:: নাগরিক প্রতিবেদন ::
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া নিয়ে ঢাকায় আঘাত হানে বছরের প্রথম কালবৈশাখী। সন্ধ্যায় প্রায় ১২ মিনিট ধরে চলা ওই ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিও ঝরেছে। সারা দিন দাবদাহের পর ওই বৃষ্টি জনজীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি এনেছে।
তবে বাতাসের গতি বেশি থাকায় রাজধানীর ফার্মগেট, উত্তরা ও মিরপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সড়ক বিভাজক ও ফুটপাতের গাছ ভেঙে পড়েছে। অনেক জায়গায় রাস্তার পাশে নির্মাণকাজের টিনও বাতাসের ধাক্কায় সরে গেছে। ঝোড়ো হাওয়ার মধ্যে রাস্তায় থাকা লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে দেখা যায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ছিল সবচেয়ে বেশি, ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার। বছরের এই সময়ে কোনো এলাকায় ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বাতাস বয়ে গেলে সেখানে কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে বলে ধরা হয়। সাধারণত এপ্রিল মাসের শুরু থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী আঘাত হানা শুরু করে। কিন্তু এ বছর টানা দাবদাহ বয়ে গেলেও ঢাকায় কালবৈশাখীর আঘাত হানার ঘটনা এই প্রথম। এর আগে ঢাকাসহ দেশের আরও ৮-১০টি জেলায় ঝড় হলেও তার বাতাসের গতিবেগ এখনো নিশ্চিতভাবে জানতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বছরের এই সময়ে কোনো এলাকায় ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বাতাস বয়ে গেলে সেখানে কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে বলে ধরা হয়। সাধারণত এপ্রিল মাসের শুরু থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী আঘাত হানা শুরু করে। কিন্তু এ বছর টানা দাবদাহ বয়ে গেলেও ঢাকায় কালবৈশাখীর আঘাত হানার ঘটনা এই প্রথম। এর আগে ঢাকাসহ দেশের আরও ৮-১০টি জেলায় ঝড় হলেও তার বাতাসের গতিবেগ এখনো নিশ্চিতভাবে জানতে পারেনি আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, দিনে একটানা দীর্ঘ সময় বেশি তাপমাত্রা থাকলে এবং বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলে বিকেলে কালবৈশাখীর জন্য অনুকূল আবহাওয়া তৈরি হয়। আজ এ কারণেই কালবৈশাখী আঘাত হানল। আগামীকাল শুক্রবারও ঢাকাসহ দেশের চার বিভাগের দু-এক জায়গায় কালবৈশাখী আঘাত হানতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম জানান, আগামীকাল শুক্রবার অনেক এলাকায় তাপপ্রবাহ থাকবে না, কিছু কিছু এলাকায় হয়তো থাকতে পারে। অধিকাংশ জায়গা থেকে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে। দিনে বেশ গরম অনুভূত হলেও শুক্রবার সন্ধ্যায় কিছু কিছু এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
তবে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর তপ্ত অবস্থা দেখে বিকেলে যে এমন ঝোড়ো হাওয়া আসবে, তা আন্দাজ করা কঠিন ছিল। বিকেল চারটা পর্যন্ত রাজধানীতে গরম ছিল। বেলা তিনটায় রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৩৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আকাশে মেঘ না থাকায় আর বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় রাজধানীজুড়ে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হয়েছিল। সেখানে বিকেল পাঁচটা থেকে আবহাওয়া একদম বদলে যেতে শুরু করে। এরপর মেঘের গর্জনের সঙ্গে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি।
আজ দেশের বেশির ভাগ এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়। দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা উঠেছিল বান্দরবানে ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বাইরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগেও দাবদাহের তাপমাত্রা, অর্থাৎ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা ছিল।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে রাজধানীর ওপর দিয়ে ঝড়সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন।
এ ছাড়া রাত ৮টার মধ্যে বা অপরিবর্তী সময়ে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বেশিরভাগ জেলার ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড়, তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি অতিক্রম করতে পারে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ’আজকের এই ঝড়ের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা জেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এই তিনটি জেলায় তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে, বেলা ৩টার পর থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে এসব জেলার মানুষ তীব্র বজ্রপাতের ঝুঁকির মধ্যে থাকবে।’