:: ফজলে এলাহী ::
সামান্য একজন গৃহবধূ থেকে দেশনেত্রী হওয়ার পেছনে বেগম খালেদা জিয়া অনেক চড়াই উৎরাই পার করেছেন। যিনি কখনও নিজেকে রাজনীতিতে যুক্ত করতে চাননি সেই তিনিই গত প্রায় চার দশক ধরে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী।
প্রেসিডেন্ট জিয়ার শাহাদাতের পর বিচারপতি আব্দুস সাত্তার প্রথমে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং পরে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হন এবং দলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৯৮২-এর ২৪ মার্চ এরশাদ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মাত্র তিন মাস আগে নির্বাচিত একটি সরকারকে অপসারণ করে ক্ষমতা দখল করে। বিএনপির কিছু নেতা এরশাদের মন্ত্রিসভায় যোগ দিলে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বিচারপতি সাত্তারের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপিতেও কিছুটা নিষ্ক্রিয়তা আসে। কর্মীদের দাবি এবং কিছু শীর্ষ নেতার অনুরোধে ১৯৮২’র ৩ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া দলের প্রাথমিক সদস্যপদ নিয়ে গৃহবধু থেকে রাজনীতিতে আসেন। বিএনপিকে ষড়যন্ত্র ও নিষ্ক্রিয়তা থেকে রক্ষার উদ্যোগের ফলে পার্টির সিদ্ধান্তে বেগম জিয়া ৮৩-র মার্চে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ১৯৮৩ সালের ১লা এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় তিনি সর্বপ্রথম রাজনৈতিক বক্তৃতা দেন। তবে ৮২-র ৩০ মে শহীদ জিয়ার প্রথম শাহাদাত বার্ষিকীতে জিয়ার মাজারে গিয়ে তিনি বক্তব্য দেন এবং ঐক্যবদ্ধভাবে স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে মাজার প্রাঙ্গনে ছাত্রদলকে শপথ বাক্য পড়ান। ২৩ বিচারপতি সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়লে বেগম খালেদা জিয়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালের ১০ই মে দলীয় কাউন্সিলে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারপার্সন হিসেবে নির্বাচিত হন এবং এখনও চেয়ারপার্সন হিসেবেই আছেন। তাঁর নেতৃত্বে মূলত বিএনপি’র পূর্ণ বিকশিত হয়। ১৯৮৩ সালেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন থাকাকালেই ৭ দলীয় জোট গঠন করে এরশাদবিরোধী আন্দোলন শুরু করেন।
এরশাদের পুরো শাসনামলে বিএনপি’র রাজনীতি ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী মজিদ খান নতুন শিক্ষানীতি ঘোষণা করলে বিএনপি তার বিরোধিতা করে এবং ছাত্রদলের নেতৃত্বে আন্দালনের সূচনা করেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূত্রপাত হিসাবে ১৭ সেপ্টেম্বর শিক্ষাদিবসে স্বৈরাচারবিরোধী প্রথম মিছিলটি করে ছাত্রসমাজ। ছাত্রদলের ব্যানারে ছিল: এরশাদের পতন চাই। ৭ নভেম্বর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রদলকে শপথ পড়ান, পরদিন ক্যাম্পাসে মিছিল হয়। ১১ ও ১২ ডিসেম্বর ছাত্রদলের বর্ধিত সভা ও ১৩ ডিসেম্বর শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ধর্মঘট করে। ছাত্রদলের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি’র নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য ছাত্রদলের পক্ষ থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করা হয়। ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাবি ক্যাম্পাসের বটতলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জাফর, জয়নাল, কাঞ্চন, আইউব, দিপালী সাহা, ফারুকসহ ৭ জন শহীদ হন।
১৫ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে মিছিল হলে পুলিশের গুলিতে ১৫জন নিহত হয়। ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা গায়েবানা জানাজা, ১৯ ফেব্রুয়ারি মৌন মিছিল এবং ২০ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে হরতাল করে। বৈঠক থেকে ১৫ দলীয় জোট নেতাদের এবং কর্ণেল অলিসহ বিএনপি নেতাদেরও গ্রেপ্তার করা হয়। ছাত্ররা পলাতক, নেতারা কারাবন্দী তবু খালেদা জিয়া শহীদ মিনারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মৌন মিছিল শহীদ মিনারে যায়, তাকে প্রধান অতিথি করে বটমূলে হয় জাসাসের আলোচনাসভা। ঘরোয়া রাজনীতি সুযোগে খালেদা দেশ সফরে বের হয়ে প্রথম সভা করেন খুলনায় ইউনাইটেড ক্লাবে। ’৮৩-র ৪ ও ৫ সেপ্টেম্বর ৭ দলীয় ও ১৫ দলীয় ঐক্যজোটের মধ্যে বৈঠকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ৫ দফা প্রণীত ও ৬ সেপ্টেম্বর তা ঘোষিত হয়। ২৮ নভেম্বর উভয় জোটের সচিবলায় ঘেরাও কর্মসূচিতে আহত খালেদা জিয়া এক আত্মীয়ের বাসায় আশ্রয় নেন। ২৮ নভেম্বর রাতেই খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনাকে ১ মাসের আটকাদেশ দিয়ে স্ব-স্ব বাসভবনে আন্তরীন রাখা হয়। এরশাদ তখন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করে লোভ ও ভয় দেখান। ’৮৪-র ৭ জানুয়ারি এরশাদ ৫৫টি রাজনৈতিক দলকে সংলাপে ডাকলে বিএনপি,আওয়ামী লীগ ও জামায়ত জোট তা বর্জন করে। ’৮৪-র ১২ জুনায়ারি খালেদা জিয়া দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন মনোনীত হন এবং ১লা মার্চ খালেদা-হাসিনা গ্রেপ্তার হন। ’৮৪-র ১০ মে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরশাদ ১২ জুলাই জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা দিলে দুই জোট তা প্রত্যাখান করে। ৭ দলীয় জোট ২৫ জুলাই প্রতিরোধ দিবস পালন করে। ৫ আগস্ট জোটের জনসভা ও ২৭ আগস্ট অর্ধদিবস হরতাল হয়। ২৭ আগস্ট জামায়াতের জনসভা থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান জানানো হয়। ৩ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সময়সূচী ঘোষণা করে। ’৮৪-র ১৫ অক্টোবর যৌথ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সরকার জোট ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ স্লোগানে ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে। প্রেসিডেন্ট রেডিও ও টিভির ভাষণে ১৯৮৫ সালের প্রথম সংসদ নির্বাচন স্থগিত করে ও সংবিধানের আংশিক পুনর্জীবনের ঘোষণা দেন।
’৮৫-র ৬ এপ্রিল বিচারপতি নুরুল ইসলাম তফসিল ঘোষণা করে ও সরকার সামরিক আদালত বিলুপ্ত করে। ১১ ফেব্রুয়ারি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনিস্টিটিউশনে দলের বর্ধিত সভায় খালেদা জিয়া নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ তুলেন। ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবাষির্কীতে খালেদা জিয়া অবাধ রাজনীতির সুযোগ দাবী করেন। ৩ ফেব্রুয়ারি হরতাল, ১৪ ফেব্রুয়ারি জনসভা থেকে নির্বাচনের তারিখ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান করেন খালেদা। ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারের সভায় ৫ দফার কোন ‘আপস’ অস্বীকার করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি উভয় জোটের জনসভায় একই দাবী পুনর্ঘোতি ও ৮ মার্চ হরতাল হয়। ১৮ মার্চ চট্টগ্রামের লালদিঘি মাঠে শেখ হাসিনা নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়ে বলেন, “যারা এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যাবে তারা জাতীয় বেঈমান।” কিন্তু শেখ হসিনা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ২১ মার্চ রাত ১টা ৪০ মিনিটে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। ৩১ মার্চ ঢাকা জেলা ক্রীড়া সমিতি মিলনায়তনে বিএনপি’র বর্ধিত সভা হয়। ২ মে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৮৭-এর ৭মার্চ যুবদলের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তিনি বলেন ‘ক্ষমতা চাইলে এখানে, ঠিক এখানে এসে হাজির হবে। কিন্তু ক্ষমতা নয় সংগ্রাম।’ এ সময় ছাত্রদল সম্পাদক মাহবুবুল হক বাবলুকে হত্যা ও ছাত্রদলের উপর অপরিসীম নির্যাতন নেমে আসে। খালেদা জিয়া আখ্যায়িত হন ‘আপসহীন নেত্রী’ অভিধায়। ১১নভেম্বর দুপুরে পূর্বানী হোটেলের বৈঠক থেকে গ্রেপ্তার করে গৃহবন্দি করা হয়। ‘৮৮-র ১ জানুয়ারি সরকার ২৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এদিন টিএসসিতে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে খালেদা ‘এক দফার’ ঘোষণা দেন। সে সঙ্গে ২২টি ছাত্রসংগঠন নির্বাচনকে সামাজিক ও রাজনৈতিকবাবে প্রতিহতের ঘোষণা দেয়। ১২ জানুয়ারি থেকে একদফায় অনঢ় থেকে খালেদা জিয়া দেশব্যাপী জনসংযোগ শুরু করে। একতরফা নির্বাচনে জাতীয় পার্টি তিন-চতুর্থাংশ আসন পায়। ২৪ মার্চ ২৫ এপ্রিল, ২৮ নভেম্বর হরতাল এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় সমাবেশে খালেদা জিয়া জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার কায়েমের আহ্বান জানান।
৮৯-র ৮ ও ৯ মার্চ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বিএনপি’র জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সুপ্রিম কোর্টে হাইকোর্টের বিভক্তি নিয়ে যুগান্তকারী এক রায় আসে। ’৮৯-র ২৫ মে ফারাক্কা অভিমুখে মিছিল করেন। ১ নভেম্বর ৭ দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গুলিস্তানে ১০ ঘন্টা প্রতীক অনশন করে। এ সময় জেহাদের লাশকে সামনে রেখে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য গঠিত ও ক্যাম্পাসে ডাঃ মিলন ও নূর হোসেন নিহত হলে সেনাসদর দপ্তরে সশস্ত্রবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বৈঠক করে তিন বাহিনী প্রধান এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরশাদ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে তার পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে জানাতে চান। তিনি বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার ও প্রেসিডেন্ট ও সংসদ নির্বাচন এবং ১৫ দিন আগে নিরপেক্ষ উপ-রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। বিবিসিকে দেওয়া তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় খালেদা জিয়া অবিলম্বে এরশাদের পদত্যাগ দাবি করেন। ৬ ডিসেম্বর এরশাদ পদত্যাগ করলে অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। এরশাদের আমলে অনুষ্ঠিত ২টি জাতীয়, ১টি প্রেসিডেন্ট, ১টি গণভোট ও ২টি উপজেলা নির্বাচনের সবই প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতার কারণে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি’র প্রকৃত বিকাশ ঘটেছে। তিনি বিএনপিকে শুধু রক্ষাই করেননি, প্রতিকূল পথ বেয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি প্রধান শক্তি হিসাবে।
১৯৯১ সালের ১৯ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বপ্রথম জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহন করেন। জীবনের প্রথম জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী হয়ে ১৯৯১ সালে তৎকালীন পঞ্চগড়-১, বগুড়া-৭, ফেনী-১, ঢাকা-৫ ও ঢাকা-৯ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেন বেগম খালেদা জিয়া ৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবগুলোতে জয় লাভ করেন। উল্লেখ্য যে সেই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা ৫ ও ৯ আসনের প্রার্থী সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও শাহারা খাতুন’কে পরাজিত করেন। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠন করে । তার সরকার দেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার কায়েম করে। ২ এপ্রিল তিনি সংসদে সরকারের পক্ষে এই বিল উত্থাপন করেন। একই দিন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদকে স্বপদে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করে একাদশ সংশোধনী বিল আনেনে। ৬ আগস্ট ১৯৯১ সালের সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে দুটি বিল পাশ হয়।
১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে জয় লাভ করে ২য় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন বেগম খালেদা জিয়া, তবে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাস হয় এবং খালেদা জিয়া পদত্যাগ করেন।
১৯৯৬ সালের ১২ই জুনের ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালেদা জিয়া আবারও ৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং সবগুলো আসনে জয়ী হন। ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১৬টি আসন পেয়ে বিএনপি প্রধান বিরোধীদল হিসেবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করে যা ছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিরোধীদল। বিরোধীদলীয় নেত্রী হিসেবে বেগম খালেদ জিয়া নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের ১লা অক্টোবর ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করে পুনরায় সরকার গঠন করে। ২০০১ সালের নির্বাচনেও বেগম খালেদা জিয়া ৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবগুলোতে জয় লাভ করেন।
২০০৭ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর তৎকালীন সামরিক সরকার মিথ্যা দূর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করে।২০০৮ সালের ১১ই সেপ্টেম্বার তিনি হাইকোর্টের নির্দেশে মুক্তিলাভ করেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক গ্রেপ্তার হবার পর দীর্ঘ এক বছর সাত দিন কারাগারে অবস্থানকালে তাঁর বিরুদ্ধে চলতে থাকা কোন মামলারই উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি হয়নি এবং চলতে থাকা তদন্তে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি বরং ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবকটিতেই জয় লাভ করেন। সেই নির্বাচনে বিএনপি পরাজিত হলেও বেগম খালেদা জিয়া পরাজিত হননি। আর এইভাবেই একজন সাধারন গৃহবধূ থেকে ৩৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া আজ হয়েছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী, এজন্যই তিনি ‘দেশনেত্রী’।