:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ভারতের গুজরাটে মোরবি জেলার মাচ্চু নদীর ওপর ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৪১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ভারতীয় পুলিশের রাজকোট রেঞ্জ আইজি অশোক যাদব জানিয়েছেন, সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৭৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকজন এখনও নিখোঁজ রয়েছে। তাদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
গুজরাজের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংগাভি সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রোববার স্থানীয় সময় বিকেল ৬টা ৪২ মিনিটে ভেঙে পড়ে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুটি। সংস্কারকাজ শেষে গত ২৬ অক্টোবর নতুন করে সেতুটি চালু করা হয়েছিল। ভেঙে পড়ার সময় প্রায় ৫০০ মানুষ সেতুটির ওপরে ছিলেন, যাদের অধিকাংশই পর্যটক। অনেকে বিশেষ পূজার আচার পালন করছিলেন।
সেতুটি ভেঙে পড়ার পরে কিছু মানুষ সাঁতরে তীরে আসার চেষ্টা করেন। কিছু মানুষকে ভাঙা সেতুর রেলিং ধরে প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করতেও দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজ্য প্রশাসনকে উদ্ধারকাজে গতি আনার নির্দেশ দিয়েছেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য এবং পরিস্থিতির দিকে সজাগ নজর রাখার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই আহতদের ভারতীয় মুদ্রায় ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলের পক্ষ একটি টুইট করে জানানো হয়, এই ঘটনায় তিনি মর্মাহত। আহতদের চিকিৎসা ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারকাজে গতি আনতে মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
রোববার ছটপূজা উপলক্ষে হিন্দুধর্মাবলম্বীরা ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুটিতে জড়ো হয়েছিলেন। এ সময় ঝুলন্ত সেতুটি হঠাৎ ছিঁড়ে পড়ে। এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে অনেকেই সাঁতার কেটে তীরে আসার চেষ্টা করেছেন।
এদিকে সংস্কার কাজ শেষে ২৬ অক্টোবর আবারো চালু করা হয় দেড়শো বছর পুরনো সেতুটি। কিন্তু ৪ দিনের মাথায় তা ভেঙ্গে এই প্রাণহানি। তবে স্থানীয় প্রসাশনিক কর্মকর্তা জানান, ছাড়পত্র ছাড়াই খুলে দেয়া হয়েছিল সেতুটি।
এদকে, জরুরি উদ্ধার অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন গুজরাট সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
প্রায় ১৫০ বছর আগে নির্মিত মোরবির ঝুলন্ত সেতু ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায়ও রয়েছে। গুজরাটের স্থানীয় নববর্ষ উপলক্ষে মেরামতের পর গত ২৬ অক্টোবর সেতুটি পুনরায় খুলে দেওয়া হয়।