:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কায় ফল চাষিদের সম্মতি ছাড়াই তাদের জমিতে আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুতের টাওয়ার বসানো ও হাইটেনশন তার টেনে জোর করে প্রকল্প চালু করার বিরুদ্ধে কলকাতায় বিক্ষোভ করেছে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কলকাতার একাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনের রানু ছায়া মঞ্চে এ বিক্ষোভ করে সংগঠনটি।
দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির ঢিল ছড়া দূরত্বে, হাজরা মোড়ে বিক্ষোভের ডাক দেয় এপিডিআর। কিন্তু, পুলিশের অনুমতি না মেলায় স্থান পরিবর্তন করে রানু ছায়া মঞ্চে বিক্ষোভ দেখান তারা।
এপিডিআর এর সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত সুর জানান, হাজরা মোড়ে আজকের সমাবেশকে নিয়ে সাতদিন আগেই পুলিশের সদর দফতর লালবাজার, কালীঘাট থানা এবং ভবানীপুর থানায় চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ দুপুরে কোনোভাবেই পুলিশ এ সভা করার অনুমতি দিল না। শুধুমাত্র গায়ের জোরে আমাদের এ সভা বন্ধ করে দিল।
মমতার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে রঞ্জিত জানান, আদানিদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো মিটিং, মিছিল, প্রতিবাদ সভা করতে দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, টাটাকে বাঁচাতে গিয়ে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাম সরকারের পতন ঘটেছিল, এবার আদানিকে বাঁচাতে গিয়ে মমতা সরকার বিপদ ডেকে আনছে।
ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় আদানি গোষ্ঠীর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার উপর দিয়ে খুঁটি দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার (হাইটেনশন) যাচ্ছে বাংলাদেশে। কিন্তু জেলার যে অংশের উপর দিয়ে আদানির এ বিদ্যুৎ লাইন যাচ্ছে, সে ফারাক্কায় প্রচুর পরিমাণ আম ও লিচুর বাগান থাকায় তাতে প্রবল আপত্তি জানায় সেখানকার ফল চাষিরা।
গত বছরের জুলাই মাসে এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা। আহত হয় একাধিক গ্রামবাসী ও পুলিশ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ ছিল, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোর করে আম-লিচু বাগানের উপর গিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের লাইন বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছে আদানি।
গ্রামবাসীদের দাবি এলাকাটি জনবসতিপূর্ণ এলাকা। তাছাড়া প্রচুর পরিমাণ আমগাছ, লিচুগাছ রয়েছে। ওই আম-লিচুর ফলনের উপরই তারা নির্ভরশীল। তা থেকেই জীবন অতিবাহিত হয় তাদের। কিন্তু ওই ফসলি জমির উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার নিয়ে যাওয়ায় প্রচুর ফলনের গাছ কেটে ফেলেছে আদানি। তাতে তাদের জীবন এবং জীবিকায় প্রভাব পড়ছে। এমন অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্টে এ জনস্বার্থ মামলাটি করা হয়।
গত ৩১ জানুয়ারি আদানি গোষ্ঠীর বিদ্যুৎ প্রকল্পের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে ৩০ জন ফলচাষি ও এপিডিআর। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এর ডিভিশন বেঞ্চে এ মামলার শুনানি হবে।