:: মাজহারুল ইসলাম রনি ::
আমার জীবনের প্রথম শিক্ষক ছিলেন ভীম স্যার, পুরো নাম ভীম চন্দ্র সাহা। ১৯৮৪ সালে আমার বয়স যখন মাত্র চার বছর তখন ভীম স্যারকে রাখা হয় আমাকে পড়ানোর জন্য। থাকতাম চাঁদপুর পুরানবাজারে। স্যার ঐ সময়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আমাকে পড়ানোটা স্যারের মূল উদ্দেশ্য ছিলোনা, মূল উদ্দেশ্য ছিলো আমার দুষ্টুমি নিয়ন্ত্রণ করা। আমি ছোট বেলায় চরম আকারের দুষ্টু ছিলাম। যদিও স্যার আমার সেই দুষ্টুমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে নাই বরং উল্টো আমার চরম দুষ্টুমির ঠেলায় স্যার নিজেই ক্লান্ত ও বিব্রত হয়ে পড়তেন।
প্রায় সময়ই বাহানা ধরতাম স্যারের কোলে বসে পড়বো! সেইজন্য স্যার আমাকে কোলে নিয়ে বসাতেন পড়ানোর জন্য। কিন্তু একটু পর দেখা যেতো ভীম স্যারের কোলে বসে ইচ্ছে করে হিসু করে দিতাম এতে করে নিজেও ভিজতাম স্যারকেও ভিজিয়ে দিতাম। একবার স্যারকে বলেছিলাম নারিকেলের সন্দেশ আনার জন্য স্যার আনতে ভুলে গিয়েছিলো। এরপর পানি খাওয়ার উদ্দেশ্য অন্য রুমে যাবার নাম করে পিছন দিক দিয়ে স্যারের পিঠে হিসু করে দিয়েছিলাম। কি পরিমান যে জ্বালিয়েছিলাম ভীম স্যারকে তা বলে শেষ করা যাবেনা। স্যার কখনো আমাকে মারতেন না, শুধু ধমক দিতেন। খুব বেশী রেগে গেলে আম্মাকে বলতেন আপা আমি পারতেছি না আপনি কিছু করেন। ভীম স্যার খুব ভালো মানুষ ছিলেন বলেই আমার এইসব চরম দুষ্টুমি সহ্য করেছিলেন। এখনও মাঝেমধ্যে যোগাযোগ হয় ভীম স্যারের সাথে।
চাঁদপুরে আরো যেসব স্যারের কাছে পড়েছিলাম:
হরেন্দ্র চন্দ্র সরকার স্যার (২০১৫ সালে ৯০ বছর বয়সে মারা গেছে), দিলীপ সাহা স্যার (এখন চাঁদপুরের সবচেয়ে সেরা গিটার বাধক এবং গিটারের শিক্ষক), সঞ্জয় স্যার ও দেলোয়ার স্যার (পুরানবাজার মধুসূদন হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন), মনোরঞ্জন সূত্রধর স্যার (আম্মার কলিগ ছিলেন পুরানবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক), দেলোয়ার স্যার ও নূর খান স্যার (হাসান আলী সরকারি হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন)।
হাজীগঞ্জে যেসব স্যারের কাছে পড়েছিলাম:
রামচন্দ্রপুর ভুইয়া একাডেমি ও বলিয়া হাই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক মান্নান স্যার (২০১৭ সালে মারা গেছে), হাজীগঞ্জ পাইলট হাই স্কুলের রফিক স্যার, মহিউদ্দিন স্যার Kazi Golam Mohiuddin(পরবর্তীতে ঢাকা মতিঝিল মডেল হাই স্কুলের শিক্ষক হিসেবে রিটায়ার্ড করেন), রত্নেশ্বর স্যার ও আউয়াল স্যার, জাকির স্যার(হাজীগঞ্জ পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন)।
হাজীগঞ্জ মডেল কলেজের পরিমল স্যার, মোশাররফ স্যার মোশাররফ জসিম, হারুন স্যার(ভুগোল বিভাগ)।
হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের মন্ডল স্যার, মোর্শেদ স্যার, বাশার স্যার।
উপরোক্ত সব স্যারের কাছে আমি বিভিন্ন সময়ে পড়েছিলাম এবং এইসব স্যাররা সবাই খুব ভালো মানুষ।
সব স্যারদের জন্য অনেক দোয়া ও শুভকামনা রইল।