।। ফজলে এলাহী ।।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বা মূলধারার বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র আমার জীবনের বিশাল একটা সময় জুড়ে ছিল যার প্রতি ভালবাসাটা আজো অকৃত্রিম । বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র আমার কাছে কোন এক ব্যক্তি বিশেষের প্রতি ভালোবাসা বুঝায় নয় বরং বাংলাদেশের শিল্প সংস্কৃতির বিশাল একটি ভাণ্ডারকে ভালোবাসা, জানা ও বুঝাকে বুঝায়। এই চলচ্চিত্রের অনেক কিছু দেখেছি, অনেক তারকার উত্থান পতন দেখেছি যা আজো টাটকা স্মৃতি হয়ে আছে, থাকবে চিরদিন । আজ আপনাদের সেই স্মৃতির পৃষ্ঠা থেকে গত শতাব্দীর শেষ দশকের জমজমাট সময়ের কিছু কথা বলবো।
বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের সাথে আমার যখন পরিচয় তখন ছিল রাজ্জাক, আলমগীর, সোহেল রানা, ওয়াসিম, ফারুক, উজ্জ্বল, বুলবুল আহমেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, জাফর ইকবাল এর মতো সব বাঘা বাঘা স্টারদের দাপট। জসিম তখনও নায়ক হোননি কিন্তু খলনায়ক জসিমও তখন দারুন স্টার । এরকিছুদিন পর জসিম নায়ক হলেন তারওপরে রুবেল নামের এক তরুণ এলেন সবমিলিয়ে অস্থির অবস্থা । ৮০র দশক শেষ হয়ে ৯০ দশক এলো । প্রবীণ নায়কদের পাশাপাশি আমরা পেলাম ওমর সানী ও সালমান শাহ নামের দুই নায়ক। ফলে প্রবীণ আলমগীর, সোহেলরানা, জসিম কাঞ্চন, এর পাশাপাশি সিনিয়র রুবেল, মান্না আর নবীন ওমর সানী ও সালমান শাহ এই হলো বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের প্রতিযোগিতা । ১৯৯০ সালের দিকে সিনেমা হলে সপরিবার কেন্দ্রিক দর্শকদের পাশাপাশি স্কুল পড়ুয়া কিশোর, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শ্রেণীর একটি বিরাট দর্শক শ্রেণী গড়ে উঠলো । ফলে নির্মাতাদের মধ্যে তরুণ প্রজন্মের পছন্দের নায়কদের নিয়ে সিনেমা বানানো বেড়ে গেলো আর সাথে প্রবীণ নায়কদের চলচ্চিত্রগুলোর গল্পের মাঝেও এলো ব্যাপক পরিবর্তন অর্থাৎ পুরো ইন্ডাস্ট্রিতে একটা ভালো রকমের পরিবর্তনের সুবাতাস শুরু হলো যার ফলে নতুনদের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন দুজন যাদের নাম ওমর সানী ও সালমান শাহ।
১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহানের নির্মিত বাম্পার হিট ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ দিয়ে সালমানের শাহ’র পথচলা শুরু হয় ফলে প্রথম ছবিতেই রোমান্টিক ছবির দর্শকসহ , গ্রামগঞ্জে, মফস্বলে সালমানের সূচনাটা দারুন হয়েছিল । অন্যদিকে ১৯৯২ সালের মাঝামাঝি সময়ে নুর হোসেন বলাইয়ের ‘এই নিয়ে সংসার’ ছবিতে ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে সহনায়ক হিসেবে ওমর সানীর পথচলা শুরু হলেও ছবিটা যেহেতু কাঞ্চনের সেক্ষেত্রে সাফল্যর দাবিদার কাঞ্চন এবং এরপরেই (৯৩এর শুরুতে) শেখ নজরুল ইসলামের ‘চাঁদের আলো’ (সানীর প্রথম চুক্তিবদ্ধ ছবি) মুক্তি পেয়ে ব্যবসায়িক সফলতায় সানিকে দর্শকরা আলাদা ভাবে চিনতে শুরু করেন । আমি আলচনার সুবিধার্থে এখন ১৯৯৩ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত (সালমানের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত) দুই নায়কের লড়াইটা কেমন ছিল সেটা নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করবো ।
সালমান শাহ রোমান্টিক ছবি দিয়েই বাজিমাত করেছিলেন এবং সানীও রোমান্টিক ছবি দিয়ে বাজিমাত করেছিলেন কিন্তু সালমানের প্রতি কিশোর , তরুণসহ প্রবীণ শ্রেণীর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায় স্মার্টনেস এর কারণে এবং যিনি কিছুদিন আগে প্রয়াত জাফর ইকবালের কথা দর্শকদের মনে করিয়ে দিলেন । জাফর ইকবাল’কে বলা হতো তাঁর সময়ের সবচেয়ে স্মার্ট , স্টাইলিশ নায়ক । অন্যদিকে সানী সালমানের মতো খুব চলনে বলনে স্মার্ট না হলেও দৈহিক গড়ন, লম্বা চুলে খুব খারাপও ছিলেন না যার ফলে সামাজিক অ্যাকশন ধারার ছবিতেও সানী খুব সহজে মানিয়ে যেতেন । সালমান যেখানে রোমান্টিক ছবির ক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ ছিলেন সেখানে রোমান্টিক ,সামাজিক অ্যাকশন, পারিবারিক সেন্টিমেন্টাল তিন ধারাতেই সানী থাকতেন । সানীর বড় একটা গুন ছিল জসিম, আলমগির, কাঞ্চন, রুবেলদের মতো নায়কদের সাথে একই ছবিতে সমানতালে অভিনয় করতে পারতেন এবং একক নায়ক হিসেবেও সফল ছিলেন। অন্যদিকে সালমান একক নায়ক হিসেবে রোমান্টিক ছবিগুলোতে সফল কিন্তু রোমান্টিক ধারার
বাহিরের ছবিতে একমাত্র ‘বিক্ষোভ’ ছাড়া তেমন সফল নন । ১৯৯৩ – ১৯৯৬ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই নায়কের ছবিগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে সানীর ছবির সংখ্যা বেশী এবং ব্যবসায়িক দিক থেকে সানী ছিলেন সব ধারাতেই সফল অন্যদিকে সালমানের ছবির সংখ্যা ব্যবসায়িক রেকর্ড দুটোই কম কিন্তু সালমানের জনপ্রিয়তা দর্শক জনপ্রিয়তা ছিল সানীর চেয়ে বেশী এটা মানতেই হবে ।
১৯৯৩ – ৯৬ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওমর সানীর মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিগুলোর তালিকা
