:: চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ::
অবৈধভাবে পাহাড়কাটা এবং কালির ছড়া খাল ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ পরিদর্শনে যাওয়া বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে অবরুদ্ধ করে রাখা ও তার গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলরের লোকজন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে কাউন্সিলর জহুরুল আলম এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ থানা এলাকার ৯নং উত্তর পাহাড়তলীর সুপারি বাগান এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বেলার কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এর আগে রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি আটকে রাখা হয় এবং পুলিশ এসে গাড়িটি ছাড়িয়ে নেয়।
পরিদর্শনের সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে থাকা কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, অভিযুক্ত তরুণরা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমের অনুসারী। তারা বারবার পরিদর্শনকারীদের কেন এসেছেন, কোথা থেকে এসেছেন বলে প্রশ্ন করে। তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক পরিদর্শনকারীদের গাড়িটি লেকসিটি আবাসিকের অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে গাড়িটি ছাড়া হবে না বলে হুমকি প্রদর্শন করে। তাদের আক্রমণের প্রস্তুতি দেখে রিজওয়ানা হাসানসহ পরিদর্শনকারীরা পাহাড়ের নিচে না নেমে পথ পরিবর্তন করে বায়েজিদ লিংক রোডে (সুপারি বাগান, গাউছিয়া হোটেলের সামনে ৫নং ব্রিজের সন্নিকটে) অবস্থান নেন। পরে পুলিশ এসে লেকসিটি প্রধান গেটের সামনে থেকে চালককে গাড়িসহ উদ্ধার করে লিংক রোডে পাঠায়। লিংক রোডে পরিদর্শনকারীরা গাড়িতে ওঠার সময় ঢিল ছোড়া হয়।
বেলার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফিরোজুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘আমরা ছবি দেখে কয়েকজন তরুণকে চিহ্নিত করেছি। এদের মধ্যে মো. হৃদয়, আবু নোমান (কালা নোমান), সাইফুদ্দিন ভূঁইয়া, আনিস চৌধুরী রাজন, শাকিল, সাইদসহ আরও কয়েকজন ছিলেন। তারা সবাই কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিমের অনুসারী। তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম জানান, এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। পরিদর্শনকারী দলের সঙ্গে পুলিশ ছিল। পুলিশের সামনে কীভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটে! তা ছাড়া বিষয়টি নিয়ে তিনি পুলিশের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
পরিদর্শনের সময় রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে বেলার চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী মনিরা পারভিন, বেলার কর্মসূচি প্রধান ফিরোজুল ইসলাম, বেলা চট্টগ্রামের ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহী, সাংবাদিক ও বেলার নেটওয়ার্ক মেম্বার আলীউর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি কাজী আবুল মনসুর, প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক প্রণব বল, আলোকচিত্রী জুয়েল শীল, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম খান ও গাড়িচালক মোহাম্মদ আব্বাস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, অবৈধভাবে পাহাড়কাটা ও ছড়া খাল ভরাটসহ নানা অনিয়ম সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে আমিসহ পুরো টিমের ওপর একদল যুবক চড়াও হয়। তারা স্থানীয় কাউন্সিলের অনুসারী বলে আমরা জানতে পেরেছি। এ সময় কাউন্সিলরও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।