সামাজিক বাস্তবতার চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’

:: শামসুদ্দোহা মতিন ::

বিংশ শতাব্দী বাঙালি জাতির জন্য স্মরণীয়। কারণ এ শতাব্দীতেই বাঙালি জাতি বিশ্ব মানচিত্রে নিজেদের স্বতন্ত্র একটি পরিচয় তুলে ধরেছে। বাঙালি জাতির সর্বাপেক্ষা ও গৌরবময় ইতিহাসের নাম মুক্তিযুদ্ধ। এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ফসল হিসেবে আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। একাত্তরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে পৃথিবীর বুকে নতুন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। বাঙালি পায় নতুন ভূখন্ড, নতুন পতাকা। বিশ্ব দরবারে বাঙালি হিসেবে গর্ব করার মতো আত্মপরিচয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতির প্রারম্ভিক সময়কাল থেকে শুরু করে স্বাধীনতা লাভের পরবর্তী সময় পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনাবলি সেলুলয়েডের ফিতায় বন্দি হয়েছে।

আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, প্যালেস্টাইন, ভিয়েতনাম, কিউবা, চীন, রাশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ তথা যেখানেই মানুষের মুক্তির সংগ্রাম হয়েছে সেখানেই সিনেমা গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বলিষ্ঠ হাতিয়ার হয়ে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভ‚মিতে নির্মিত হয়েছে অসংখ্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। পৃথিবীর সব দেশের চলচ্চিত্র কর্মীরাই তাদের শ্রেষ্ঠতম চলচ্চিত্রগুলো নির্মাণ করেছেন বিপ্লবের ঘটনাপ্রবাহের আলোকে।

এ ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্র বঙ্গবাসী কলেজের পরম শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ বিপথে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে আবেগময় সংলাপ উচ্চারণ করেন। যা দর্শকদের হৃদয়ে মুহূর্তেই নাড়া দেয়। সংলাপটি হলো: ‘তোরা না এক একজন আগুনে পোড়া সোনা, তোরা না ইতিহাস তৈরি করেছিস।’ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে এত বড় মূল্যবান কথা আর হতে পারে না। যা খান আতাউর রহমান তাঁর এই চলচ্চিত্রে তুলে ধরেছিলেন।

বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা-পরবর্তী অস্থির রাজনৈতিক সামাজিক প্রেক্ষাপটে নির্মিত বহুল আলোচিত একটি চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমান পরিচালিত এ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭৩ সালের ৭ ডিসেম্বর। আরেক গুণী মেধাবী চিত্রনির্মাতা আমজাদ হোসেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ চলচ্চিত্রের কাহিনী ও সংলাপ রচনা করেন। খান আতাউর রহমান ছবিটি পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্য রচনা এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বঙ্গবাসী কলেজের অধ্যক্ষের ভূমিকায় রূপদানও করেন। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের রাজনৈতিক-সামাজিক অঙ্গনে অস্থিরতা অবক্ষয়কে উপজীব্য করে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবির কাহিনী ও চিত্রনাট্য আবর্তিত। ক্ষয়িষ্ণু সামাজিক মূল্যবোধের ছবি ‘আবার তোরা মানুষ হ’। যুদ্ধোত্তর সমাজে সামাজিক বৈষম্য আর আর্থিক সংকটে ক্ষুব্ধ ক’জন মুক্তিযোদ্ধা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়লে তাদের শিক্ষক কলেজের অধ্যক্ষ বিপথগামী তার ছাত্র ওই মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিকপথে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করেন। বাস্তবিকই ১৯৭১-এ দীর্ঘ নয় মাস স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বিজয় অর্জনের পরপর এই সমস্যাটি বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে দারুণ অস্বস্তি ও অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। হতাশ কিন্তু সৎ মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ কেউ, সুযোগসন্ধানী মুক্তিযোদ্ধারা এবং মুক্তিযোদ্ধা নামধারী কিছু সন্ত্রাসী এসব লুটপাট এবং অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। সমাজ সচেতন চিত্রনির্মাতা হিসেবে খান আতাউর রহমান সমসাময়িক এই নতুন সমস্যাটি বেছে নিয়েছিলেন তাঁর চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’-এর জন্য।

