:: ক্রীড়া প্রতিবেদক ::
নারী বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে স্পেন ১-০ গোলে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন স্পেনের অধিনায়ক ওলগা কারমোনা ২৯ মিনিটে।
লিড নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা স্পেন ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। ইংল্যান্ডও পারেনি ম্যাচে ফিরতে। প্রথম ফাইনালে উঠে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপে রানার্সআপ হয়েই তৃপ্ত থাকতে হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের পর জাপান বিদায় নেওয়ায় নির্ধারিত হয়ে যায় নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে নারী বিশ্বকাপ ফুটবল। যুক্তরাষ্ট্র, নরওয়ে, জার্মানি ও জাপানের পর শেষ পর্যন্ত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নাম লেখালো স্পেন।
স্পেনের বিশ্বকাপে অভিষেক হয়েছিল ২০১৫ সালে কানাডায়। প্রথমবার বাদ পড়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকেই। ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত পরের আসরে গ্রুপপর্ব টপকে নকআউট পর্বে উঠে তারা পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামনে। সেখান থেকেই বিদায় নিয়েছিল স্পেনের মেয়েরা। সেই স্পেন নিজেদের তৃতীয় অংশগ্রহণে করলো বিশ্বকাপ বাজিমাত।
প্রথমবার ফাইনালে উঠার অভিজ্ঞতা এবারই হয়েছে ইংল্যান্ডেরও। কিন্তু আত্মবিশ্বাসী স্পেনের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি তারা। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায় স্পেনের মেয়েরা। তবে প্রথম সুযোগ আসে ইংল্যান্ডের সামনে। ১৫ তম মিনিটে লরেন হ্যাম্পের শট বারে লেগে ফিরে আসে।
তবে এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় স্পেনের দখলে। ১৮ তম মিনিটে আসে প্রথম সুযোগ। কিন্তু পারাল্লুয়েলার শট ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক মার্টি ইয়ার্পস। এরপর ২৯তম মিনিটে জালের খোঁজ পেয়ে যায় স্পেন। দারুণ দক্ষতায় বল জালে জড়িয়ে স্পেনকে এগিয়ে দেন ওলগা কারমোনা।
এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও পারেনি ইংল্যান্ড। উল্টো বিরতির ঠিক আগে দারুণ একটি শট গোলবারে লাগলে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হারায় স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধেও স্পেনের আক্রমণাত্মক ফুটবলের জবাব দিতে পারেনি ইংলিশরা। কয়েকবার চেষ্টা করলেও স্পেনের জমাট রক্ষণ ভাঙতে পারেনি তারা।
তবে ইংল্যান্ডের গোলকিপার মেরি ইয়ারপস একবার পরাস্ত হলেও স্পেনের আক্রমণভাগের সামনে বাকি সময় দেয়াল হয়ে ছিলেন। এর মধ্যে একবার পেনাল্টি শটও ঠেকিয়ে দেন তিনি। বার্সেলোনার মিডফিল্ডার কেইরা ওয়ালশের হ্যান্ডবলের কারণে ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর স্পেনের জেনি হেরমোসো নেওয়া শট ব্যর্থ হয় ইংল্যান্ডের গোলকিপারের হাতে। কিন্তু বাকিদের কারণে তার সব প্রচেষ্টা বৃথা যায়।
নির্ধারিত সময়ের পর যোগ হয়েছিল আরও ১৩ মিনিট। কিন্তু তাতেও ভাগ্য খোলেনি ইংল্যান্ডের। উল্টো পাল্টা আক্রমণে ইংলিশদের রক্ষণভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্পেন। হতাশায় যোগ করা সময়ের ১৪তম মিনিটে রেফারি শেষ বাঁশি বাজাতেই হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে তখন উদযাপনে মেতে উঠে স্পেন দল।
২০ জুলাই নিউজিল্যান্ডের ইডেনপার্কে নরওয়ের বিপক্ষে স্বাগতিকদের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়িয়েছিল এবারের নারী বিশ্বকাপ ফুটবল। দীর্ঘ এক মাস ফুটবলামোদীরা মেতে ছিল নারী বিশ্বকাপ নিয়ে। নিউজিল্যান্ড থেকে যাত্র শুরু করা বিশ্বকাপের পর্দা নামলো অস্ট্রেলিয়ায়।
২০১০ বিশ্বকাপে প্রথমবার ফাইনালে খেলেই স্প্যানিশদের সোনালি শিরোপার অপেক্ষা ঘুচিয়েছিলেন জাভি-ইনিয়েস্তেরা। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে দেশটি যে চারবার ফাইনাল খেলেছে তাতেও তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এমনকি উয়েফা নেশনস লিগে টানা দুবার খেলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তারা।