:: নাগরিক প্রতিবেদক ::
রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ভবনটির মালিক সাবেক যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) তার জামিন বিষয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, সোহেল রানা দীর্ঘদিন কারাবাসে এই যুক্তিটি তুলে ধরেছিলাম। মামলার অন্যান্য আসামি জামিনে আছেন। আদালত জামিন প্রশ্নে রুল যথাযথ ঘোষণা করে জামিন দিয়েছেন। তার মুক্তিতে বাধা নেই।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মহিউদ্দিন দেওয়ান বলেন, আমরা জামিন স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করব।
এর আগে গত বছরের ১ মার্চ রানা প্লাজা ধস ও হতাহতের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় সোহেল রানাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে আজ সোহেল রানাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে পরে। ওই ঘটনায় ১ হাজার ১৩৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হয় আরও ২ হাজার শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ২ হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ওই ঘটনায় ভবন নির্মাণে অবহেলা ও ত্রুটিজনিত কারণে হত্যা মামলা দায়ের করেন সাভার থানার উপপরিদর্শক ওয়ালী আশরাফ। ওই মামলায় ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সোহেল রানাকে যশোরের বেনাপোল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১৫ সালের ২৬ এপ্রিল সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয়কৃষ্ণ কর ভবন মালিক সোহেল রানাসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ৫৯৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন—রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা, রানার বাবা আব্দুল খালেক, রানার মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ড কমিশনার হাজি মোহাম্মদ আলী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক (আর্কিটেকচার ডিসিপ্লিন) এ টি এম মাসুদ রেজা, প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসাইন, সাভার পৌরসভার মেয়র মো. রেফাতউল্লাহ, সাভার পৌরসভার সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান রাসেল, সাভার পৌরসভার সাবেক টাউন প্ল্যানার ফারজানা ইসলাম, লাইসেন্স পরিদর্শক মো. আব্দুল মোত্তালিব, পৌরসভার সাবেক সচিব মর্জিনা খান, সাবেক সচিব মো. আবুল বাশার, ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, নিউ ওয়েব বটমস লিমিটেডের এমডি বজলুস সামাদ ও ইথার টেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান। ২০১৬ সালের ১৮ জুলাই ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এ মামলার বিচার এখনো চলমান।