এ ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্র বঙ্গবাসী কলেজের পরম শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ বিপথে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে আবেগময় সংলাপ উচ্চারণ করেন। যা দর্শকদের হৃদয়ে মুহূর্তেই নাড়া দেয়। সংলাপটি হলো : ‘তোরা না এক একজন আগুনে পোড়া সোনা, তোরা না ইতিহাস তৈরি করেছিস।’ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে এত বড় মূল্যবান কথা আর হতে পারে না। যা খান আতাউর রহমান তাঁর এই চলচ্চিত্রে তুলে ধরেছিলেন।

আবার হতাশা যখন গ্রাস করছে তাদের তখনো নির্মাতা খান আতা বলেছেন, ‘যুদ্ধের সময় প্রতিটি মুহূর্তে যার কথা ভাবতাম। ভাবতাম দেশ স্বাধীন হলে যে আমার হবে, আমি তাকে হারিয়ে ফেলেছি কাঞ্চন। কী হলো আমার মুক্তিযুদ্ধ করে!’

‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবির শুরুর পর পর্দায় দেখা যায়, সাত তরুণ মুক্তিযোদ্ধা অসহায়, নিরুপায়। তারা প্রত্যেকেই নিজেদের পারিবারিক সমস্যার কারণে চরম হতাশায় আচ্ছন্ন। সমাজের সর্বত্র নানা অভাব, অভিযোগ, হতাশা, অনিয়ম, নৈরাজ্য বিষিয়ে তুলছে সবাইকে। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে এক ধরনের চাপা ক্ষোভ, হতাশা, বঞ্চনার গ্লানি বাসা বেঁধেছে।

পরিচালক প্রযোজক খান আতাউর রহমান মহান মুক্তিযুদ্ধের পরপরই ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবির কাজ শুরু করেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ ছবির সব কাজ সম্পন্ন করেন। ছবিটির বেশির ভাগ অংশের শুটিং বিএফডিসিতে হয়েছিল। এ ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ববিতা, ফারুক, সুলতানা, সরকার ফিরোজ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, আমির হোসেন বাবু, আল মনসুর, কাজী এহসান, রওশন জামিল, ওবায়দুল হক সরকার ও খান আতাউর রহমান। ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবির একটি সাড়া জাড়ানো গান ‘একনদী রক্ত পেরিয়ে বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা, তোমাদের এ ঋণ কোনো দিন শোধ হবে না, না, না-’ দর্শকদের হৃদয়ে বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করেছিল। শাহনাজ রহমত উল্লাহর গাওয়া এ গানটি একটি কালজয়ী বাংলা গানের মর্যাদা লাভ করেছে। এছাড়া এ ছবির আরেকটি জনপ্রিয় রোমান্টিক গান ‘তুমি চেয়েছিলে ওগো জানতে’ এখনো দর্শকদের আপ্লুত এবং নস্টালজিক করে।


মুক্তির পর ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবিটি দর্শক সমাদৃত হয় বিপুলভাবে। সব শ্রেণি-পেশা বিভিন্ন বয়সী দর্শক এ ছবিটি দেখে আবেগে আপ্লুত হয়েছিলেন। সবার হৃদয়ে তুমুলভাবে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিল ছবিটির বিভিন্ন দৃশ্য এবং সংলাপ। ১৯৭৩ সালে এ ছবির মুক্তির প্রাক্কালে সিনে সাপ্তাহিক পূর্বাণীতে লেখা হয়েছিল-

