:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
আজ একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠার ৪৯তম বর্ষপূর্তি। ১৯৭৫ সালের এই দিনে এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে রচিত হয়েছিল এক বিতর্কিত অধ্যায়ের।
ওইদিন সংসদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পেশকৃত চতুর্থ সংশোধনী বিল পাস হয়। এর মাধ্যমে দেশের সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে একদলীয় শাসন তথা বাকশাল গঠনের পথ উন্মুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা চালু করা হয়।
বিল পাসের সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতিতে পরিণত হন। এক নজিরবিহীন ন্যূনতম সময়ের মধ্যে (মাত্র ১১ মিনিট) চতুর্থ সংশোধনী বিলটি সংসদে গৃহীত হয় এবং তা আইনে পরিণত হয়। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও বিলটি নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনা বা বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়নি। এই বিলের মাধ্যমে প্রশাসন ব্যবস্থায় এক নজিরবিহীন পরিবর্তন সাধন করে রাষ্ট্রপতি হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান দেশের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণাধিকারী হন। আওয়ামী লীগ প্রধান হিসেবে তিনি এবং তার আত্মীয়স্বজনরা রাষ্ট্রের সবরকম ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন।
এ পদক্ষেপকে তিনি তার ‘দ্বিতীয় বিপ্লবে’র সূচনা হিসেবে উল্লেখ করেন। আর এই দ্বিতীয় বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করতে শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের সব মৌলিক রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেন। অবরুদ্ধ করেন মানুষের বাক ও চিন্তার স্বাধীনতা। যদিও এই নেতা ’৭১-এ ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে উদাত্ত কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি এদেশের মানুষের অধিকার চাই।’
চতুর্থ সংশোধনী বিল পাসের এক মাস পর অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তত্কালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের সব মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকার হরণ করেন। এদিন তিনি সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ (বাকশাল) নামে একটি জাতীয় রাজনৈতিক দল গঠন করেন। একইসঙ্গে নিজেকে এই দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দেন। পাশাপাশি দল পরিচালনা এবং দলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও একক ক্ষমতার অধিকারী হন। কয়েকটি দলের মাধ্যমে বাকশাল গঠিত হলেও দলের মধ্যে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের কোনো কর্তৃত্ব ছিল না। এভাবে শেখ মুজিবুর রহমান ওই সময় আমাদের রাষ্ট্র, সমাজ এবং রাজনৈতিক অঙ্গনের একাধিপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি বাকশালের দর্শন বাস্তবায়নের জন্য ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন দেশের সবক’টি সংবাদপত্র বিলুপ্ত করেন। শুধু সরকারি ব্যবস্থাপনায় দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, বাংলাদেশ অবজারভার এবং বাংলাদেশ টাইমস—এ চারটি পত্রিকা সাময়িকভাবে প্রকাশনার সুযোগ দেয়া হয়।
এর আগে ওই বছরের ৭ জুন বাকশালের গঠনতন্ত্র, কার্যনির্বাহী ও কেন্দ্রীয় কমিটি, পাঁচটি ফ্রন্ট এবং এর কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় দলের চেয়ারম্যান হিসেবে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল পদে প্রধানমন্ত্রী এম মনসুর আলীর নাম ঘোষণা করেন। জিল্লুর রহমান, শেখ ফজলুল হক মণি ও আবদুর রাজ্জাককে দলের সেক্রেটারি করা হয়। আর ফ্রন্ট পাঁটটি হলো : জাতীয় কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় মহিলা লীগ, জাতীয় যুবলীগ ও জাতীয় ছাত্রলীগ। এর সেক্রেটারিরা হলেন যথাক্রমে ফণীভূষণ মজুমদার, অধ্যাপক ইউসুফ আলী, বেগম সাজেদা চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ এবং শেখ শহীদুল ইসলাম। ১৫ জনকে নিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটি এবং ১১৫ জন সদস্য রাখা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে।
চতুর্থ সংশোধনী বিষয়ে ওই সময় বিশ্বনেতাদের কিংবা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কোনো মন্তব্য পত্রপত্রিকায় পাওয়া যায়নি। তবে এসব ঘটনায় তখন দিল্লিতে গণতন্ত্রমনারা ভীষণ মর্মাহত হন এবং জয়প্রকাশ নারায়ণ এক বিবৃতিতে বলেন, মুজিবকে আমরা গণতন্ত্রের বরপুত্র হিসেবে জানতাম। আমাদের ধারণা, ভারতের পরামর্শে তিনি এটা করেছেন। তার এ বক্তব্যের সত্যতা মেলে চতুর্থ সংশোধনী বিল পাসের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হওয়ার দিনই ভারতের তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর অভিনন্দন বার্তার মাধ্যমে।
এ বিষয়ে ১৯৭৫ সালের ২৬ জানুয়ারি দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতি ইন্দিরা গান্ধীর অভিনন্দন’ শিরেনামের প্রতিবেদনটি নিম্নরূপ : নয়াদিল্লী, ২৫ জানুয়ারী (বাসস)- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী মিসেস ইন্দিরা গান্ধী তাঁহাকে অভিনন্দন জ্ঞাপন করিয়াছেন। বঙ্গবন্ধুর নিকট আজ প্রেরিত এক বাণীতে মিসেস গান্ধী বঙ্গবন্ধুর স্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনা করিয়াছেন।
১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি (শনিবার) চতুর্থ সংশোধনী বিলটি পাস হওয়ার পরদিন ২৬ জানুয়ারি (রোববার) দৈনিক ইত্তেফাক সংশোধনী বিষয়ে বিস্তারিত প্রকাশ করে। ওইদিনের ইত্তেফাকে প্রকাশিত চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে ‘জাতীয় দল গঠন’ এবং ‘রাষ্ট্রপতি সংক্রান্ত অনুচ্ছেদ হুবহু তুলে ধরা হলো :
১১৭-ক। জাতীয় দল :- (১) রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এই সংবিধানের দ্বিতীয়ভাগে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনায় মূলনীতিসমূহের কোনো একটা পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করিবার উদ্দেশ্যে অনুরূপ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি, আদেশ দ্বারা, নির্দেশ দিতে পারিবেন যে রাষ্ট্রে শুধু একটা রাজনৈতিক দল (অতঃপর জাতীয় দল নামে অভিহিত) থাকিবে।
(২) যখন (১) দফার অধীনে কোনো আদেশ প্রণীত হয়, তখন রাষ্ট্রের সকল রাজনৈতিক দল ভাঙ্গিয়া যাইবে এবং রাষ্ট্রপতি জাতীয় দল গঠন করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।
(৩) জাতীয় দলের নামকরণ, কার্যসূচি, সদস্যভুক্তি, সংগঠন, শৃঙ্খলা, অর্থসংস্থান এবং কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্পর্কিত সকল বিষয় রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা পরিচালিত হইবে।
(৪) (৩) দফার অধীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত আদেশ সাপেক্ষে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি জাতীয় দলের সদস্য হইবার যোগ্য হইবেন।
(৫) এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও যখন জাতীয় দল গঠিত হয় তখন কোনো ব্যক্তি—
(ক) যদি তিনি যে তারিখে জাতীয় দল গঠিত হয় সেই তারিখে সংসদ সদস্য থাকেন, তাহা হইলে তিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় দলের সদস্য না হইলে সংসদ সদস্য থাকিবেন না এবং সংসদে তাহার আসন শূন্য হইবে।
(খ) যদি তিনি জাতীয় দলের দ্বারা রাষ্ট্রপতি বা সংসদ সদস্য নির্বাচনে প্রার্থীরূপে মনোনীত না হন, তাহা হইলে অনুরূপ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত যোগ্য হইবেন না।
(গ) জাতীয় দল ছাড়া অন্য কোনো দল গঠন করিবার বা অনুরূপ দলের সদস্য হইবার কিংবা অন্য কোনো অনুরূপ দলের কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করিবার অধিকারপ্রাপ্ত হইবেন না।
(১) এই অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত কোনো আদেশ পরবর্তী কোনো আদেশ দ্বারা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত বলবত্ থাকিবে।
৩৪ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতি সংক্রান্ত বিশেষ বিধানে বলা হয় : সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও এই আইন প্রবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে, (ক) এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তিনি রাষ্ট্রপতির পদে থাকিবেন না এবং রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে।
(খ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হইবেন এবং রাষ্ট্রপতির কার্যভার গ্রহণ করিবেন এবং উক্ত প্রবর্তন হইতে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে বহাল থাকিবেন, যেন তিনি এই আইনের দ্বারা সংশোধিত বিধানের অধীনে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হইয়াছেন। (দৈনিক ইত্তেফাক : ২৬ জানুয়ারি রোববার ১৯৭৫)
এদিকে ১৯৭৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাকশাল গঠন সংক্রান্ত আদেশটি পরদিন অর্থাৎ ২৫ ফেব্রুয়ারির দৈনিক ইত্তেফাকে হুবহু প্রকাশ করে। ইত্তেফাকে প্রকাশিত বাকশাল গঠন সংক্রান্ত আদেশটি তুলে ধরা হলো :
১নং আদেশ
প্রেসিডেন্ট গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে বর্ণিত জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র—এই মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতিসমূহের পূর্ণতাদানের উদ্দেশ্যে দেশে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের নির্দেশ দানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করিয়াছেন। অতএব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৭-ক অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রেসিডেন্ট দেশে এখন হইতে একটি মাত্র রাজনৈতিক দল থাকিবে বলিয়া নির্দেশ দান করিতেছেন।
২নং আদেশ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৭-ক অনুচ্ছেদের (২) ও (৩) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রেসিডেন্ট নিজেকে চেয়ারম্যান করিয়া বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ নামে একটি জাতীয় দল গঠন করিয়াছেন। ইহার সংঘটনের জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় ব্যবস্থা তিনিই গ্রহণ করিবেন এবং ইহার পরিচালনার যাবতীয় ক্ষমতা তাঁহার থাকিবে।
৩নং আদেশ
রাষ্ট্রপতি অন্য কোনো নির্দেশ দান না করিলে জাতীয় সংসদের অবলুপ্ত আওয়ামী লীগ দলীয় সকল সদস্য, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রিগণ বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের সদস্য বলিয়া গণ্য হইবেন। প্রেসিডেন্ট দলীয় সংগঠন নির্ধারণ না করা পর্যন্ত—অবলুপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যতীত অন্যান্য সকল কমিটি অন্তরবর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশে কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কমিটি রূপে কাজ চালাইয়া যাইবে। (দৈনিক ইত্তেফাক : ২৫ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার, ১৯৭৫)
চতুর্থ সংশোধনী বিষয়ে আরও কয়েকটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হলো :
রাষ্ট্রপতি হিসাবে বঙ্গবন্ধুর শপথ গ্রহণ
প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার কায়েম
(ইত্তেফাক রিপোর্ট)
সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের পরিবর্তে দেশে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার কায়েম করা হইয়াছে। গতকাল (শনিবার) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করিয়াছেন। দেশের সর্বময় ক্ষমতা বঙ্গবন্ধুর হাতে ন্যস্ত থাকিবে। অতঃপর দেশে একটি মাত্র রাজনৈতিক দল থাকিবে। জাতীয় সংসদের কোনো সদস্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রস্তাবিত রাজনৈতিক দলের সদস্য তালিকাভুক্ত না হইলে তাঁহার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হইয়া যাইবে। দেশের নির্বাহী কর্তৃত্ব রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকিবে এবং সংবিধান অনুযায়ী তিনি তাহা প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে তাঁহার অধীনস্থ কর্মচারীদের মাধ্যমে পালন করিবেন। রাষ্ট্র পরিচালনায় রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শদানের জন্য একটি মন্ত্রিপরিষদ থাকিবে। রাষ্ট্রপতি একজন উপ-রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত করিবেন। আজ নয়া মন্ত্রিপরিষদ শপথ গ্রহণ করিবে। চতুর্থ সংবিধান সংশোধনী বিল ২৯৪ ভোটে গৃহীত হয়। এই বিলের বিরোধিতা করে ৩ জন বিরোধী, ১ জন স্বতন্ত্র সদস্য ‘ওয়াক আউট’ করেন। জনাব আতাউর রহমান খান পূর্বাহেপ্ত সংসদ কক্ষ ত্যাগ করেন।
প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি পাঁচ বত্সরের জন্য প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হইবেন। সংবিধান লঙ্ঘন ও গুরুতর অসদাচরণের দায়ে রাষ্ট্রপতিকে অভিযুক্ত করার ব্যবস্থা রাখা হইয়াছে। সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের স্বাক্ষরিত প্রস্তাবে এই অভিযোগ আনা যাইবে। রাষ্ট্রপতি পূর্বাহেপ্ত ভাঙ্গিয়া না দিলে বর্তমান সংসদের আয়ুকাল হইবে পাঁচ বছর। রাষ্ট্রপতি পরবর্তীকালে এক আদেশবলে দেশের সকল রাজনৈতিক দলের বিলুপ্তি ঘোষণা করিতে পারিবেন। জাতীয় দলের নামকরণ, কার্যসূচি, সদস্যভুক্তি, সংগঠন, শৃঙ্খলা, অর্থসংস্থান এবং কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা নির্ধারিত হইবে। সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী বিল পাশের অব্যবহিত পরেই জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। জাতীয় সংসদ ভবনে আয়োজিত এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে স্পীকার জনাব আবদুল মালেক উকিল বঙ্গবন্ধুকে শপথ গ্রহণ করান। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যবৃন্দ, সাবেক মন্ত্রিসভার সদস্যগণ ও কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। বিলের উপর বক্তব্য রাখার সুযোগ না দেওয়ায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের ৩ জন সদস্য জনাব আবদুল্লাহ সরকার, জনাব আবদুস সাত্তার ও জনাব মইনুদ্দিন আহমেদ মানিক এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মি. মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ‘ওয়াক আউট’ করেন। বিলে বলা হয় : ‘এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে যিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন, তিনি রাষ্ট্রপতির পদে থাকিবেন না এবং রাষ্ট্রপতির পদ শূন্য হইবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হইবেন এবং রাষ্ট্রপতির কার্যভার গ্রহণ করিবেন এবং উক্ত প্রবর্তন হইতে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদে বহাল থাকিবেন যেন তিনি এই আইনের দ্বারা সংশোধিত সংবিধানের অধীনে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হইয়াছেন।… (ইত্তেফাক : ২৬ জানুয়ারি, রোববার, ১৯৭৫)
