:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
নভেম্বর মাসে ১৯৩ কোটি ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আগের মাস অক্টোবরে এসেছিল প্রায় ১৯৮ কোটি ডলার। আগের মাসের চেয়ে প্রবাসী আয় কমেছে ৫ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নভেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা পাঠিয়েছেন বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার সমান ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা) যা ২১ হাজার ১৮১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
এরমধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৪ কোটি ৪২ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
আর বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ৩১ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭২ কোটি ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৯ লাখ ২০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।
এছাড়া নভেম্বরের ২৫ থেকে ৩০ তারিখের মধ্যে দেশে এসেছে ৪৩ কোটি ৭১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রবাসীরা দেশে ৩০ কোটি ৫২ লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। নভেম্বরের ১১ থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। এছাড়া ৪ থেকে ১০ নভেম্বর এসেছে ৫৮ কোটি ৮৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। আর ১ থেকে ৩ তারিখের মধ্যে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২০ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। যা চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এছাড়া সেপ্টেম্বর ও আগস্টে যথাক্রমে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৪ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার ও ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। আর জুলাই মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
গত অর্থবছরের জুলাইতে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার, আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার, সেপ্টেম্বরে ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ৭০ হাজার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ, জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ৭০ হাজার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ৪ লাখ ৮০ হাজার, মার্চে ২০২ কোটি ২৪ লাখ ৭০ হাজার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার, মে মাসে ১৬৯ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ও জুন মাসে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
ব্যাংকগুলো সম্প্রতি ডলারের দাম দুই দফায় ৭৫ পয়সা কমিয়েছে। ফলে প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনায় ডলারের দাম হয়েছে ১০৯ টাকা ৭৫ পয়সা। আর আমদানির ক্ষেত্রে দাম ১১০ টাকা ২৫ পয়সা। তবে নির্ধারিত দামে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে কম। ব্যাংকগুলো ১২৩ টাকার বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনেছে। নির্ধারিত দামের বাইরে ব্যাংকগুলোও এখন সরকারের মতো প্রবাসী আয়ে আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিচ্ছে। বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শ মেনে ডলারের দাম নির্ধারণ করছে।
বিদেশি রেমিট্যান্স হাউসগুলো ১২১-১২২ টাকা দামে প্রবাসী আয় সংগ্রহ করেছে। এর চেয়ে বেশি দামে তাদের কাছ থেকে ডলার কিনেছে দেশের ব্যাংকগুলো। তবে অল্প কিছু ব্যাংককে এই সুযোগ দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সব ব্যাংক এই সুযোগ পেলে আয় আরও বাড়ত।
ব্যাংকাররা বলছেন, প্রবাসী আয়ের প্রতি ডলারে ১২৩ টাকাও দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত দাম পাওয়ার কারণেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে আগ্রহ বোধ করছেন। তবে বেশি দামে ডলার কেনার কারণে আমদানিকারকদের এখন অনেক ক্ষেত্রে ১২৭-১২৮ টাকা দরে ডলার কিনতে হচ্ছে।