:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
চলতি বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন বিজ্ঞানী। তাঁরা হলেন- ফ্রান্সের অ্যালাইন অ্যাসপেক্ট, যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ ক্লজার ও অস্ট্রিয়ার অ্যান্টন জেলিঙ্গার।
‘বিজড়িত ফোটন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেল অসমতার লঙ্ঘন প্রতিষ্ঠা এবং কোয়ান্টাম তথ্য বিজ্ঞানে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য’ ২০২২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে ফরাসি বিজ্ঞানী অ্যালাইন অ্যাসপেক্ট, যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী জন এফ ক্লজার এবং অস্ট্রিয়ার বিজ্ঞানী অ্যান্টন জেলিঙ্গারকে।
নোবেল কমিটি জানিয়েছে, পুরস্কার বিজয়ীরা বিজড়িত কোয়ান্টাম অবস্থা ব্যবহার করে যুগান্তকারী পরীক্ষা পরিচালনা করেছেন, যেখানে দুটি কণা আলাদা হওয়ার পরেও অভিন্ন এককের মতো আচরণ করে। এই ফলাফল কোয়ান্টাম তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নতুন প্রযুক্তির দুয়ার খুলে দিয়েছে।
এর আগে, গত বছরও পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনজন। তারা হলেন জাপানি আবহাওয়াবিদ স্যুকুরো মানাবে, জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ক্লাউস হাসেলমান এবং ইতালিয়ান পদার্থবিদ জর্জিও পারিসি। বৈশ্বিক উষ্ণতার পূর্বাভাস প্রদান এবং কমপ্লেক্স ফিজিক্যাল সিস্টেম সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়ার বিষয়ে যুগান্তকারী অবদানের জন্য তারা এ পুরস্কারে ভূষিত হন।
পৃথিবীর জলবায়ু পরিস্থিতির ফিজিক্যাল বা ভৌত মডেল তৈরি, পরবর্তনশীলতা পরিমাপ এবং নির্ভরযোগ্যভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতার বিষয়টি অনুমানের জন্য পদার্থে নোবেল জেতেন স্যুকুরো মানাবে এবং ক্লাউস হাসেলমান। অন্যদিকে, পারমাণবিক ও গ্রহীয় পরিসরে ভৌত ব্যবস্থা বা ফিজিক্যাল সিস্টেমের বিশৃঙখলা ও ফ্লাকচুয়েশন পরষ্পরের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা আবিষ্কারের জন্য পুরস্কার পান জর্জিও পারিসি।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে ৪টায় স্টকহোমে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সের সেক্রেটারি জেনারেল হান্স এল্লেগ্রেন বলেন, অ্যালাইন অ্যাসপেক্ট, জন ক্লজার ও অ্যান্টন জেইলিঙ্গার প্রত্যেকেই জট পাকানো কোয়ান্টাম ব্যবহার করে পরীক্ষা চালিয়ে দেখিয়েছেন যে, দুটি পৃথক কণা পরস্পর থেকে বিভক্ত হয়ে গেলেও একীভূত এককের মতোই আচরণ করে।
তাদের এই গবেষণা কোয়ান্টাম তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নতুন প্রযুক্তির পথ খুলে দিয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে, গতকাল সোমবার চিকিৎসায়, আজ পদার্থে এবং আগামীকাল রসায়ন, ৬ অক্টোবর সাহিত্য, ৭ অক্টোবর শান্তি, এরপর দুদিন বিরতি দিয়ে সর্বশেষে ১০ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতির ওপর নোবেল বিজয়ীর নাম।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ছোট আকারের অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির বাইরে অন্য কোনো অতিথি উপস্থিত ছিলেন না।
এ বছর নোবেল ফাউন্ডেশন ২০২২ সালের বিজয়ীদের সঙ্গে গত দুই বছরের বিজয়ীদেরও ডিসেম্বরের নোবেল সপ্তাহে আমন্ত্রণ জানাবে। সেখানে ১০ ডিসেম্বর নোবেল পুরস্কারের মূল্য ১ কোটি সুইডিশ ক্রোনারের (প্রায় ৯ লাখ ডলার) পাশাপাশি বিজয়ীদের হাতে একটি সনদ ও স্বর্ণপদক তুলে দেওয়া হবে।
এর আগে, সোমবার বিলুপ্ত হোমিনিনের জিন ও মানব বিবর্তনের যুগান্তকরী এক গবেষণার জন্য চলতি বছরের চিকিৎসাবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই পুরস্কার পেয়েছেন সুইডিশ জিনতাত্ত্বিক বিজ্ঞানী সোয়ান্তে প্যাবো।
উল্লেখ্য, সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে ১৯০১ সাল থেকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। প্রতিবছর চিকিৎসা, পদার্থ, রসায়ন, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতি—এ ছয় শাখায় নোবেল দেওয়া হয়।