অন্যান্য দলের অবলুপ্তি
(ইত্তেফাক রিপোর্ট)
গতকাল (সোমবার) প্রেসিডেন্টের আদেশ অনুযায়ী ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ফলে দেশে একদলীয় রাজনীতি প্রবর্তিত হইল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিলুপ্তি ঘটিল। গত ২৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে গৃহীত সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী অনুয়ায়ী প্রেসিডেন্ট দেশে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করিলে অন্যান্য রাজনৈতিক দল স্বাভাবিকভাবে ভাঙ্গিয়া যাইবে।
গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টায় একটি রাজনৈতিক দল গঠন সম্পর্কিত প্রেসিডেন্টের আদেশের সাথে সাথে দেশের ১৪টি রাজনৈতিক দলের বিলুপ্তি ঘটিল।
দলগুলি হইতেছে
(১) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,
(২) ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মোজাফফর),
(৩) বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি,
(৪) ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী),
(৫) জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল,
(৬) ইউনাইটেড পিপুলস্ পার্টি (ন্যাপ সুধারামী, লেনিনবাদী কমিউনিস্ট পার্টি মোজাফফর ন্যাপের বিদ্রোহী অংশ ও প্রগতিশীল কর্মিগণ),
(৭) জাতীয় গণমুক্তি ইউনিয়ন (বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি ও বামপন্থী কর্মিগণ),
(৮) বাংলাদেশ জাতীয় লীগ,
(৯) বাংলা জাতীয় লীগ,
(১০) বাংলাদেশ লেবার পার্টি,
(১১) জাতীয় গণতন্ত্রী দল,
(১২) বাংলাদেশ জাতীয় কংগ্রেস,
(১৩) মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি ও
(১৪) শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী।
(দৈনিক ইত্তেফাক : ২৫ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার ১৯৭৫)
উপরাষ্ট্রপতি-স্পীকার জাতীয় দলের সদস্য বিবেচিত হবেন
বাংলাদেশের উপরাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় সংসদের স্পীকার ও ডেপুটি স্পীকার বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের সদস্য বলে বিবেচিত হবেন। গতকাল ঢাকায় প্রকাশিত রাষ্ট্রপতির এক আদেশে একথা ঘোষণা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আর এক আদেশে বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্রপতির অপর কোনো নির্দেশ না থাকা পর্যন্ত অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং কমিটির সকল সদস্যও বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের বলে বিবেচিত হবেন।
সদর দফতর
রাষ্ট্রপতির আদেশে ঘোষণা করা হয় যে, অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের সদর দফতর হবে অধুনালুপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিস। গতকাল বাসসের খবরে এ কথা উল্লেখ করা হয়। (দৈনিক ইত্তেফাক : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৫)
জাতীয় দলের গঠনতন্ত্র কার্যনির্বাহী ও কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা
(ইত্তেফাক রিপোর্ট)
আজ (শনিবার) একক জাতীয় দল বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র, কার্যনিবাহী ও কেন্দ্রীয় কমিটি ও পাঁচটি ফ্রন্ট এবং উহার কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হইয়াছে। প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় দলের চেয়ারম্যান হিসাবে সংগঠনের সেক্রেটারী জেনারেল পদে প্রধানমন্ত্রী জনাব এম মনসুর আলীর নাম ঘোষণা করিয়াছেন। দলের তিনজন সেক্রেটারী হইলেন জনাব জিল্লুর রহমান, শেখ ফজলুল হক মণি ও জনাব আবদুর রাজ্জাক। ৫টি ফ্রণ্টের নাম হইল : জাতীয় কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় মহিলা লীগ, জাতীয় যুবলীগ ও জাতীয় ছাত্রলীগ। সেক্রেটারীগণ হইলেন : কৃষকলীগ মিঃ ফনী মজুমদার, শ্রমিক লীগ অধ্যাপক ইউসুফ আলী, মহিলা লীগ বেগম সাজেদা চৌধুরী, যুবলীগ জনাব তোফায়েল আহমদ, ছাত্রলীগ শেখ শহীদুল ইসলাম। কার্যনির্বাহী কমিটিতে ১৫ জন সদস্য রহিয়াছেন। বঙ্গবন্ধু এই কমিটির চেয়ারম্যান। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা হইল ১১৫ জন। জাতীয় দলের সংবিধানে বলা হয় যে, জাতীয় দল জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাসহ অন্যান্য নীতিসমূহ ও উদ্দেশ্যাবলী জনগণের ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগত উদ্যম সৃষ্টির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক পন্থায় বাস্তবে রূপান্তরিত করিতে অবিচল নিষ্ঠা, সততা, শৃঙ্খলা ও দৃঢ়তার সহিত সর্বতোভাবে আত্মনিয়োগ করিবে।
গঠনতন্ত্রে বলা হয় যে, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের প্রতীক হইবে নৌকা এবং দলের পতাকা হইবে দুই-তৃতীয়াংশ সবুজ ও এক-তৃতীয়াংশ লাল। সবুজের উপর চারটি লাল বর্ণের তারকা খচিত থাকিবে। কার্যনির্বাহী কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি, দলীয় কাউন্সিল, জেলা কমিটি, জেলা কাউন্সিল, থানা ও আঞ্চলিক কমিটি এবং ইউনিয়ন ও প্রাথমিক কমিটি—এই ৭টি সাংগঠনিক কমিটি সমবায়ে জাতীয় দল গঠিত হইবে। দলের সর্বোচ্চ নির্বাহী ক্ষমতা কার্যনিবাহী কমিটির উপর ন্যস্ত থাকিবে। জাতীয় দলের ৫টি অঙ্গসংগঠন থাকিবে এবং অঙ্গসংগঠনগুলি কার্যনির্বাহী কমিটির প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীনে কার্য সম্পন্ন করিবে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক আদেশবলে ‘বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ’ নামে একটি জাতীয় দল রাজনৈতিক দল গঠন করেন। প্রেসিডেন্ট অন্য কোনো নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জাতীয় সংসদে অবলুপ্ত আওয়ামী লীগের সকল সদস্য, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীগণ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের সদস্য বলিয়া গণ্য হন। প্রেসিডেন্ট দলীয় সংগঠন নির্ধারণ না করা পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসাবে অবলুপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কমিটি রূপে কাজ চালাইয়া যায়। (দৈনিক ইত্তেফাক : ৭ জুন ১৯৭৫)
কার্যনির্বাহী ও কেন্দ্রীয় কমিটি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১১৭-ক অনুচ্ছেদের (৩) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে রাষ্ট্রপতি সিদ্ধান্ত লইয়াছেন যে জাতীয় দল বাংলাদেশে কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের একটি কার্য নির্বাহী কমিটি ও একটি কেন্দ্রীয় কমিটি থাকিবে। রাষ্ট্রপতি নিম্ন বর্ণিত ব্যক্তিগণকে এই কমিটিদ্বয়ের সদস্য মনোনীত করিয়াছেন।
কার্যনির্বাহী কমিটি
(১) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান—চেয়ারম্যান
(২) জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম
(৩) জনাব এম মনসুর আলী
(৪) জনাব খন্দকার মোশতাক আহমদ
(৫) জনাব আবুল হাসানাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান
(৬) জনাব আবদুল মালেক উকিল
(৭) অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী,
(৮) শ্রী মনোরঞ্জন ধর
(৯) ড. মোজাফফর আহমদ চৌধুরী,
(১০) জনাব শেখ আবদুল আজিজ,
(১১) জনাব মহীউদ্দিন আহমদ,
(১২) জনাব গাজী গোলাম মোস্তফা,
(১৩) জনাব জিল্লুর রহমান—সেক্রেটারি,
(১৪) জনাব শেখ ফজলুল হক মণি—সেক্রেটারি,
(১৫) জনাব আবদুর রাজ্জাক— সেক্রেটারি।
কেন্দ্রীয় কমিটি
(১) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি—চেয়ারম্যান,
(২) জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম, উপরাষ্ট্রপতি,
(৩) জনাব এম মনসুর আলী, প্রধানমন্ত্রী—সেক্রেটারী জেনারেল,
(৪) জনাব আবদুল মালেক উকিল, স্পীকার,
(৫) জনাব খন্দকার মোশতাক আহমদ, বাণিজ্য ও বহির্বাণিজ্যমন্ত্রী,
(৬) জনাব আবুল হাসানাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, শিল্পমন্ত্রী,
(৭) জনাব মুহম্মদ উল্লাহ, ভূমি রাজস্ব ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী,
(৮) জনাব আবদুস সামাদ আজাদ কৃষিমন্ত্রী,
(৯) অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ আলী শ্রম, সমাজকল্যাণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী,
(১০) শ্রী ফণী মজুমদার, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী,
(১১) ড. কামাল হোসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী,
(১২) জনাব মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, গণপূর্ত ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী,
(১৩) জনাব আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী,
(১৪) জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবত, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ বিদ্যুত্ ও বন, মৎস্য ও পশুপালন মন্ত্রী
(১৫) শ্রী মনোরঞ্জন ধর, আইন, সংসদ বিষয়াবলী ও বিচারমন্ত্রী,
(১৬) জনাব আব্দুল মমিন, খাদ্য, বেসামরিক সরবরাহ এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী,
(১৭) জনাব আসাদুজ্জামান খান, পাটমন্ত্রী
(১৮) জনাব এম কোরবান আলী, তথ্য বেতারমন্ত্রী,
(১৯) ড. আজিজুর রহমান মল্লিক, অর্থমন্ত্রী,
(২০) ড. মোজাফফর আহমদ চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী,
(২১) জনাব তোফায়েল আহমেদ, রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী,
(২২) জনাব শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন চীফ হুইপ,
(২৩) জনাব আবদুল মমিন তালুকদার, সমবায় প্রতিমন্ত্রী,
(২৪) জনাব দেওয়ান ফরিদ গাজী, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী,
(২৫) অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী,
(২৬) জনাব তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, তথ্য ও বেতার প্রতিমন্ত্রী,
(২৭) জনাব মোসলেমউদ্দিন খান, পাট প্রতিমন্ত্রী,
(২৮) জনাব মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম মঞ্জুর, যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী,
(২৯) জনাব কে এম ওবায়দুর রহমান ডাক, তার ও টেলিফোন প্রতিমন্ত্রী,
(৩০) ডা. ক্ষিতীশচন্দ্র মণ্ডল, ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রতিমন্ত্রী,
(৩১) জনাব রেয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বন, মৎস্য ও পশুপালন প্রতিমন্ত্রী,
(৩২) জনাব এম বায়তুল্লাহ ডেপুটি স্পীকার,
(৩৩) জনাব রুহুল কুদ্দুস রাষ্ট্রপতির প্রধান সচিব,
(৩৪) জনাব জিল্লুর রহমান এমপি, সেক্রেটারী,
(৩৫) জনাব মহিউদ্দিন আহমদ এমপি,
(৩৬) জনাব শেখ ফজলুল হক মণি—সেক্রেটারী,
(৩৭) জনাব আব্দুর রাজ্জাক এমপি—সেক্রেটারী,
(৩৯) জনাব আনোয়ার চৌধুরী,
(৪০) বেগম সাজেদা চৌধুরী এমপি,
(৪১) বেগম তসলিমা আবেদ এমপি,
(৪২) জনাব আবদুর রহিম—দিনাজপুর,
(৪৩) জনাব আব্দুল আওয়াল এমপি—রংপুর,
(৪৪) জনাব লুত্ফর রহমান এমপি— রংপুর,
(৪৫) জনাব এ কে মুজিবুর রহমান এমপি, বগুড়া,
(৪৬) ড. মফিজ চৌধুরী এমপি, বগুড়া,
(৪৭) ডা. আলাউদ্দিন এমপি, রাজশাহী,
(৪৮) ডা. আসহাবুল হক এমপি, কুষ্টিয়া,
(৫০) জনাব রওশন আলী এমপি যশোহর,
(৫১) জনাব শেখ আবদুল আজিজ এমপি খুলনা,
(৫২) জনাব সালাহ উদ্দিন ইউসুফ এমপি, খুলনা,
(৫৩) মি. মাইকেল সুশীল অধিকারী, খুলনা,
(৫৪) জনাব কাজী আবুল কাশেম এমপি, পটুয়াখালী,
(৫৫) জনাব মোল্লা জালালউদ্দিন আহমদ এমপি, ফরিদপুর,