চাঁদের আলো ,চাঁদের হাসি, অগ্নিপথ, ক্ষুধা, প্রেম প্রতিশোধ, বাংলার বধূ, চরম আঘাত, মহৎ,আখেরি হামলা, দোলা, আত্মঅহংকার, প্রেমগীত, লাট সাহেবের মেয়ে,আখেরি রাস্তা, প্রথম প্রেম, হুলিয়া, জানের দুশমন,ঘাত প্রতিঘাত, সংসারের সুখ দুঃখ, লজ্জা, কথা দাও ,মুক্তির সংগ্রাম, প্রিয়তুমি, প্রেমের অহংকার, চক্রান্ত, চালবাজ, ঘায়েল,মোনাফেক, সুখের স্বর্গ, গৃহবধূ, উল্কা, পাপের শাস্তি । এরমধ্য একক নায়ক হিসেবে সানির – চাঁদের আলো ,আখেরি হামলা, দোলা, আত্ম অহংকার, প্রথম প্রেম, লজ্জা, মুক্তির সংগ্রাম, চালবাজ সুপার হিট। অন্য নায়কদের সাথে মহৎ, প্রেমগীত, আখেরি রাস্তা, হুলিয়া, ঘাত প্রতিঘাত, বাংলার বধূ, ক্ষুধা , সংসারের সুখ দুঃখ, চরম আঘাত, প্রেমের অহংকার, প্রিয়তুমি ছবিগুলো সুপারহিট যেখানে রোমান্টিক ও সামাজিক অ্যাকশন ছবিগুলো আছে । যার ফলে সানি সব ধারার সিনেমায় সফল নায়ক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন । অন্যদিকে চক্রান্ত,প্রেম প্রতিশোধ, চাঁদের হাসি, ঘায়েল, জানের দুশমন , মোনাফেক ছবিগুলো ছিল ফ্লপ ।
সালমানের ছবিগুলো হলো – কেয়ামত থেকে কেয়ামত, অন্তরে অন্তরে, তুমি আমার, সুজন সখী, বিক্ষোভ, স্নেহ, দেনমোহর, এই ঘর এই সংসার, প্রিয়জন, বিচার হবে, স্বপ্নের ঠিকানা, তোমাকে চাই, আশা ভালোবাসা, প্রেমযুদ্ধ, কন্যাদান, আঞ্জুমান , বিচার হবে, মহামিলন , স্বপ্নের পৃথিবী ছবিগুলো। এর মধ্য কেয়ামত থেকে কেয়ামত, অন্তরে অন্তরে,দেনমোহর, তুমি আমার, বিক্ষোভ, স্বপ্নের ঠিকানা ,প্রিয়জন , স্বপ্নের পৃথিবী , মহামিলন , তোমাকে চাই ,বিচার হবে ছবিগুলো সুপারহিট যা একমাত্র বিক্ষোভ ব্যাতিত সবগুলোই রোমান্টিক ছবি । অন্যদিকে স্নেহ, এই ঘর এই সংসার, প্রেমযুদ্ধ এভারেজ, সুজন সখী, আঞ্জুমান, কন্যাদান ফ্লপ ছিল।
সানির পরিচালকদের তালিকায় ছিলেন – নুর হোসেন বলাই ( এই নিয়ে সংসার, মহৎ, ঘায়েল) , শেখ নজরুল ইসলাম (চাঁদের আলো, চাঁদের হাসি, চক্রান্ত), এ জে মিন্টু (বাংলার বধূ, প্রথম প্রেম), গাজী মাজহারুল আনোয়ার ( ক্ষুধা, উল্কা), সোহানুর রহমান সোহান (আখেরি রাস্তা), মনোয়ার খোকন ( ঘাত প্রতিঘাত, সংসারের সুখ দুঃখ), দিলিপ সোম (দোলা) , রায়হান মুজিব (আত্মঅহংকার), আজিজুর রহমান ( লজ্জা, কথা দাও), হাফিজউদ্দিন (প্রিয় তুমি), ওয়াকিল আহমেদ ( প্রেমের অহংকার),দেলোয়ার জাহান ঝনটু ( প্রেমগীত, গৃহবধূ ), ইস্পাহানী আরিফ জাহান ( লাট সাহেবের মেয়ে, সুখের স্বর্গ), উত্তম আকাশ (মুক্তির সংগ্রাম) , সাইদুর রহমান সাইদ (মোনাফেক), শওকত জামিল (চালবাজ), জীবন রহমান ( হুলিয়া, জানের দুশমন), নাদিম মাহমুদ (আখেরি হামলা) , নুর মোহাম্মদ মনি (প্রেম প্রতিশোধ), ফখরুল হাসান বৈরাগী (অগ্নিপথ) এর মতো নবীন প্রবীণ দারুন কিছু পরিচালক ছিলেন যার মধ্যে আজিজুর রহমান, এ জে মিন্টু, শেখ নজরুল ইসলাম , শওকত জামিল, নূর হোসেন বলাই, রায়হান মুজিব , ওয়াকিল আহমেদ,নায়ক উজ্জ্বল , মনোয়ার খোকন এর মতো পরিচালকদের ছবিতে সালমান ছিলেন না ।
অন্যদিকে সালমানের পরিচালকদের মধ্যে ছিলেন সোহানুর রহমান সোহান (কেয়ামত থেকে কেয়ামত), জহিরুল হক ( তুমি আমার ) , শিবলি সাদিক ( অন্তরে অন্তরে), দিলিপ সোম (মহামিলন), মোহাম্মদ হোসেন (প্রিয়জন), হাফিজ উদ্দিন ( আঞ্জুমান), গাজী মাজহারুল আনোয়ার ( স্নেহ), শফি বিক্রমপুরী (দেনমোহর), জীবন রহমান ( প্রেমযুদ্ধ), শাহ আলম কিরন (সুজন সখী, বিচার হবে), মালেক আফসারি ( এই ঘর এই সংসার), মুখলেসুর রহমান (স্বপ্নের ঠিকানা) , বাদল খন্দকার ( স্বপ্নের পৃথিবী ), মতিন রহমান (তোমাকে চাই), তমিজ উদ্দিন রিজভি (আশা ভালোবাসা) , দেলোয়ার জাহান ঝনটু ( কন্যাদান)এর মতো নবীন প্রবীণ পরিচালকরা যার মধ্যে মতিন রহমান, মালেক আফসারি,বাদল খন্দকার, শাহ আলিম কিরন, জহিরুল হক এর মতো পরিচালকদের ছবিতে সানি ছিলেন যদি সালমানের মৃত্যুর পর মতিন রহমান, বাদল খন্দকারের ছবিতে সানি যুক্ত হয়েছিলেন ।
সানির অভিনয়ে কিছুটা ত্রুটি থাকলেও সানি সব ধারার ছবিতে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হোন এবং সালমানের জীবদ্দশায় শাবনুরের সাথে প্রথম ‘প্রেমের অহংকার’ ছবিতে দারুন মানিয়ে গিয়েছিলেন এবং দর্শকরাও সানি শাবনুর জুটিকে গ্রহণ করেছিলেন । এছাড়া সানি-সোনিয়ার সাথে আখেরি রাস্তা, মুক্তির সাথে চাঁদের আলো , লিমার সাথে প্রেমগীত, শাহনাজের সাথে মহৎ, হুলিয়া ও চালবাজ, নিশির সাথে আখেরি হামলা,অরুনার সাথে চরম আঘাত ছবিগুলোতে সফল হয়ে মৌসুমি ছাড়াও সফল হতে পারেন সেটা প্রমাণ করেছিলেন এবং অন্য নায়িকাদের সাথে জুটি বেঁধে সহজে মানিয়ে যেতেন। অন্যদিকে সালমানের প্রথম দিকে মৌসুমি ও পরে শাবনুর কেন্দ্রিক ছবিগুলোতেই সফল যার ফলে অন্য নায়িকাদের নিয়ে সালমানকে নিয়ে রোমান্টিক ধারা ও এর বাহিরের ছবি নির্মাণ করা ছিল এক ধরণের ঝুঁকি । তারপরেও সালমানের দর্শকপ্রিয়তা বেশী ছিল কারণ শহরের মধ্যবিত্ত শিক্ষিত শ্রেণীর তরুণ দর্শকরা সালমানের ফ্যাশন ,স্টাইল ও সাবলিল অভিনয়কে অনুকরণ করতেন যার ফলে সব শ্রেণীর দর্শকদের কাছে সালমান হিন্দি ছবির আমির খান, সালমান খানদের মতো অবস্থানে ছিলেন।
অন্যদিকে ওমর সানিও ব্যবসায়িক সফলতার দিক থেকে সব ধারার ছবিতে দাপট রেখেছিলেন যার ফলে দুজনের মধ্যে সবসময় একটা ঠাণ্ডা লড়াই হতো যা ছিল জমজমাটও ।দুজনেই ছিলেন আমাদের প্রিয়, দুজনেই ছিলেন আমাদের কাছে সেরা । ১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর সালমানের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু দুজনের চমৎকার এই লড়াইটুকু’র সমাপ্তি টানে যা ছিল বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট একটি ক্ষতি যে ক্ষতির রেশ আজো বয়ে চলছে । যে ক্ষতি আজো পূরণ হয়নি।
এই যে দুজনের অবস্থান ,পার্থক্য সবকিছুর পরেও সবচেয়ে বড় কথা হলো সেদিন আমরা সেদিন মুলত বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ভক্ত ছিলাম এরপর কোন তারকার ভক্ত হতাম। সেদিন আমরা যে যার ভক্ত হইনা কেন সব নায়কের ছবিই আমরা দেখতাম এমনকি সালমান, সানি, রুবেল, মান্না কেউ নেই সেই ছবিও আমরা দেখতাম এবং ভালো লাগলে অন্যদের দেখার জন্য বলতাম । সেদিন আড্ডায় সালমান, সানি, মান্না, রুবেল নিয়ে বন্ধুদের সাথে তর্ক বিতর্ক হতো কিন্তু দিনশেষে সবাই একসাথে ছবি দেখতে হলে যেতাম, ছবি উপভোগ করতাম ।
সালমানের ভক্তরা সানির কোন ছবি ভালো লাগলে সেটা অন্যদের কাছে প্রশংসা করতো আবার সানির ভক্তদের সালমানের কোন ছবি ভালো লাগলে সেটা ওরা বলতো, স্বীকার করতো, মান্না রুবেলের বেলাতেও তাই হতো । সবাই ভালোটাকে স্বীকার করতো, যার যা প্রাপ্য তা দিতে কুণ্ঠাবোধ করতো না।
আমার আজকের এই লিখাটি কাউকে বড় বা ছোট করার উদ্দেশ্য লিখা নয় । আমার উদ্দেশ্যটা হলো সেদিনের একটা বাস্তব চিত্র আজকের তরুণ দর্শকদের জানানো এবং সেদিনের জনপ্রিয় দুই তরুণ নায়কদ্বয়ের মধ্যে খুব চমৎকার লড়াইয়ের সংক্ষিপ্ত একটা বিশ্লেষণ তুলে ধরা যা থেকে আজকের তরুণ দর্শকরা চাইলে কিছু শিখতে পারে । সেদিনের তরুণ দর্শকরা আজকের দর্শকদের মতো অন্ধভক্ত বা চাটুকার ছিল না যার ফলে দুজন নায়কেরই ছবি ব্যবসায়িক সফলতা পেতো , ভালো ভালো গল্পের ছবি নির্মাণ করতে প্রযোজক পরিচালকদের উৎসাহ দিতো ।
সালমান, সানি, রুবেল , মান্নার সাথে আলমগীর, জসিম, সোহেল রানা, ইলিয়াস কাঞ্চনের মতো প্রবীণ নায়কদের ছবিও সফল হতো আবার বাপ্পারাজ, অমিত হাসান, আমিন খানদের ছবিও সফল হতো । যার ফলে নবীন প্রবীণ সব তারকা অভিনেতা অভিনেত্রীদের জমজমাট, দারুন সব চলচ্চিত্র পেতাম , নতুন নতুন গল্পের চলচ্চিত্র পেতাম কারণ দর্শক ভক্তরা ছিলো সবার আগে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের ভক্ত এরপর কোন ব্যক্তির ভক্ত যা আজকের দর্শক ভক্তদের মাঝে একদমই নেই। একটি চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি কখনও একা কারো উপর ভর করে টিকে থাকতে পারেনা এই সত্যটা আমাদের উপলব্ধি না করলে সামগ্রিকভাবে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি ছাড়া উন্নতি , এগিয়ে যাওয়া কোনকিছুই হবে না ।