খান আতাউর রহমানের বিতর্কিত ছবি ‘আবার তোরা মানুষ হ’। বিতর্কিত ছবি হিসেবে চিহ্নিত করার কারণ হলো, এ ছবি নিয়ে ইতোমধ্যে চিত্রামোদী মহলে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এটা প্রধানত ছবির নাম নিয়ে। দ্বিতীয়, এ ছবির ব্যতিক্রমধর্মী বক্তব্য উপস্থাপনের কারণে। তবে ছবিটির সপক্ষেও রীতিমতো আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে- তবে এটা এই মুহূর্তে একটি বড় কথা’। খান আতাউর রহমান এর আগে দীর্ঘদিন ধরে নিজের নামে ছবি পরিচালনা করেননি। একটি উল্লেখযোগ্য আলোচিত বিষয়বস্তু এবং বক্তব্য নিয়ে ছবি নির্মাণ করেছিলেন নিজের নামে। তাঁর মতো একজন প্রতিষ্ঠিত এবং মেধাবী চিত্রনির্মাতা, যখন নিজের ব্যাপারে এতটা আস্থাশীল হতে পারেন, তখন সেই চিত্রকল্পটির প্রতি দর্শকদের আগ্রহ বেড়ে যায় স্বাভাবিকভাবে। খান আতা একজন দক্ষ, গুণী ও মেধাবী চিত্রনির্মাতা এ কথার প্রমাণ মেলে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবির পোস্টারে। তিনি তাঁর এ ছবির পোস্টারে আবেগঘন কিছু কথা তুলে ধরেছিলেন সেই সময়ে। যেমন, ‘আজ থেকে দুবছর আগের কথা। যখন বাংলা স্বাধীন হয়নি। তখন ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ ছবিটি বানাতে গিয়ে আমরা সবাই বাংলার দুঃখে কাঁদতাম। সেই কান্না আর একবার কাঁদলাম ‘আবার তোরা মানুষ হ’ করতে গিয়ে। বাংলাকে যারা স্বাধীন করলো সেই দামাল পাগল ছেলেরা আজ বিভ্রান্ত। দিশাহারা, পথহারা, বিপর্যস্ত। সেই পথভোলা ছেলেদের পথে আনবো কি করে? তাদের আবার মানুষ করবো কি দিয়ে হুকুম দিয়ে? পুলিশ দিয়ে? নাকি ক্ষমা দিয়ে, অশ্রু দিয়ে- সেই প্রশ্নই এই ছবি ‘আবার তোরা মানুষ হ’।

একজন দর্শকের দৃষ্টি দিয়ে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার শেখ নিয়ামত আলী ১৯৭৪ সালে জানুয়ারি সংখ্যায় সাপ্তাহিক পূর্বাণীতে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবি সম্পর্কে লিখেছিলেন- আধুনিক চলচ্চিত্রের গা ঘেঁষে চলে না এমন সব পুরনো চলচ্চিত্র নন্দনতত্ত্বের ব্যাকরণকে সম্বল করে তৈরি খান আতাউর রহমানের ছবি ‘আবার তোরা মানুষ হ’। যাতে প্রশ্রয় পেয়েছে চল্লিশ দশকের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত কতকগুলো অতি নাটকীয় সংঘাতময় মুহূর্ত। অফুরন্ত উপদেশমূলক সংলাপ ও চড়া দাগের আবহসঙ্গীত।

কাহিনীর উপস্থাপনে কিছুটা নতুনত্ব পরিলক্ষিত হলেও নিখুঁত কম্পোজিশন ও সূত্র ফ্রেমিংবোধের অভাবে ছবিটি আর্টের ব্যাখ্যায় সাফল্য মন্ডিত হতে পারেনি- একথা স্বীকার করতে হবে। আমরা জানি, একটি সামাজিক বক্তব্যকে তুলে ধরার জন্য আধুনিক চলচ্চিত্র সদাসর্বদা ব্যস্ত থাকে। তাই তার ইমেজের তাগিদে গড়ে তোলে কতকগুলো খুঁটিনাটি সমস্যা, যার সমাধানের ভার দর্শকদের হাতে ন্যস্ত করা হয়। অথচ ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবিতে পরিচালক খান আতা দর্শক রুচির সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করে একটা বানোয়াট সমাধানের বোঝা জোর করে চাপিয়ে দিয়েছেন সাধারণ দর্শকদের মধ্যে। এদিকে পরিচালক নিজেই বলেছেন যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত ছবিগুলোর মধ্যে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ উজ্জ্বল ব্যতিক্রমধর্মী।

