রাজশাহীতে নিপাহ ভাইরাসে নারীর মৃত্যু

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

নতুন বছরের প্রথম ১০ দিনের মধ্যেই দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীতে একজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। সংস্থাটি বলছে, খেজুরের রস পান করে রাজশাহীর বাসিন্দা ওই নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

বুধবার ‘শীতকালীন সংক্রামক রোগ ও নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ’ শীর্ষক আইইডিসিআর আয়োজিত মেডিকেল সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন।

আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, কাঁচা খেজুরের রস ও বাদুড়ের অর্ধেক খাওয়া ফল খাওয়া যাবে না। বাদুড়ের মূত্র বা লালার মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়।

তিনি বলেন, বাদুড় যখন খেজুরের রস খায়, তখন তার দ্বারা সেটি ‘ইনফেকটেড’ হয়ে যায়। মানুষ সেই রস কাঁচা খেলে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তারপর আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে তার পরিবারের সদস্য ও পরিচিতরা আক্রান্ত হয়। তাদের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

আইইডিসিআর পরিচালক আরও বলেন, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৭১ শতাংশ মানুষ মারা যায়। তাই কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

সম্মেলনে অন্য বক্তারা জানান, দূষিত খেজুরের রস খাওয়ার পর নিপাহ আক্রান্তের লক্ষণ দেখা দিতে ৮-৯ দিন লাগতে পারে। অন্যদিকে, ইতোমধ্যে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা দেয় ৬-১১ দিন পর।

আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০০১ সালে মেহেরপুরে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ২০০৩ সালে হয় নওগাঁয়। তবে ২০০৪ সালে সবচেয়ে বড় আকারের প্রাদুর্ভাব হয় ফরিদপুর জেলায়। সে বছর ফরিদপুরে নিপাহ ভাইরাসে ৩৫ জন আক্রান্ত হন, তাঁর মধ্যে ২৭ জনই মারা হন। ২০০১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ৩২৫ জনের দেহে নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৩০ জনই মারা গেছেন।

আইইডিসিআর গবেষকদের মতে, খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে খেলে তা নিরাপদ। গুড়ও নিরাপদ। রস সংগ্রহের পর গাছিদের সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *