:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
নেপালে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে এখন পর্যন্ত ১২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১৪০ জন।
নেপালের জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল পশ্চিম নেপালের জাজারকোট নামে একটা এলাকা। শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম রুকুম এলাকাও এই ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৪৪ জনই জাজারকোট জেলার। এ ছাড়া আহত হয়েছে অন্তত ৫৫ জন। এলাকাটির উপ-পুলিশ সুপার সন্তোষ রোকা হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ভূমিকম্পে নেপালের হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বহু অঞ্চল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশটির পার্বত্য জেলা পশ্চিম রুকুমের জেলা প্রশাসক হরি প্রসাদ পন্ত জানিয়েছেন, একক জেলা হিসেবে ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি নিহতের ঘটনা ঘটেছে তার জেলায়।
আহতদের জেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ভূমিকম্পে হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচণ্ড শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে জাজারকোটের রামিডান্ডায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে সৃষ্ট মানবিক ও বৈষয়িক ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে উদ্ধার ও ত্রাণ নিশ্চিতের জন্য ৩টি নিরাপত্তা সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন।’
জাজারকোট জেলার ভেরি, নালগাদ, কুশে, বেরেকোট এবং চেদাগড় ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে আঘাত হেনেছে। প্রধান জেলা কর্মকর্তা সুরেশ সুনার জানিয়েছেন, জেলার সব নিরাপত্তা বাহিনীকে তল্লাশি ও উদ্ধারকাজে জড়ো করা হয়েছে।
এর আগে ২২ অক্টোবর ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঠমান্ডু উপত্যকা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো কেঁপে ওঠে। তবে ক্ষতি বা হতাহতের কোনো খবর ছিল না।
নেপাল বিশ্বের ১১তম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। নেপালে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা। দেশটি তিব্বতীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলোর মিলনস্থলে অবস্থিত। প্রতি শতাব্দীতে এটি অপরের দুই মিটার কাছাকাছি অবস্থান করে, যার ফলে চাপ সৃষ্টি হয় যা ভূমিকম্প হয়।
গত ৩ অক্টোবর নেপালে এক ঘণ্টার মধ্যে চারটি ভূমিকম্প আঘাত হানার পর দিল্লিতেও শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হয়। ৪ দশমিক ৬ এবং ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্প ২৫ মিনিটের ব্যবধানে আঘাত হানে; ১৫ মিনিট পরে ৩ দশমিক ৮ মাত্রা এবং ১৩ মিনিট পর ৩ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
২০১৫ সালের এপ্রিলে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ৮ হাজার জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়, আহত হয় ২১ হাজারের বেশি।