:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ১১টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) রয়েছে ছয়টি এলাকা এবং উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) পাঁচটি।
রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব অঞ্চলের নাম তুলে ধরা হয়।
যে ১১টি এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) রয়েছে ছয়টি এলাকা এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাঁচটি এলাকা। এগুলো হলো- যাত্রাবাড়ী, মুগদা, কদমতলী, জুরাইন, মানিকনগর, সবুজবাগ, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, তেজগাঁও ও বাড্ডা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো) মো. হাবিবুল আহসান তালুকদার এসব তথ্য তুলে ধরে বলেন, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩০ হাজার ৬৮৫ জন। আর এ মাসের ২২ দিনে ২২ হাজার ৭০৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকায় রয়েছে ১৮ হাজার ৮৮৫ রোগী এবং ঢাকার বাইরে ১১ হাজার ৮০০ জন রোগী।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ জন। এ নিয়ে এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ২৪২ জন। মৃতদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নয়জন, চট্টগ্রামে একজন এবং ফরিদপুরে একজন মারা গেছেন।
জাতীয় ম্যালেরিয়া ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় গত ১৮ থেকে ২৭ জুন জরিপ চালিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। দুই সিটির ৯৮টি ওয়ার্ডে পরিচালিত জরিপে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের বাহক মশার প্রজননস্থল শনাক্ত, পূর্ণাঙ্গ মশা ও লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপ ও ম্যাপিং করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি লার্ভা পাওয়ার অর্থ ঢাকায় এবার এডিস মশাও বেশি পাওয়া যাবে।
অধিদফতর জানিয়েছে, রাজধানীর ১৮ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সাধারণত কোনো এলাকার ৫ শতাংশ বাড়িতে এই লার্ভা পাওয়া গেলে ওই পরিস্থিতিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন, মার্চে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জন এবং এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন।
২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরমধ্যে গত বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা গেছেন।