:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
আওয়ামী লীগের দলীয় পদ ফিরে পেতে আবেদন করলেন অডিও কেলেঙ্কারিতে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারানো জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এমপি ডা. মুরাদ হাসান।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাধারণ ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে দলের সম্মানহানি হয়, চিঠিতে সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মুরাদ।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্যাডে এ আবেদন করেন তিনি। মুরাদ বর্তমানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য।
আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মুরাদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জাহিদ নাঈম। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃতদের দলে ফিরিয়ে নেওয়ার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক ড. মুরাদ দলীয় পদ ফিরে পেতে আবেদন করেছেন।
আবেদনপত্রে বিষয় হিসেবে লেখা হয়েছে ‘সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন’। মুরাদ হাসান তাতে উল্লেখ করেছেন, ‘আমি ডা. মুরাদ হাসান সংসদীয় আসন ১৪১, জামালপুর-৪ থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য। আমার বাবা মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আইনজীবী মতিয়র রহমান তালুকদার। আমি জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর ওই পদ থেকে আমাকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার করছি, ভবিষ্যতে এমন কোনো কর্মকাণ্ড করব না, যার ফলে আপনার বিন্দুমাত্র সম্মানহানি হয়।’
আবেদনপত্রের শেষাংশে বলা হয়, ‘অতএব বিনীত নিবেদন এই, আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করে বাধিত করবেন।’
আবেদনপত্রের অনুলিপি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি এবং বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীকে দেওয়া হয়েছে।
সাধারণ ক্ষমার আবেদনে মুরাদ বলেন, ‘আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়র রহমান তালুকদার ছিলেন জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০২১ সালে ৭ ডিসেম্বর ওই পদ থেকে আমাকে অব্যাহতি প্রদান করে।
‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে দৃঢ় প্রত্যয়ে অঙ্গীকার করিতেছি, ভবিষ্যতে এমন কোনো কর্মকাণ্ড করব না, যার ফলে আপনার বিন্দুমাত্র সম্মানহানি হয়। অতএব বিনীত নিবেদন এই, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করে বাধিত করবেন।’
মুরাদের চিঠির বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের আজকের মিটিংয়ে উত্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
২০২১ সালে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীর সঙ্গে ডা. মুরাদের অশালীন ফোনালাপ রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের এই এমপিকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিনি পদত্যাগ করলে ওই দিন রাতেই তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। একই দিনে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতায় সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে মুরাদ হাসানকে তার নিজ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।