:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ঈদুল ফিতরের দিন দেশের চার জেলায় বজ্রপাতে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিউ ধলেশ্বরী নদীতে ঈদের নামাজের জন্য গোসল করতে গিয়ে ৩ জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও সরাইলে ১ জন করে, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জে ১ জন ও মেহেরপুরে ১ জন মারা যান।
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে নিউ ধলেশ্বরী নদীতে ঈদের নামাজের জন্য গোসল করতে গিয়ে বজ্রপাতে দুই স্কুল ছাত্রসহ তিন জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি দশকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ভূঁইয়া নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হচ্ছে, হাতিয়া দক্ষিণপপাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে মো. আরিফুল (১৪), দশকিয়া বাড়ারিপাড়ার জুলহাস বাড়ারির ছেলে ফয়সাল মিয়া (১৪) ও রাকিব মিয়া। রাকিব হাতিয়া গ্রামের রাজ্জাক মিয়ার মেয়ের জামাই। আরিফুর ও ফয়সাল দশকিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ ম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক ভূঁইয়া বলেন, সকাল ৭ টার দিকে নিহত তিনজনসহ পাঁচজন বাড়ির পাশের নিউ ধলেশ্বরী নদীতে গোসল করতে যায়। সেখানে বজ্রপাত হলে পাঁচজনই আহত হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় ফয়সাল, আরিফুল ও রাকিবকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুইজন গ্রামের ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিয়ে চলে যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বজ্রপাতে মো. রনি নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পৌরশহরের খরমপুর কেল্লা বাবার মাজার শরীফ কবরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রনি দুর্গাপুর মধ্যপাড়া মোহাম্মদ আলীর ছেলে। রনি পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন।
আখাউড়া পৌরসভার দুর্গাপুর ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম স্বপন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, ঈদের নামাজ শেষে রনি খরমপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার নানা-নানির কবর জিয়ারত জিয়ারত করছিলেন। এমন সময় বজ্রপাতে রনি আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া বজ্রপাতে মাদ্রাসাছাত্র সাইফুল ইসলাম মেহেদী (১৫) নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পানিশ্বর ইউনিয়নের শোলাবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সাইফুল ইসলাম পানিশ্বর ইউনিয়নের শোলাবাড়ি গ্রামের শাহনোয়াজ মাস্টারের ছেলে। সে শাখাইতি সৈয়দ আব্দুর রউফ শাহ হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঈদের নামাজ শেষে মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় একটি মাঠে সহপাঠীদের নিয়ে ফুটবল খেলতে যাই। খেলা চলা অবস্থা বজ্রপাতের আঘাতে নিহত হয় সাইফুল।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে বজ্রপাতে শাহজাহান মিয়া (৬০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার পৌর এলাকার নোয়ানগর গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার ঈদ উল ফিতরের দিন সকালে শাহজাহান মিয়া বাড়ির পাশে পুকুরে গোসল করতে যান। গোসল শেষে ঘরে ফেরার সময় হঠাৎ বজ্রপাত শুরু হয়। বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে হাওরে গরু চড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে একই এলাকার সত্যলাল দাস (৩৫) নামে এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তাকে আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে ঈদের নামাজ পড়ে মাঠ থেকে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের লাদিয়া গ্রামের মৃত ইলিয়াছ মিয়ার ছেলে সারাজ মিয়া (২৭) ঈদের নামাজ পড়ে মাঠ থেকে গরু আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
মেহেরপুরে বজ্রপাতে আব্দুর রাজ্জাক নামের কৃষকের (৫৩) মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় মন্টু (৪৮) নামের একজন আহত হয়েছেন। মন্টু নিহত আব্দুর রাজ্জাকের ছোট ভাই। মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সকালে ঈদের জামাতের জন্য বাড়ি থেকে বের হয় রাজ্জাক ও মন্টু। পথিমধ্যে বজ্রপাত হয়। পরে এলাকাবাসী মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাককে মৃত ঘোষণা করেন।