ্জাটা আরও বড় হতো ইংলিশদের। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন জেরাল্ড কোয়েটজে। এছাড়া দুটি করে শিকার লুঙ্গি এনগিডি ও মার্কো জেনসেনের।
২৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের যখন বড় জুটি প্রয়োজন ঠিক তখনই আবার দলকে বিপদে ফেলে ড্রেসিংরুমে ফেরেন বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলা ডেভিড মালান। ৬ রানে আউট হন বাঁহাতি ওপেনার। অন্যদিকে চোটের কারণে আগের তিন ম্যাচে না খেলা বেন স্টোকসও দলকে হতাশ করেছেন। বিশ্বকাপে ফেরার ম্যাচে মাত্র ৫ রান করতে পেরেছেন সর্বশেষ বিশ্বকাপের ম্যাচসেরা। কাগিসো রাবাদার বলে তাঁকেই ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন তিনি।
হ্যারি ব্রুক ও জস বাটলার শুরুটা ভালো করলেও দ্রুত ফিরেছেন সতীর্থদের দেখানো পথে। দুজনই আউট হয়েছেন জেরাল্ড কোতেয়জির বলে। ব্রুকের ১৭ রানের বিপরীতে ১৫ রান করতে পারেন অধিনায়ক বাটলার। তাঁদের অনুসরণ করে ফিরেছেন স্পিনার আদিল রশিদও। তিনিও কোয়েতজির বলে ১০ রানে আউট হয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ১২ রান করে ফিরে যান ডেভিড উইলিও।
৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার কোয়েতজি।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। হেনরিখ ক্লাসেনের সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটিতে নির্ধারিত ওভার শেষে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রান করে। এতে প্রথমে ব্যাটিং করে সর্বশেষ ৬ ম্যাচের প্রতিটিতেই ৩০০-র বেশি রান করল তারা। আর বিশ্বকাপে ৪ ম্যাচের ৩টিতেই ৩০০ ছাড়াল।
ওয়াংখেড়েতে শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার। দলীয় ও ব্যক্তিগত ৪ রান করার সময় আউট হন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা কুইন্টন ডি কক। সতীর্থের ফেরার ধাক্কা অবশ্য দ্রুত সামলিয়ে নিয়েছেন রাসি ফন ডার ডুসেন ও রিজা হেনড্রিকস। দ্বিতীয় উইকেটে ১২১ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। ৬০ রানে ডুসেন আউট হওয়ার পরও রানের চাকা সচল থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার।
চারে নেমে এইডেন মার্করামও ইংল্যান্ডের বোলাদের ওপর চড়াও হন। তিনি চড়াও হলেও বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকতে পারেননি হেনড্রিকস। ৮৫ রানে ফেরেন তিনি। ১৫ রানের আক্ষেপে হেনড্রিকস পুড়লেও সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ক্লাসেন।
শেষ দিকে এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের কারণেই নির্ধারিত ওভার শেষে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রানের পাহাড় গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের সেরা বোলার টপলি।
প্রোটিয়াদের রান পাহাড়ে বড় অবদান ক্লাসেন এবং জেনসেনের। মাত্র ৭৭ বলে ১৫১ রানের বিধ্বংসী এক জুটি উপহার দেন দুজনে। ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন ক্লাসেন। ৬৭ বলে ১২ চার এবং ৪ ছক্কায় ১০৯ রানের ইনিংস সাজান তিনি। জেনসেন অপরাজিত ছিলেন ৭৫ রানে। তার ৪২ বলের ইনিংসে ছিল ৩ চার ও ৬ ছক্কার মার। বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের রিস টপলে ৮৮ রানে নেন ৩টি উইকেট। ২টি করে উইকেট শিকার গাস এটকিনসন আর আদিল রশিদের।
ম্যাচসেরা হয়েছেন হেনরিখ ক্লাসেন।