এ ছবি নিয়ে তিনি অত্যন্ত আশাবাদী, আত্মপ্রত্যয় ও আত্মতৃপ্তিতে মহীয়ান। অবশ্য একথা ঠিক যে, মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত হলেও কাহিনীর আঙ্গিকতা ও চিত্রনাট্য বিন্যাসের দিক থেকে এ ছবি ব্যতিক্রমধর্মী। ছবিটি দেখে আমার এই প্রতীতি জন্মেছে যে, ছবিটি প্রচলিত জাতীয় জীবন ও সমাজ ব্যবস্থা তথা দুর্নীতি, অন্যায় ও অবিচারের ওপর চরম আঘাত হেনেছে এবং সরকারি প্রশাসন ব্যবস্থার দোষগুণের পরোক্ষ সমালোচনা করেছে।

খান আতাউর রহমান একজন চলচ্চিত্রকার হিসেবে তাঁর ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবিতে বঙ্গবাসী কলেজের অধ্যক্ষকে উদারচেতা, আবেগপ্রবণ ও ছাত্র স্নেহে বিগলিত প্রাণ এক আদর্শ চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করেছেন- যার উপদেশ বাক্য শান্তির ললিত বাণী হয়ে মন্ত্রমুগ্ধবৎ সাতজন দিকভ্রষ্ট মুক্তিযোদ্ধাকে সৎ পথে আনতে সাহায্য করে। তিনি নিজের সততা ও ন্যায়নীতিতে অটল বলে নিজের দুর্নীতিপরায়ণ অসৎ দুশ্চরিত্র সন্তানকে গুলি করে হত্যা করতে পিছপা হননি। আপন সন্তানের মৃত্যুতে অধ্যক্ষ সাহেব ভেঙে পড়েননি। পুলিশের কাছে অকপটে স্বীকার করেছেন নিজ হাতে আপন সন্তানকে গুলি করে হত্যার ব্যাপারটি। এমন চরিত্র সৃষ্টির মাধ্যমে খান আতা সাধারণ মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে কোনো কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্দীপ্ত করেছেন। এমন চরিত্র সৃষ্টির জন্য পরিচালক হিসেবে খান আতা প্রশংসার দাবিদার অবশ্যই। কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে এই চরিত্রের কতটা সঙ্গতি রয়েছে সেটাই হলো বিচার্য বিষয়। দ্যোতনা ফর্মুলার মধ্যে সৃষ্ট অধ্যক্ষ চরিত্রটি বাস্তবতা বিবর্জিত মনে হয়। অন্যান্য চরিত্র টাইপড হওয়ায় ম্যানারিজমকে এড়াতে পেরেছে- ফলে চরিত্রগুলো মোটামুটি বাস্তব মানুষ হয়ে উঠেছে। বাণিজ্যিক নানা উপাদান এ ছবির মধ্যে ছড়িয়ে আছে। বক্তব্য প্রকাশে পরিচালকের ভীরুতা লক্ষ করা গেছে। সিক্সটিন ডিভিশনের ঘাড়ে সকল দোষ চাপিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথমে সৎ ও চরিত্রবান হিসেবে দেখিয়ে মধ্যে ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতো কিছুটা দোষ-ত্রুটির ঘটনা তুলে ধরলে ছবির শেষে তাদের আবার সৎ ও চরিত্রবান করে তোলা হয়েছে। আবার যারা তাদের বিপথগামী করলো- বিপথগামিতার জন্য যারা দায়ী আসলে তাদের সম্বন্ধে পরিচালক খুব বেশি উচ্চবাচ্য করেননি। সুতরাং বলিষ্ঠতার অভাবে বক্তব্য মাঠে মারা গেছে বলে ‘আবার তোরা মানুষ হ’ সার্থক মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি।

কিন্তু উল্লিখিত মতামতকে বর্তমান প্রজন্ম কতটা গ্রহণ করবে সে প্রশ্ন চলে আসে। কেননা ‘আবার তোরা মানুষ হ’ একটি সংলাপ প্রধান চলচ্চিত্র। যেখানে আমাদের গৌরবময় মহান মুক্তিযুদ্ধের নানামাত্রিক দিক ফুটে উঠেছে।

‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবিটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে এবং পরিচালক খান আতাউর রহমান শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে বাচসাস পুরস্কার লাভ করেছিলেন। শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার হিসেবে আমজাদ হোসেন বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেন ‘আবার তোরা মানুষ হ’ ছবির জন্য।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *