:: সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি ::
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসূল এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন লিমিটেড’ নামে একটি অক্সিজেন প্লান্টে বিস্ফোরণে ঘটনায় ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে অন্তত ১৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার কদমরসুল এলাকায় ‘সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড’ নামের প্ল্যান্টে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ ও হতাহতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালান।
ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সুলতান মাহমুদ বলেন, এটি অনেক বড় ধরনের একটি বিস্ফোরণ।
সীতাকুণ্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদৎ হোসেন জানান, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে পুরো অক্সিজেন প্লান্টটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিস্ফোরণের পর আগুন লাগায় ধোঁয়া বহু দূর থেকে দেখা যাচ্ছে।
গত বছরের ৪ জুন এই অক্সিজেন প্লান্ট থেকে পৌনে এক কিলোমিটার দূরে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। ডিপোর কিছু কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত ৫০ জন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হন।
বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের দেয়াল ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে আধা কিলোমিটার এলাকায় বাড়িঘর ও অফিস-আদালত কেঁপে ওঠে। বিকট শব্দে অনেক স্থাপনার কাচ ভেঙে যায়। দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে।
আশু মিয়া নামে সোনাইছড়ির এক বাসিন্দা বলেন, বিকেলে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এরপর আগুন ধরে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে উদ্ধার কাজ চালান।
কামাল উদ্দিন নামে প্ল্যান্টের পাশের বাড়ির এক ব্যক্তি বলেন, বিস্ফোরণের পর টিন ও লোহার টুকরা উড়ে গিয়ে আশপাশে পড়েছে। এতে অনেকে আহত হন।
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধারকাজ শুরু করেন। এ সময় দুটি মরদেহ প্ল্যান্টের বাইরে পড়ে ছিল।
ঘটনাস্থলে দেখা যায়, আশপাশে টিনের টুকরা পড়ে রয়েছে। প্ল্যান্টটি দুমড়েমুচড়ে গেছে। চারটি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। এগুলোও দুমড়েমুচড়ে যায়।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম বলেন, অক্সিজেন রিফুয়েলিং করার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে।
রাতে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দুর্ঘটনাস্থলে অনেক সিলিন্ডার দেখেছি। অনেক সময় সিলিন্ডারগুলো পরীক্ষা করা হয় না। বিস্ফোরণের অনেক কারণ থাকতে পারে। তদন্তে তা বোঝা যাবে। তবে সিলিন্ডার থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে আমরা মনে করছি।’
ওই অক্সিজেন সিলিন্ডার প্ল্যান্টে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছিল কি না, জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, বিস্ফোরণের পর সেখানে যে অবস্থা হয়েছে, তাতে নিরাপত্তা পর্যাপ্ত ছিল কি না, তা বোঝার উপায় নেই।