:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
রাজধানীর কেরানীগঞ্জের জিনজিরায় ঢাকা জেলা বিএনপির সমাবেশে হামলা করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী আহত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৪৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জিনজিরা বাস রোডে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আহত নেতাকর্মীদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এদিকে খাগড়াছড়িতে সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের গাড়িবহরে হামলা করেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খাগড়াছড়ি কলেজ সড়কে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আফছার দুপুরে বলেন, পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে খাগড়াছড়ি আসছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান। তাঁর গাড়িবহর শহরে আসার পথে নারকেলবাগান এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেন। এ সময় আবদুল্লাহ আল নোমানের গাড়িতেও হামলা চালানো হয়।
চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ ঢাকা মহানগর দক্ষিণসহ দেশের ৯ বিভাগের ১৮ জেলা ও মহানগরে জনসমাবেশ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে জিনজিরায় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ আয়োজন করা হয়।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক এতে সভাপতিত্বে আজ সকাল ১০টায় এ সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা ছিল। সংঘর্ষের পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্বনির্ধারিত স্থানে সমাবেশ শুরু হয়। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা পৌনে ১১টার দিকে যুবদলের একটি মিছিল জিনজিরা ছাটগাঁও এলাকা থেকে বিএনপির সমাবেশস্থলে যাচ্ছিল। এ মিছিলটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এলে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এর মধ্যে বিএনপি নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালান।
নিপুণ রায় চৌধুরী একটি মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে যাওয়ার পথে আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে তাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
আওয়ামী লীগের অভিযোগ, হামলার উদ্দেশে নিপুণ রায় চৌধুরী পরিকল্পিতভাবে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। এ সময় কার্যালয়ে থাকা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা প্রতিহত করেছে। এ ঘটনায় জিনজিরার প্রবীণ নেতা আজহার বাঙ্গালী, কোন্ডা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি আল আমিন মাহমুদসহ ১০-১৫ আহত হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন দলটির নেতারা।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপির কিছু অতি উৎসাহী নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা করেন। এর আগে সংঘর্ষে ও ইটের আঘাতে দুই পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
খাগড়াছড়ি বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এন আফছার বলেন, হামলায় আবদুল্লাহ আল নোমান রক্ষা পেলেও জেলা বিএনপির সহসভাপতি ক্ষেত্র মোহন রোয়াজা, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল হাসান, মানিকছড়ি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক স্কুল বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ সোহেল রানা, পৌর ছাত্রদল নেতা ইফতি আহম্মেদ আহত হন। তারা স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দেশব্যাপী সন্ত্রাস-নৈরাজ্যের প্রতিবাদে পূর্বনির্ধারিত শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। এ সময় বিএনপির গাড়িবহর থেকে কার্যালয়ের দিকে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। পরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের চারজন আহত হয়েছেন।