:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশ ও র্যালিকে কেন্দ্র করে বুধবার ‘যানজটের রাজধানী’তে পরিণত হয়েছিল রাজধানী ঢাকা।
অনেকে অবস্থা বেগতিক দেখে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করেন। আর যারা গাড়ির মধ্যে বসেছিলেন প্রচণ্ড গরমে তাদের নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে। নারী ও শিশুযাত্রীদের ভোগান্তি ছিল অসহনীয়।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশজুড়ে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত র্যালি ও র্যালি শেষে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হন কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায়। রাস্তার পাশে গাড়িগুলো রেখে দেওয়ায় দুপুর থেকেই যানজট বেঁধে যায়। বিকেল ৪টায় র্যালি শুরুর পর অবস্থা আরো বেগতিক হয়। আশপাশের সবগুলো ক্রসিংয়ে যানবাহনের জট তৈরি হয়। গলি-উপগলি সর্বত্রই একই অবস্থা হয়।
ধীরে ধীরে ওই যানজট প্রায় পুরো রাজধানীতেই ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এমন আকার ধারণ করে যে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর ক্রসিংগুলোতে যানবাহনের এমন জট পাকিয়ে যায় যে, কোনো দিকেই কোনো যানবাহন এগোতে পারছিল না।
বিকেল ৫টার দিকে দেখা যায়, তেজগাঁও থেকে মগবাজার ফ্লাইওভারের ওপরের অংশের কোনো গাড়িই সামনে এগোচ্ছে না। পুরো ফ্লাইওভারই যানবাহনে ঠাসা। আবার কাকরাইল থেকে নয়াপল্টন চৌরাস্তা পর্যন্তও একই অবস্থা। আর গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকার চিত্র ছিল ভয়াবহ। কিছু সড়কে যানবাহন এক ঘণ্টায় ২০ ফুটও এগোতে পারেনি। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর ধীরে ধীরে গাড়িগুলো চলতে শুরু করে।
সমাবেশের মঞ্চ করা হয় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনের সড়কের পাশে। সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
সমাবেশের পূর্বনির্ধারিত সময় ছিল বিকাল ৪টায়। তবে দুপুরের আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হতে শুরু করে শাহবাগ থেকে প্রেস ক্লাব, মৎস্য ভবন থেকে কাকরাইল। এতে অফিসফেরত মানুষ ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন।এই পথে সাধারণ মানুষকে হেঁটে চলাচল করতে হয়েছে।
মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এতে গুলিস্তান থেকে ধানমণ্ডিগামী যানগুলোকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে দিয়ে ঘুরে যেতে হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মিছিল ও যানবাহনের কারণে সেগুনবাগিচা, মৎস্য ভবন, কাকরাইল ও শিল্পকলা এলাকার অলি-গলি পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়।
হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশে বক্তব্য দেন- ঢাকা মহানগর এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সোয়া ৫টায় সমাবেশ শেষ হলে শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল। মিছিলটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেস ক্লাব ও জিরোপয়েন্ট হয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের- ‘শেখ হাসিনা ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।