:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
তীব্র গরমে বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইস্তিসকা ) আদায় করা হয়েছে রাজধানীতে। খোলা আকাশের নিচে প্রায় শতাধিক মুসল্লি নিয়ে এই নামাজের জামাতে ইমামতি করেছেন জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক শায়খ আহমাদুল্লাহ।
সোমবার সকাল ১০টায় রাজধানীর আফতাবনগর এল ব্লক খেলার মাঠে এ নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহ এ বিশেষ নামাজ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন।
শায়েখ আহমাদুল্লাহ বলেন, তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দেশ৷ ওষ্ঠাগত মানুষ ও পশুপাখির জীবন৷ হুমকির মুখে ফল ও ফসল৷ এসময়ে প্রয়োজন রহমতের বৃষ্টি৷ প্রিয়নবি সা. এমন অনাবৃষ্টিতে লোকদেরকে নিয়ে মাঠে বেরিয়ে যেতেন৷ এবং ইস্তিসকা তথা বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত আদায় করতেন (বুখারি, মুসলিম)৷
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জানান, প্রচণ্ড গরম। এই গরমে মানুষ অতিষ্ঠ। এই মৌসুমে এমন গরম আগে কখনো দেখিনি। প্রচণ্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষ। এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে ও মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনসহ আনুগত্য প্রকাশে এই নামাজ আদায় ও দোয়া মোনাজাত করা হয়। আল্লাহ যেন রহমত নাজিল করেন, এটিই আমাদের উদ্দেশ্য।
নামাজের আগে আগত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন শায়খ আহমাদুল্লাহ। নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি এবং গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এ সময় মুসল্লিরা অঝরে চোখের পানি ছেড়ে মোনাজাত করেন এবং তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এছাড়াও মোনাজাতে চলমান বৈশ্বিক সংকটের থেকে মুক্তির দোয়াও করা হয়।
এদিকে অনাবৃষ্টি ও তীব্র দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে গতকাল রাজধানীর মিরপুরের ডিওএসএস মসজিদ এলাকাতেও বৃষ্টি প্রার্থনাার জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইস্তিসকা ) আদায় করা হয়েছে।
বৃষ্টি প্রার্থনায় সম্মিলিতভাবে আজান, একামত ছাড়া জামাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা হয়। এটাকে বলা হয় ‘সালাতুল ইস্তিসকা’। ইমাম সাহেব কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত প্রসারিত করে রহমতের বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন। মুসল্লিরাও তখন কায়মনোবাক্যে দোয়া-প্রার্থনা করেন।
বস্তুত পাপমোচনের জন্য আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ অন্তরে তওবা-ইস্তেগফার করতে হয়। কেউ অন্যের হক বা মানবাধিকার নষ্ট করলে, তা ফেরত দিয়ে দোয়া করতে হয়। তবেই আল্লাহ তাআলা মানুষের মনোকামনা পূরণ করেন এবং বৃষ্টি দিয়ে নিসর্গ সিক্ত করেন।
প্রচণ্ড গরমে অসহ্য হয়ে পড়েছে পুরো দেশ। তাপদাহ ও তীব্র রোদে জনজীবন হয়ে উঠেছে ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত। ভীষণ এই অনলবর্ষী রোদ্দুরে এক পশলা বৃষ্টি নেমে এলে স্বস্তির হাওয়া বইবে। মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলিসিয়াস তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছে ঢাকায়।
এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহে বৃষ্টি না হলে, বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়। অনেক সময় মানুষজন অসুবিধা ও কষ্টে ভোগেন। তখন প্রয়োজন পূরণের জন্য আল্লাহর দরবারে বৃষ্টি কামনা করে দোয়া করা সুন্নত। আরবিতে এটাকে ‘ইস্তিসকার’ বা ‘সিক্তকরণের দোয়া’ বলা হয়। আর বৃষ্টি প্রার্থনায় সম্মিলিতভাবে জামাতে দুই রাকাত নামাজও আদায় করা হয়। এটাকে বলা হয় ‘সালাতুল ইস্তিসকার’। ইমাম সাহেব কিবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে দুই হাত প্রসারিত করে রহমতের বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন। মুসল্লিরাও তখন কায়মনোবাক্যে দোয়া-প্রার্থনা করেন।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বায়ু প্রেরণ করেন, অতঃপর তা (বায়ু) মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে। অতঃপর তিনি মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং তাকে (মেঘমালাকে) স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও যে, তার মধ্য হতে বৃষ্টিধারা নির্গত হয়। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম, আয়াত : ৩৮)
‘ইস্তিসকার’র নামাজ প্রসঙ্গে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবু বকর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) নামাজের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে ইস্তিসকার নামাজ পড়লেন। যখন কেবলামুখী হলেন, তখন তিনি তার চাদরটা উল্টিয়ে নিলেন। ’ (মুসলিম, হাদিস নং: ১৯৪৭)
বস্তুত পাপমোচনের জন্য আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ অন্তরে তওবা-ইস্তেগফার করতে হয়। কেউ অন্যের হক বা মানবাধিকার নষ্ট করলে, তা ফেরত দিয়ে দোয়া করতে হয়।