নিউ মার্কেটে সেনা অভিযানে ১১০০ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার

■ নাগরিক প্রতিবেদক ■ 

ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায় বিভিন্ন ধারলো অস্ত্রের বিক্রয় কেন্দ্র ও গুদামে অভিযান চালিয়ে সামুরাই ছুরি, চাপাতিসহ প্রায় ১১০০টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এসব অস্ত্রের বেশিরভাগই সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল।

শনিবার (৯ আগস্ট) নিউ মার্কেটে অভিযান চালিয়ে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন ডেয়ারিং টাইগার্সের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজিম আহমেদ।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা শহরে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে বারবার এ ধরনের ধারালো অস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হয়।

চলতি মাসে গণমাধ্যম ও গ্রেফতারকৃত কয়েকজন সন্ত্রাসীর তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, রাজধানীর কোনো কোনো এলাকা থেকে এসব অস্ত্র ভাড়া ও বিক্রি হচ্ছে। পরে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সদস্যরা নিউ মার্কেট এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন দোকানে গৃহস্থালি কাজে অপ্রয়োজনীয় এসব ধারালো অস্ত্র মজুত দেখতে পান।

সেনাবাহিনী জানায়, উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলোর মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক হত্যা, আহত, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। অভিযান চলমান রয়েছে, এবং উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দুষ্কৃতিকারীদের যোগসাজশ আছে কিনা, তা যাচাইয়ে তদন্ত চলছে।

ব্যবসায়ী সমাজের উদ্দেশে সেনাবাহিনী বলেছে, কেউ যেন এসব অস্ত্র বিক্রি না করেন। অনেকেই স্যুভেনির হিসেবে কিনলেও বাস্তবে এগুলো অপরাধে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাধারণ জনগণকেও সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে—যদি কোথাও অবৈধ ধারালো অস্ত্রের ব্যবসা চোখে পড়ে, তাহলে নিকটস্থ ক্যাম্পে খবর দিতে বলা হয়েছে।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ আর্মি ক্যাম্প থেকে শনিবার (৯ আগস্ট) জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারীদের কার্যক্রম বেড়ে গেছে। এর আগেও গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে ‘সামুরাই’ ছুরিসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল, যা সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

চলতি মাসে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, রাজধানীর কোনো একটি স্থান থেকে এসব সামুরাই অস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছে ভাড়া ও বিক্রি করা হচ্ছে। পরে গ্রেফতার হওয়া কয়েকজন সন্ত্রাসীও জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য নিশ্চিত করে।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত দুই দিন ধরে নিউ মার্কেট এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখানে বিভিন্ন দোকানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র পাওয়া যায়, যেগুলোর কোনো গৃহস্থালি ব্যবহার নেই। বরং গত কয়েক মাসে এসব অস্ত্র ব্যবহার করে একাধিক হত্যা, আহত, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।

উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলো গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে। পরবর্তীতে তারা যাচাই-বাছাই শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অপরাধীদের কোনো যোগসাজশ আছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে তদন্ত চলবে।

সাধারণ জনগণকে অনুরোধ করা হয়েছে, কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য রোধে সহায়তা করতে এবং আশপাশে কোনো অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা দেখলে নিকটস্থ ক্যাম্পে খবর দিতে।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে এবং দুষ্কৃতিকারীরা যাতে কোনোভাবেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য তারা দিনরাত কাজ করছে।

শেয়ার করতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *