:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
দেশে ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু জ্বরে ৮৩ জনের মৃত্যু হলো।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে রেকর্ড ৭৬৫ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সব মিলিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৬৯৫ জন। চলতি বছরে ২৩ হাজার ২৮২ ডেঙ্গু রোগী সারা দেশে চিকিৎসা নিয়েছেন। তার মধ্যে ১৭ হাজার ২৫৯ জন রাজধানী ঢাকায় এবং ৬ হাজার ২৩ জন রোগী ঢাকার বাইরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৭৬৫ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৪৯৭ জন এবং ঢাকার বাইরে ২৬৮ জন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি ছিলেন ২৩ হাজার ২৮২ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছিলেন ২০ হাজার ৫০৪ জন।
একই সময়ে সারা দেশে হাসপাতাল থেকে ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ২০ হাজার ৫০৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকায় বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ২৯৯ জন এবং ঢাকার বাইরে হাসপাতালগুলো থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৫ হাজার ২০৫ জন।
আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, ২০১৭ সালে দেশে ডেন-ওয়ান ও ডেন-টু সেরোটাইপ ডেঙ্গুর উপস্থিতি ছিল। এরপর ২০২১ সালে ডেন-থ্রি ছিল। এবার ঢাকার ডেন-ফোরের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে কক্সবাজারে ডেন-ওয়ান, ডেন-থ্রি ও ডেন-ফোর সেরোটাইপ ডেঙ্গু হচ্ছে। একাধিক সেরোটাইপে সংক্রমণ ঘটায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি। জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি শাখার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. ইকরামুল হক জানান, চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৩৮ শতাংশ শিশু। যাদের বয়স এক থেকে ১৮ বছর। ২০ বছরের বেশি আক্রান্ত হয়েছে ৬২ শতাংশ মানুষ। আর মৃতদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ শিশু। ২১ শতাংশের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছর। চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৫ জন। এরমধ্যে ৪৬ জন নারী ও ২৯ জন পুরুষ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৮ জন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ জন আর ঢাকার বাইরে ৪৮ জন। এর মধ্যে ১৮ জন রোহিঙ্গা। কীটতত্ত্ববিদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, মশা নিধনে যে কীটনাশক ব্যবহার করা হয়, সেটি দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হলে তা মশার জন্য সহনশীল হয়ে পড়ে। তাই কীটনাশক কেনার আগে ৯০ শতাংশ মরবে কিনা সেটি নিশ্চিত হয়ে কেনা উচিত।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ এ সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।