(৫৬) জনাব শামসুদ্দিন মোল্লা এমপি, ফরিদপুর,
(৫৭) শ্রী গৌরচন্দ্র বালা ফরিদপুর,
(৫৮) জনাব গাজী গোলাম মোস্তফা এমপি, ঢাকা নগর,
(৫৯) জনাব শামসুল হক এমপি, ঢাকা,
(৬০) জনাব সামসুদ্দোহা এমপি, ঢাকা,
(৬১) রফিক উদ্দিন ভূইয়া এমপি, ময়মনসিংহ,
(৬২) সৈয়দ আহমদ, ময়মনসিংহ,
(৬৩) শামসুর রহমান খান এমপি, টাঙ্গাইল,
(৬৪) নুরুল হক এমপি, নোয়াখালী,
(৬৫) কাজী জহিরুল কাইউম এমপি, কুমিল্লা,
(৬৬) ক্যাপ্টেন সুজাত আলী এমপি, কুমিল্লা,
(৬৭) এম আর সিদ্দিকী এমপি, চট্টগ্রাম,
(৬৮) এম এ ওয়াহাব এমপি, চট্টগ্রাম,
(৬৯) শ্রী চিত্তরঞ্জন সূতার এমপি,
(৭০) সৈয়দা রাজিয়া বানু এমপি,
(৭১) আতাউর রহমান খান এমপি,
(৭২) খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস,
(৭৩) শ্রী মং প্রু সাইন, মানিকছড়ির রাজা,
(৭৪) অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ,
(৭৫) আতাউর রহমান,
(৭৬) পীর হাবিবুর রহমান,
(৭৭) সৈয়দ আলতাফ হোসেন,
(৭৮) মোহাম্মদ ফরহাদ,
(৭৯) বেগম মতিয়া চৌধুরী,
(৮০) হাজী মোহাম্মদ দানেশ,
(৮১) তৌফিক ইমাম, সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ,
(৮২) নুরুল ইসলাম সচিব,
(৮৩) ফয়েজউদ্দিন আহমদ সচিব,
(৮৪) মাহবুবুর রহমান, সচিব, সংস্থাপন বিভাগ,
(৮৫) আবদুল খালেক, উপরাষ্ট্রপতির সচিব,
(৮৬) মুজিবুল হক, সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়,
(৮৭) আব্দুর রহিম, রাষ্ট্রপতির সচিব,
(৮৮) মইনুল ইসলাম সচিব পূর্ত গৃহনির্মাণ ও শহর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়,
(৮৯) সৈয়দুজ্জামান, সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়,
(৯০) আনিসুজ্জামান সচিব,
(৯১) ড. এ সাত্তার, রাষ্ট্রপতির সচিব,
(৯২) এম এ সামাদ, সচিব, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়,
(৯৩) আবু তাহের, সচিব, ভূমি প্রশাসন ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রণালয়,
(৯৪) আল হোসায়নী, সচিব, বিদ্যুত্ শক্তি মন্ত্রণালয়,
(৯৫) ডা. তাজুল হোসেন, সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়,
(৯৬) মতিউর রহমান, চেয়ারম্যান, টিসিবি,
(৯৭) মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান,
(৯৮) এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খোন্দকার, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান,
(৯৯) কমোডর এম এই খান, বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান,
(১০০) মেজর জেনারেল খলিলুর রহমান, মহা পরিচালক বিডিআর,
(১০১) এ কে নাজির উদ্দিন আহমদ, গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক,
(১০২) ড. আবদুল মতিন চৌধুরী, উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
(১০৩) ড. মাযহারুল ইসলাম, উপাচার্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়,
(১০৪) ড. মুহম্মদ এনামুল হক, উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়,
(১০৫) এটিএম সৈয়দ হোসেন অতিরিক্ত সচিব,
(১০৬) নুরুল ইসলাম, আইজিপি, পুলিশ,
(১০৭) ড. নীলিমা ইব্রাহীম,
(১০৮) ড. নুরুল ইসলাম, পরিচালক, পিজি হাসপাতাল,
(১০৯) ওবায়দুল হক, সম্পাদক, বাংলাদেশ অবজারভার
(১১০) আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সম্পাদক, ইত্তেফাক,
(১১১) মিজানুর রহমান, প্রাক্তন প্রধান সম্পাদক, বিপিআই,
(১১২) আনোয়ারুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব রাষ্ট্রপতির সচিবালয়,
(১১৩) ব্রিগেডিয়ার এ এন এম নুরুজ্জামান, পরিচালক, জাতীয় রক্ষী বাহিনী,
(১১৪) কামারুজ্জামান, সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি,
(১১৫) ডা. মাজহার আলী কাদরী, বাংলাদেশ চিকিত্সক সমিতির সভাপতি।
(দৈনিক ইত্তেফাক : ৭ জুন, ১৯৭৫)