:: নাগরিক সাহিত্য ::
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ফিরিয়ে দিলেন কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার। রোববার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে তিনি এ সংক্রান্ত পোস্ট দিয়ে লেখেন, ‘পাঠিয়ে দিলাম। খুব ভারমুক্ত লাগছে।’
এর সঙ্গে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বরাবর পুরস্কার ফেরত দেয়া বিষয়ক একটি চিঠি ও এক লাখ টাকার চেকের ছবি সংযুক্ত করেছেন।
তিনি জানান, বাংলা একাডেমি যে স্বেচ্ছাচারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে তা একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি মেনে নিতে পারি না। একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রহীনতা, আমলাতান্ত্রিকতা, প্রতিষ্ঠানের মানের নিম্নগামিতা এবং আড়াই দশক ধরে নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের পছন্দমত লোক দিয়ে একাডেমি পরিচালনায় নির্বাহী পরিষদ গঠন করা হয়। প্রতিষ্ঠানের মান যখন নিম্নগামী হতে থাকে, তখন এই পুরস্কার অর্থহীন হয়ে যায়। এজন্যই আমি পুরস্কার ফেরত পাঠিয়েছি।
২০১৪ সালে তিনি কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য এ পুরস্কার পেয়েছিলেন। বাংলা একাডেমি তার মান ধরে রাখতে পারেনি অভিযোগ এই কথাসাহিত্যিকের।
জাকির তালুকদার নাগরিক নিউজকে বলেন, ‘বাংলা একাডেমির গণতন্ত্রহীনতা, আমলাতান্ত্রিকতা, ২৫ বছর ধরে কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচন না করে ইচ্ছেমতো একাডেমি চালানোর জন্য বাংলা একাডেমি সচেতন মানুষের কাছে নিজের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।’
জাকির তালুকদার আরও বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব কমে গেলে পুরস্কারের গুরুত্ব থাকে না। এ জন্য এই পুরস্কার এখন আমার কাছে অর্থহীন বোঝা বলে মনে হচ্ছে। বাংলা একাডেমি নিজের মান ধরে রাখতে পারেনি, এটা দুঃখজনক।’
জাকির তালুকদার জানান, সবকিছু ফেরত পাঠানোর সঙ্গে একটি চিঠিও তিনি দিয়েছেন। যেখানে পুরস্কার ফেরত দেওয়ার কারণ উল্লেখ আছে।
জাকির তালুকদার তাঁর ‘মুসলমানমঙ্গল’ গ্রন্থের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। ১০ বছর পর তিনি এটি ফেরত দিলেন।
জাকির তালুকদারের পুরস্কার ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা নাগরিক নিউজকে বলেন, ‘আমার কাছে এখনো (পুরস্কারের অর্থ ও সম্মাননা স্মারক) এসে পৌঁছায়নি। এত দিন পর পুরস্কার ফেরত দেওয়া যায় কি না, আমি ঠিক জানি না।’
কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদারের ২৪টির বেশি সাহিত্যকর্ম আছে। এর মধ্যে ‘পিতৃগণ’, ‘কুরসিনামা’, ‘কবি ও কামিনী’, ‘ছায়াবাস্তব’, ‘রাজার সেপাই’, ‘মুসলমানমঙ্গল’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
জাকির তালুকদারের বেড়া ওঠা নাটোরে। পেশায় চিকিৎসক। স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা করেছেন স্বাস্থ্য অর্থনীতিতে। চিকিৎসা ও গবেষণায় কাজ করেছেন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।