:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
বুয়েট শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ছাত্রলীগের হামলায় পণ্ড হয়েছে। এই হামলায় ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নেন আহতরা।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে থাকা চেয়ার ও মাইক ভাঙচুর করেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ব্যানার-ফেস্টুনও। এতে পণ্ড হয়ে গেছে ছাত্র অধিকার পরিষদের সমাবেশ। এতে উভয়পক্ষের প্রায় ১১ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ হামলা করা হয়। ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’ ব্যানারে সমাবেশটি আয়োজিত হয়েছিল।
কর্মসূচি শুরু হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বাধা দেয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে থাকা চেয়ার ভাঙচুর করে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় ব্যানার-ফেস্টুনও।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার বিকালে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ শুরু করার প্রস্তুতি নেয় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এমএম মহিন উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান, সাংগঠনিক নাজিম উদ্দীন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন রহমান, উপদপ্তর সম্পাদক শিমুল খান, আব্দুর রাহিম, জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দীন রানা, সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনসহ ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতন্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পরে।
হামলায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এম. এম মহিন উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমান, মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, উপ-দপ্তর সম্পাদক শিমুল খান, আব্দুর রাহিম, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দীন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকশ ছাত্রলীগ নেতাকে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে।
ডাকসুর সাবেক সমাজ সেবা সম্পাদক ও পরিষদ নেতা আখতার হোসেন বলেন, ‘আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী স্মরণ সভা শুরুর পরপরই প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতে আমাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আমাদের অন্তত ১০ জন আহত ও দুজন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা কোনো দলীয় ব্যানারে এ প্রোগ্রাম করিনি। আমরা প্রোগ্রাম করেছি আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে। আমরা এই ন্যাক্কারজনক হামলায় ধিক্কার জানাই।’
এদিকে ঘটনার সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ছাত্রলীগ।
হামলায় জড়িত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বলেন, ‘তারা ক্যাম্পাসে বহিরাগত, মৌলবাদীদের নিয়ে কর্মসূচি পালন করে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসা করতে আসি তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিনা। এ সময় তারা আমাদের ওপর হামলা করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিরোধ করে।’