প্রভাবশালী নারীর তালিকায় বাংলাদেশের জান্নাতুল

:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::

বিশ্বের অনুপ্রেরণাদায়ী ও প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকা মঙ্গলবার প্রকাশ করেছে বিবিসি। এ তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের কর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস।

এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, মেয়েদের ব্যালন ডি’অর জয়ী আইতানো বনমাতি।

প্রায় ২৬ বছরের পোড়া ক্ষতের জীবন জান্নাতুলের। ১৯৯৭ সালে তিনি স্নাতক (সম্মান) শেষ করেছেন। একদিন রান্না করতে গিয়ে ওড়নায় আগুন লেগে যায়। চিকিৎসকদের ভাষায় পোড়ার পরিমাণ ছিল ৬০ শতাংশ। মুখ, শরীরের ওপরের অংশ পুড়ে কুঁচকে বিকৃত হয়ে যায়। তারপরও বেঁচে যান জান্নাতুল। গলা লেগে গিয়েছিল ঘাড়ের সঙ্গে। এ পর্যন্ত চামড়া প্রতিস্থাপনসহ অস্ত্রোপচার লেগেছে প্রায় ৫০টি। তারপরও তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ, লেখালেখি এবং প্রতিবন্ধীদের অধিকারের বিষয়ে কাজ চালিয়ে গেছেন। তিনি ভয়েস অ্যান্ড ভিউজ নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটি আগুনে দগ্ধ নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে।

বিবিসি আরও জানিয়েছে, বন্ধুদের কাছে জান্নাতুল আইভি নামে পরিচিত। তিনি এখন পর্যন্ত পাঁচটি শর্ট ফ্লিম এবং তিনটি উপন্যাস প্রকাশ করেছেন। শারীরিক অক্ষমতা নিয়ে যারা জীবনযাপন করেন তাদের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধিতে নিজের জীবনের গল্প ব্যবহার করে থাকেন তিনি।

পরিবার ও বন্ধুদের সহায়তায় অনিয়মিত (প্রাইভেট) শিক্ষার্থী হিসেবে ইডেন মহিলা কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করেন। এলএলবি পাস করেন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে মাস্টার্স করেন। চলচ্চিত্রবিষয়ক বিভিন্ন শর্ট কোর্স করেন। তবে জান্নাতুলের ভাষায় ভালো চলচ্চিত্র বুঝতে এবং ভালো দর্শক হওয়ার জন্যই ছিল তার এ পড়াশোনা।

বিবিসির এই স্বীকৃতির পেছনে মানবাধিকার বিষয়ে তাঁর কাজই প্রাধান্য পেয়েছে বলে জানান জান্নাতুল। তিনি বলেন, তাঁর সংগঠনের মূল কাজ আগুনে দগ্ধ নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এই নারীদের সচেতন করতে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কাজ করেন তাঁরা। এর পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এসব নারীর ইস্যু তুলে ধরেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আছেন।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *