:: কক্সবাজার প্রতিনিধি ::
কক্সবাজারে উপকূলে ভেসে আসা একটি ট্রলার থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। রোববার দুপুরে সদর উপজেলার নাজিরা পয়েন্ট থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২-৩ সপ্তাহ আগে সাগরে নিখোঁজ হওয়া মাছ ধরার একটি ট্রলার শনিবার রাতে কে বা কারা পাড়ে টেনে নিয়ে আসে। ট্রলারে মানুষের হাত দেখা যাচ্ছে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ট্রলার থেকে ১০টি অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে।
কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আক্তার কামাল জানান, ট্রলারে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এখনও উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর সবকটি বিকৃত হয়ে গেছে ও পচে গেছে। এ জন্য গণনা করতে সমস্যা হচ্ছিল। প্রথমে ১১ জনের মরদেহ মনে হলেও উদ্ধারের পরে ১০ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়জনের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
ওসি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, কমপক্ষে ১৫ দিন আগে গভীর সমুদ্রে জলদস্যুরা ট্রলারটির মাছ–জাল লুট করে জেলেদের হাত–পা বেঁধে কুটিরে (ট্রলারে মাছ ও বরফ সংরক্ষণের কক্ষ) আটকে রেখে ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দিতে পারে। এখনও নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
বিকৃত হয়ে গেছে ১০ লাশ, হাত-পা বাঁধা ছিল ৬ জনের
মরদেহ সবগুলো বিকৃত হয়ে গেছে এবং এর মধ্যে ছয়জনের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর সবকটি বিকৃত হয়ে গেছে ও পচে গেছে। এ জন্য গণনা করতে সমস্যা হচ্ছিল। প্রথমে ১১ জনের মরদেহ মনে হলেও উদ্ধারের পরে ১০ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়টি মরদেহ হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। মরদেহগুলো থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে।
ওসি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, কমপক্ষে ১৫ দিন আগে গভীর সমুদ্রে জলদস্যুরা ট্রলারটির মাছ–জাল লুট করে জেলেদের হাত–পা বেঁধে কুটিরে (ট্রলারে মাছ ও বরফ সংরক্ষণের কক্ষ) আটকে রেখে ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দিতে পারে। এখনও নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, গভীর সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া ট্রলারটি আরেকটি মাছ ধরার ট্রলারে আটকে পড়েছিল। ওই ট্রলারের জেলেরা রশি দিয়ে ডুবন্ত ট্রলারটি টেনে মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলে নিয়ে আসেন। রোববার দুপুর দেড়টার দিকে ডুবন্ত ট্রলারটি কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক (বিমানবন্দরের পশ্চিমে) চ্যানেলে পৌঁছালে মৃত ব্যক্তির হাত-পা ভেসে উঠতে দেখা যায়। তাতে ভয় পেয়ে টেনে আনা ট্রলারের জেলেরা সটকে পড়েন। স্থানীয় লোকজন থানায় খবর জানালে দুপুর দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তারা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন। পরে একে একে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এখন পর্যন্ত একজনকে শনাক্ত
উদ্ধার ১০ মরদেহের মধ্যে এখন পর্যন্ত একজনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে, তার নাম ফয়সাল (১৭)। তিনি মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, গভীর সাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে ফিশিং বোটটির কিছু অংশ ডুবে ছিল। পরে অপর একটি ট্রলার ওই ফিশিং বোটটিকে বিশেষ ব্যবস্থায় টেনে শনিবার সন্ধ্যায় নাজিরারটেকে নিয়ে আসে। ভাটার পর রোববার সকালে কোল্ড স্টোর দেখতে গিয়ে মানুষের হাত-পা দেখা যায়। তখনই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। এরপর ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহযোগিতায় মরদেহগুলো উদ্ধার শুরু হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১০ জনের মরদেহ বের করা সম্ভব হয়েছে। মরদেহগুলো অর্ধগলিত হওয়ায় কাউকে ভালোভাবে চেনা যাচ্ছে না। তবে অনেকের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা ছিল।
কক্সবাজার জেলার মহেশী উপজেলার শাপলাপুর এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত ১৫ রমজানে ১৮ জনের একটি দল এ ফিশিং বোট নিয়ে গভীর সাগরে যান। শাপলাপুর এলাকার নুরুল কবির (২০) নামের এক জলদস্যুর নেতৃত্বে তারা মূলত সাগরে ডাকাতি করতে যায়। কিন্তু গভীর সাগরে ডাকাতির এক পর্যায়ে ৫-৬টি ফিশিং ট্রলার এক হয়ে ডাকাত দলকে চতুর্দিকে ঘিরে ফেলে এবং ডাকাতদের মেরে তাদেরই ব্যবহৃত ফিশিং বোটের কোল্ড স্টোরে আটকে রেখে পানিতে ভাসিয়ে দেন। উদ্ধার হওয়া ১০ জনের অর্ধগলিত মরদেহ এ ডাকাতদের।