:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট স্বৈরশাসক পারভেজ মোশাররফ মারা গেছেন। রোববার আরব আমিরাতের আমেরিকান হাসপাতালে তিনি মারা যান।
৭৯ বছর বয়সী পারভেজ মোশাররফ দীর্ঘদিন ধরে অ্যামাইলয়েডোসিস রোগে ভুগছিলেন।
অ্যামাইলয়েডোসিস রোগির শরীরের অঙ্গ এবং টিস্যুতে অ্যামাইলয়েড নামক একটি অস্বাভাবিক প্রোটিন তৈরি করে। যে কারণে অঙ্গগুলো ক্রমেই অকার্যকর হয়ে পড়ে।
পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুর পরপরই দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দপ্তর এক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়।
সাবেক এই সামরিক শাসক গত বছরের জুনে তিন সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তখন তার পরিবার মোশাররফের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানান, তিনি একটি কঠিন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, যেখান থেকে পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। কারণ তার অঙ্গগুলো অকার্যকর হয়ে গেছে।
১৯৪৩ সালের ১১ আগস্ট মোশাররফ ব্রিটিশ ভারতের দিল্লিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬১ সালের ১৯ এপ্রিল তিনি পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি কাকুল থেকে কমিশন পান। এর পর তিনি যোগ দেন স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপে।
১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধেও অংশ নেন মোশাররফ।
তিনি ১৯৯৮ সালে জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এর এক বছর পর ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন মোশাররফ।
তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
মোশাররফ ২০০২ সালে একটি গণভোটের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ২০০৮ সাল পর্যন্ত পদে বহাল ছিলেন। অবশ্য মাঝে ২০০৪ সালে ১৭তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হন মোশাররফ।
৯/১১ ঘটনার পর পাকিস্তানকে ফ্রন্টলাইন মিত্র হওয়ার মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন এই সামরিক নেতা। মোশাররফ ২০০৭ সালের নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পদচ্যুত করার কারণে সংবিধান-বিরোধী পদক্ষেপের জন্যও পরিচিত। যা আইনজীবীদের আন্দোলনের সূচনা করেছিল। যা বিচারব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নামেও পরিচিত।
সেই ধারাবাহিকতকায় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্বে আন্দোলনের পর ২০০৮ সালের ১৮ আগস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হন পারভেজ মোশাররফ।
ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবস্থান করছিলেন।