:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
ছাদ থেকে লাফিয়ে জায়না হাবিব প্রাপ্তি (২২) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেনের একটি ভবনের ১৬ তলার ছাদ থেকে লাফ দেন তিনি।
জায়না হাবিব ঢাবির বিবিএ ২৬তম ব্যাচের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
আদাবর থানার ওসি কাজী শাহীদুজ্জামান বলেন, এটা ক্লিন সুইসাইড। আমরা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি।
মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনার মুজিব পাটোয়ারি জানান, ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তিনি ছাদের দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে ছাদে পায়চারি করছেন। এরপর মোবাইল ও একটি চিরকুট রেখে তিনি লাফিয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, চিরকুটে ‘ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন নিয়ে হতাশার’ কথা রয়েছে।
চিরকুটে জায়না হাবিব প্রাপ্তি লিখেছেন, ‘আমার জীবন একটা ব্যর্থ জীবন। না পারলাম বাবা-মাকে খুশি করতে, না পারলাম অন্য কাউকে খুশি করতে। একটা ঘটনা জানার পরও যখন কেউ চুপ করে থাকে তখন সত্যিই সবকিছু অর্থহীন মনে হয়। আমি গেলে কিছু আসবে-যাবে না, আমি জানি। Because every person is replaceable. আমরা কাদেরকে ভালোবাসি তারা সেটা জানে। কে বেশি কষ্ট পাবে সেটাও জানি। But nothing makes sense anymore. The pain helps increasing. Now tell me how much a person can take.
–Prapti, June 1, 2022।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জায়না সপরিবারে জাপান গার্ডেন সিটির ১৬ নম্বর ভবনের দ্বিতীয় তলার বাসায় থাকতেন। তাঁর বাবা হাবিবুল আজিজ স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী।
আজ বিকেল পাঁচটার দিকে জায়না তাঁদের ভবনের ছাদে যান। তিনি বাইরে থেকে ছাদের দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেন। এ সময় বৃষ্টি হচ্ছিল। একপর্যায়ে বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী ছাদের দরজা খোলা রাখতে বললেও জায়না তা শোনেননি। একপর্যায়ে তিনি ছাদ থেকে নিচে ঝাঁপ দেন এবং ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে আদাবর থানার পুলিশসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে জায়নার লাশ উদ্ধার করেন।
পুলিশের মোহাম্মদপুর অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মুজিব আহমেদ পাটোয়ারি বলেন, ছাদের ও আশপাশের ভবনের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) ফুটেজে দেখা গেছে, জায়না ছাদে উঠে বৃষ্টির মধ্যে হাঁটাহাঁটি করেন। একপর্যায়ে তিনি তাঁর মুঠোফোনটি একটি পলিথিনে ঢোকান। ছাদে ওই মুঠোফোন ও একটি ‘সুইসাইড নোট’ রেখে তিনি একপর্যায়ে নিচে লাফিয়ে পড়েন।
জায়নাদের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী সদরের ভালিয়ালে। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়।