:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
দেশের ৬৮টি কারাগারের ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৬৬ জন হলেও সেখানে বর্তমানে বন্দি রয়েছে ৭৭ হাজার ২০৩ জন। জাতীয় সংসদকে এই তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে লিখিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ তথ্য জানান।
দেশের কারাগারে মোট বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৪২ হাজার ৮৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪০ হাজার ৯৩৭ এবং নারী বন্দি ১৯২৯ জন। কিন্তু বর্তমানে দেশের ৬৮টি কারাগারে ৭৭ হাজার ২০৩ জন বন্দি রয়েছে বলে জানান তিনি।
রোববার সংসদের বৈঠকে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এর আগে বিকাল ৫টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হলে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
একই প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যশোর, সিলেট, দিনাজপুর, ফেনী, পিরোজপুর ও মাদারীপুর কারাগার ছাড়া দেশের সব কারাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দি আটক রয়েছে।
কারাগারের ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, খুলনা, নরসিংদী এবং জামালপুর কারাগার নির্মাণ বা সম্প্রসারণের কাজ চলছে।
নির্মাণাধীন কারগারগুলোর কাজ শেষ হলে ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান মন্ত্রী।
কারাগারে বন্দিদের চিত্র তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণ ক্ষমতা ২০০ হলেও এখন ৬৩৪ জন বন্দি আটক রয়েছে। দেশের কারাগারে সব মিলিয়ে ২ হাজার ৯৮১ জন নারী বন্দি আটক রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের ধারণ ক্ষমতা ৪ হাজার ৫৯০ জন হলেও বন্দি রয়েছে ৯ হাজার ৭৬৫ জন।
এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০২২ সালে সারাদেশে ১১৩ কেজি ৩৩১ গ্রাম আইস ও ১৬৭টি এলএসডি এবং ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ১১৪ কেজি ৪৮৭ গ্রাম আইস ও ১২৯টি এলএসডি জব্দ করা হয়েছে।
২০২২ সালে ১ লাখ ৩২১টি মাদক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান খান। তিনি জানান, এসব মামলায় ১ লাখ ২৪ হাজার ৭৭৫ জন অবৈধ মাদক কারবারিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৫৮ হাজার ১৬১টি মামলায় ৭২ হাজার ১৫৬ জনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য গ্লোারিয়া ঝর্ণা সরকারের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের মাদকের ভয়াল থাবা থেকে রক্ষায় দেশের ৩১ হাজার ৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইতোমধ্যে মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, কারাগারে আটক বন্দিদের মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বন্দিদের বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, মেডিটেশন এবং বই ও পত্র-পত্রিকা পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
এছাড়া ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিডিএমএস) সফটওয়্যারের মাধ্যমে মানবপাচারকারীদের তথ্য ভাণ্ডার করা হচ্ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মানবপাচারের মতো গুরুতর ও সংঘবদ্ধ অপরাধ প্রতিরোধ ও দমনে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। পাশাপাশি বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে বিরাজমান সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্ত হত্যা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।