:: নাগরিক নিউজ ডেস্ক ::
ভূমধ্যসাগরের উপকূল থেকে ৫৪২ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পুলিশ। দেশটির রাজধানী ত্রিপোলির পূর্ব উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতিকালে গত শনিবার তাদের আটক করা হয়।
লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান এই খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, ইউরোপের উদ্দেশে পাড়ি দেওয়ার সময় ৫৪২ জন বাংলাদেশিকে আটক করেছে লিবিয়া।
মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে লিবিয়ার পুলিশ আমাদেরকে ৫০০ জন বাংলাদেশিকে আটকের কথা জানিয়েছে। তবে, আমরা এ পর্যন্ত ২৪০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি এখন নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, জাহাজে করে ইউরোপে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে ৫৪২ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে লিবীয় কর্তৃপক্ষ।
এএফপির একজন ফটোগ্রাফার জানিয়েছেন, আটককৃত অভিবাসীদের বেশিরভাগই মূলত বাংলাদেশের নাগরিক।
২০১৬ সালের পর একদিনে উপকূল থেকে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিকে আটকের ঘটনা এটিই প্রথম। সেবছর ছয় শতাধিক অভিবাসীকে সাগর থেকে উদ্ধার করা হয়। ২০২০ সালে দালালদের নিয়ন্ত্রিত এক বন্দিশালায় ২৬ জন অভিবাসন প্রত্যাশীকে হত্যা করা হয়। এরপর এই রুটে অবৈধ অভিবাসীদের যাতায়াতে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। করোনাকালে যাতায়াত ছিল অনেকটাই বন্ধ।
লিবিয়া কোস্টগার্ডের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে, এক সময় ত্রিপোলির পশ্চিম উপকূল ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসীরা ইউরোপের সাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করতো।
উল্লেখ্য, যুদ্ধবিদ্ধস্ত লিবিয়ায় চার বছরেরও বেশি সময় বাংলাদেশিদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ ছিল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালে একটি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে এই নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করা হয়। কিন্তু আদালত মন্ত্রণালয়ের নোটিশের পক্ষেই রায় দেয়। এ বছরের শুরুতে এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, গত তিন মাসে পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশিকে সাগর থেকে উদ্ধার করে দেশে পাঠানো হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) বলছে, ২০২১ সালে প্রায় ২ হাজার অভিবাসী ভূমধ্যসাগরে ডুবে গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে এই সংখ্যাটি ছিল এক হাজার ৪০১ জন।