:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান (সিওএএস) জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির বলেছেন, সব গণতান্ত্রিক শক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি সরকারই ভালোভাবে দেশের বৈচিত্র্যময় রাজনীতি এবং বহুত্ববাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে; যা জাতীয় উদ্দেশ্যের সঙ্গে আবদ্ধ।
পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ দপ্তরের (আইএসপিআর) দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
সরকার গঠন নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) লাহোরে প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের বৈঠকের পর এ কথা বলেন দেশটির সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ও গণতন্ত্রের অর্থ হচ্ছে পাকিস্তানের জনগণের সেবা করা, তাদের ব্যবহার করা নয়। ২৫ কোটি জনসংখ্যার এ অগ্রসরমাণ দেশটিতে বিশৃঙ্খলা ও মেরুকরণের রাজনীতি মানায় না। এগুলোকে দূরে সরিয়ে রাখতে দেশে স্থিতিশীল নেতৃত্ব প্রয়োজন, যার নেতৃত্বের ছোঁয়ায় সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।’
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মুনির বলেন, সেনাবাহিনীর মতে, নির্বাচন জয়-পরাজয় নির্ধারণের প্রতিযোগিতা নয়, জনগণের ম্যান্ডেট নির্ধারণের একটি অনুশীলন। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মীদের স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে কাজ করতে হবে এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে জনগণকে শাসন ও সেবাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এটা গণতন্ত্রকে কার্যকরী এবং উদ্দেশ্যমূলক করার একমাত্র উপায়।
সেনাপ্রধান আরও বলেন, নির্বাচন এবং গণতন্ত্র হচ্ছে পাকিস্তানের জনগণের সেবা করার উপায়, তাদের ব্যবহার করা নয়।
বিবৃতিতে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন (ইসিপি), সাধারণ নাগরিক, নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল এবং বিজয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানান সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য স্বাধীন ও বাধাহীন অংশগ্রহণ সংবিধানে বর্ণিত গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি তাদের অঙ্গীকার প্রদর্শন করে।
‘প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নেতৃত্ব এবং কর্মীরা সর্বোচ্চ প্রশংসার দাবি রাখে। জাতীয় গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ, বেসামরিক প্রশাসন ও বিচার বিভাগের সদস্যদের গঠনমূলক ভূমিকায় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নির্বাচন সফলভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে’ যোগ করেন সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, যেহেতু জনগণ পাকিস্তানের সংবিধানের প্রতি তাদের সম্মিলিত আস্থা রেখেছে, তাই এখন রাজনৈতিক পরিপক্কতা ও ঐক্যের মাধ্যমে একই প্রতিদান দেওয়া সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।
সেনাপ্রধান আশা করেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে। নির্বাচনকে দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির আগমনি বার্তা হিসেবেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান মনে করেন, নির্বাচন শুধু জয়-পরাজয় নির্ধারণের প্রতিযোগিতা নয়, বরং এটি জনগণের ম্যান্ডেট নির্ধারণের মহড়া। রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মীদের অবশ্যই নিজস্ব স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে শাসনক্ষমতা পরিচালনা এবং জনগণের সেবা করতে হবে। কার্যকর ও দৃঢ় গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সম্ভবত এটাই একমাত্র উপায় বলে উল্লেখ করেন সেনাপ্রধান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সেনাপ্রধান আশা করেন, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে। নির্বাচনকে শান্তি ও সমৃদ্ধির আগমনী বার্তা হিসেবেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার। ২৬৫ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৫০ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। আসনসংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। তৃতীয় স্থানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৬৫টি আসনের মধ্যে সর্বশেষ ফলাফলে (রাত ১০টা) ২৫৩ আসনের ফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০০ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপরই পিএমএল-এন ৭১, পিপিপি ৫৪ ও এমকিউএম ১৭ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য দল পেয়েছে ১০টি আসন।