:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
জাপানে একদিনে অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে নিহত হয়েছে ৩০ জন। গুরুতর আহত হয়েছে অন্তত ১৪ জন। জাপানের মিটিওরোলিজক্যাল এজেন্সি (জেএমএ) জানিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ এবং অপর একটি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬।
নিহতদের অর্ধেকই নতো অঞ্চলের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল ওয়াজিমার। মূলত ভূমিকম্পের পরপরই বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
গতকাল সোমবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে জাপানের নতো অঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এই ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পের পরপরই সুনামির আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা। প্রাথমিকভাবে অবশ্য ভূমিকম্পের মাত্রা বলা হয়েছে ৭ দশমিক ৪।
পরবর্তী কয়েক ঘণ্টায় অন্তত ১৫৫ বার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্রতাও কমে এসেছে। তবে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালের দিকেও বেশ কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেএমএ।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে ‘২০২৪ নোটো পেনিনসুলা ভূমিকম্প’ নামে নামকরণ করেছে।
জাপান সরকার বলছে, ইশিকাওয়া জেলায় ধ্বংসাবশেষের নিচে মানুষের আটকা পড়ে যাওয়ার ছয়টি ঘটনা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। অন্যদিকে আবহাওয়া সংস্থা বলছে, এ ধরনের বড় আকারের ভূমিকম্পের পর সাধারণত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পরবর্তী কম্পন অব্যাহত থাকে। তাই এলাকাবাসীর সতর্কতা বজায় রাখা দরকার। সন্দেহ নেই জাপানের বড় এক অংশজুড়ে নববর্ষের শুরুতে আঘাত হানা ভূমিকম্প উৎসব আর ছুটির আনন্দ অনেকটাই ভন্ডুল করে দিয়েছে।
জাপানের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমস জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পরপরই স্থানীয় ইশিকাওয়া, নিগাতা, তোয়োমা এবং ইয়ামাগাতা প্রিফেকচারের উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের জন্য সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। তাদের দ্রুত উপকূল ছেড়ে উঁচু এলাকায় সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, রাজধানী টোকিও থেকেও এর কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের ১০ মিনিটের মধ্যেই ১২ ফুট উচ্চতার একটি ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে দেশটির ইশিকাওয়া প্রিফেকচারের ওয়াজিমা বন্দরে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আটকে পড়াদের ও জীবিতদের উদ্ধারে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছেন হাজার হাজার উদ্ধারকর্মী। কিন্তু ভাঙা রাস্তা ও ভাঙা বাড়ির ধ্বংসস্তূপ উদ্ধার কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে
ভূমিকম্পের শক্তিশালী আঘাতে বেশ কয়েকটি শহরে ধসে পড়া কয়েক ডজন ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ আটকে থাকার আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।
বেশিরভাগ এলাকায় রেল পরিষেবা, ফেরি এবং ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেছেন, ‘তল্লাশি আর উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে আমাদের সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। তবে যত দ্রুত সম্ভব আমরা সবাইকে উদ্ধার করব।’
এছাড়া ভূমিকম্পের পর টোকিওকে প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।