:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২২ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। আর সবশেষ ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৫৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা।
চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৫৭ হাজার ৯৫৮ টাকা। বেসরকারি ব্যাংক ১১ লাখ ৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৬ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা।
এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংক ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। এসব ঋণের মধ্যে খেলাপি ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংক ৬২ হাজার ২৭ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। তাদের খেলাপির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা।
২০২০ সালে করোনার প্রভাব মোকাবিলা ও ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় দেয়। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, কোনো গ্রাহক ঋণ পরিশোধ না করলেও খেলাপি করা যাবে না। পরের বছর ২০২১ সালে বলা হয়, একজন গ্রাহকের যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা, কেউ তার মাত্র ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলেই খেলাপি হবেন না।
করোনার প্রভাব কমে আসলে গত বছরের জুনে সার্কুলার দিয়ে জানানো হয়, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে কিস্তির ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত পরিশোধ করলে খেলাপিমুক্ত থাকা যাবে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ওই হার কমিয়ে ৫০ শতাংশ করে। এ সিদ্ধান্তের প্রভাবে খেলাপি ঋণ কিছুটা কমে ডিসেম্বর প্রান্তিকে। কিন্তু চলতি বছর থেকে তা তুলে নেওয়ায় আবারো বেড়েছে খেলাপি ঋণ।
আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে বাংলাদেশ বলেছে, ২০২৬ সালের মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের মধ্যে এবং বেসরকারি খাতের ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশে নামিয়ে আনবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি নেই। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকের অবস্থা খুবই শোচনীয়।