:: নাগরিক ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
ইন্দোনেশিয়ার কানজুরুহান ফুটবল স্টেডিয়ামে পুলিশের সঙ্গে সমর্থকদের সংঘর্ষের পর পদদলিত হয়ে অন্তত ১২৯ জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১৮০ জন।
শনিবার রাতে পূর্ব জাভায় কানজুরুহান ফুটবল স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি প্রতিদ্বন্দ্বী পারসেবায়া সুরাবায়ার কাছে হেরে যাওয়ার পর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ওই সংঘর্ষ হয়।
স্টেডিয়ামে আরেমা এফসি ও পেরসেবায়া সুরাবায়া নামের দুটি ফুটবল ক্লাবের মধ্যে খেলা চলছিল। খেলায় আরেমাকে ৩–২ গোলে হারায় পেরসেবায়া। দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে পেরসেবায়ার কাছে এই প্রথম কোনো ম্যাচে হারল আরেমা।
ইন্দোনেশিয়া পুলিশ জানিয়েছে, হারের পর স্টেডিয়ামে থাকা আরেমার দর্শকেরা মাঠে নেমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাদের থামাতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। এতে দর্শকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এ সময় হুড়োহুড়িতে অনেকেই পদদলিত হয়ে নিহত হয়।
পূর্ব জাভার পুলিশ প্রধান নিকো আফিনতা জানান, খেলার শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে ফুটবল সমর্থকরা মাঠের মধ্যে ঢুকে পড়ে। এরপর পুলিশ টিয়ার শেল ছুঁড়তে শুরু করে। এ সময় হুড়োহুড়িতে অনেকে পদদলিত হয় এবং সেখানে দমবন্ধ করা একটি পরিস্থিতির তৈরি হয়।
নিহতদের মধ্যে দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন জানিয়ে নিকো আফিনতা বলেন, ‘৩৪ জন স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাকিরা হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।’
তিনি জানান, সবাই একটি পয়েন্ট দিয়েই বের হওয়ার চেষ্টা করছিলো। ফলে প্রচণ্ড ভিড়ের এক পর্যায়ে অক্সিজেনের অভাবে দমবদ্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতির তৈরি হয়।
এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে দেশটির সরকার। বিষয়টি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে তারা। দেশটির ক্রীড়া ও যুবমন্ত্রী জাইনুদিন আমালি বলেন, দুঃখজনক এ ঘটনা এমন সময় ঘটলো, যখন ফুটবলপ্রেমীরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, অনেকের মৃতদেহ পড়ে আছে। মর্মান্তিক এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএসএসআই)।
কানজুরুহান ফুটবল স্টেডিয়াম এর ঘটনা ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল ভাবমূর্তিতে কালিমা মেখে দিয়েছে উল্লেখ করে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।
এ ছাড়া এ ঘটনার পর ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ ফুটবল লিগ এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করার কথা জানিয়েছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশন।
ইন্দোনেশিয়ায় আগামী বছর মে ও জুন মাসে ফিফা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ আয়োজন করার কথা রয়েছে।