:: ফরিদপুর প্রতিনিধি ::
ফরিদপুরের কানাইপুরে বাস ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। মঙ্গলবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুরে অ্যাবলুম ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা সবাই পিকআপ ভ্যানের যাত্রী।
দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের নিহত পাঁচজন হলেন- ফরিদপুরের বোয়ালমারীর বেজিডাঙ্গা গ্রামের রফিক মোল্লা (৩৫), তার স্ত্রী সুমি বেগম (২৩), দুই ছেলে রুহান মোল্লা (৬), হাবিব মোল্লা (৩) ও রফিক মোল্লার মা। রফিক ঢাকায় একটি সরকারি অফিসে লিফটম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঈদের ছুটি শেষ করে তিনি মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে পিকআপ ভ্যানে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন।
এ ছাড়া নিহত আরেকজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম মর্জিনা বেগম।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কানাইপুরের দিগনগর গ্রামের বাসিন্দা সাহানা বেগম বলেন, ঘটনাস্থলে আসার পর বাসটির একটি চাকা রাস্তার গর্তে পড়ে যায়। গাড়িটি আড়াআড়িভাবে সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পিকআপ ভ্যানটি বাসটির মাঝামাঝিতে এসে আঘাত করলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে মাগুরাগামী ইউনিক পরিবহনের সঙ্গে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ১১ জন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন মারা যান।
করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, এগারোজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। আর দুইজন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।
তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে- একটি পরিবারের লোকজন পিকআপ ভাড়া করে ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন।
বোয়ালমারি উপজেলার শেখর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল আহম্মেদ জানান, ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১৩ জনের ১১ জন একই গ্রামের বাসিন্দা। তারা ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পূর্ব নির্ধারিত অনুদান আনার জন্য পিকআপে যাচ্ছিলেন।
ফরিদপুর ফায়ার সার্ভিসের অতিরিক্ত পরিচালক সুভাষ বারুই জানান, সাতটা ৪৫ মিনিটে দুর্ঘটনা ঘটার পরপরই ফোনে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা উদ্ধার কাজে অংশ নেই। এ সময় বাস পিকআপ সংঘর্ষের ঘটনায় পিকআপের আহত চারজনকে দ্রুত ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং ১১ জন মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কাজে অংশ নেয় ফরিদপুর জেলা পুলিশ। পুলিশ সুপার মোরশেদ আলম বলেন, উদ্ধারকাজ শেষে বর্তমানে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান তালুকদার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় নিহতদের পাঁচ লক্ষ টাকা এবং আহতদের তিন লক্ষ টাকা পেতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদেরকে জেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করতে বলা হয়েছে।