:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে এমপি পদ থেকে অযোগ্য ঘোষণার পর সরকারি বাসভবন ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার লোকসভা হাউসিং কমিটি রাহুল গান্ধীকে সরকারি বাসভবন ছাড়ার এ নোটিশ দেয়।
রাহুল গান্ধীকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে সরকারি বাসভবন ছাড়তে বলা হয়েছে।
ভারতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে এমপি পদ থেকে অযোগ্য ঘোষণার প্রতিবাদে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করছে তার সমর্থকরা। সোমবার পার্লামেন্টের ভেতরও বিক্ষোভ হয়েছে। এতে পার্লামেন্টের অধিবেশন স্থগিত করা হয়।
গত শুক্রবার রাহুলকে অযোগ্য ঘোষণার পর অনেকেই সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার প্রথম অধিবেশনে কালো পোশাক পরেছিলেন।
অধিবেশনের আগে কংগ্রেস এমপি প্রমোদ তিওয়ারি ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ভিন্নমতকে দমিয়ে রাখার জন্য অভিযোগ তোলেন। তিওয়ারি বলেন, ‘যখন আমরা সংসদে কথা বলি, তারা তখন কার্যক্রম চালাতে দেয় না। আমরা যখন বাইরে কথা বলি, তারা দলের নেতাদের অযোগ্য ঘোষণা করে দেয়।’
ভারতের পার্লামেন্টে অযোগ্য ঘোষণা করার পর শুক্রবার এর প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘আমি ভারতের মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে এসেছি। এ জন্য আমি যেকোনো মূল্য দিতে প্রস্তুত।’
মানহানির মামলায় ২ বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার এক দিনের মাথায় লোকসভায় অযোগ্য ঘোষণা করা হয় রাহুল গান্ধীকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে মানহানির মামলায় বৃহস্পতিবার গুজরাটের সুরাটের একটি আদালতে ৫২ বছর বয়সী রাহুল দোষী সাব্যস্ত হন। তাকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। তবে আদালত রাহুলকে ৩০ দিনের জামিন এবং আপিল করার সুযোগ দেন। এরপর শুক্রবার দুপুরে রাহুলকে অযোগ্য ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে লোকসভা সচিবালয়।
২০১৪ সালে উত্তর প্রদেশ রাজ্যের আমেথি আসন থেকে লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর রাহুল গান্ধী নয়াদিল্লিতে ১২, তুঘলক লেনে সরকারি বাংলোটিতে থেকে আসছেন।
রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি হয়েছিল ২০১৯ সালে। ওই সময় লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘চৌকিদার চোর’। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘সব মোদিরা কেন চোর হয়। সব চোরের পদবি কীভাবে “মোদি” হয়।’
নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে এমন মন্তব্যের পর রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন বিজেপির বিধায়ক ও গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি। সাজা পাওয়ার পর রাহুলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০১৩ সালে এক মামলার রায়ে বলেছিলেন, কোনো মামলায় কোনো সংসদ সদস্য, বিধায়ক বা বিধান পরিষদের সদস্যের দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সদস্যপদ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ হয়ে যাবে।
অন্যদিকে ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১-এর ৮(৩) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো সংসদ সদস্য কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন আর কমপক্ষে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হন, তাহলে তাঁর পদ খারিজ হবে।